বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে আরও এক পা ডি গুকেশের। রবিবার ডিং লিরেনকে হারানোর পর ভারতীয় দাবাড়ু। ছবি: পিটিআই।
পর পর সাতটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফয়সালা টাইব্রেকারেই হবে। কিন্তু ১১তম রাউন্ডে এগিয়ে গেলেন ডি গুকেশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ডিং লিরেনকে হার মানতে বাধ্য করলেন ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার। চাপে পড়ে ভুল চাল দিয়ে হার স্বীকার করলেন লিরেন। এই জয়ের ফলে ৬-৫ পয়েন্টে এগিয়ে গেলেন গুকেশ। বাকি আর তিনটি ম্যাচ। সেই তিনটিতে না হারলেই দাবার পরবর্তী বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবেন গুকেশ। তেমনটা হলে বিশ্বনাথন আনন্দের পর আরও এক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাবে ভারত।
এই ম্যাচে সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলেন গুকেশ। রেটি ওপেনিংয়ে শুরু করেন তিনি। এই প্রথম এই ওপেনিংয়ে খেলা শুরু করেন গুকেশ। শুরু থেকেই সময়ের চাপে পড়েন লিরেন। গুকেশ যেখানে নিজের প্রথম চারটি চালের জন্য ২৫ সেকেন্ড সময় নেন, সেখানে লিরেন তাঁর প্রথম তিনটি চালের জন্য নেন ২৫ মিনিট। তার মধ্যে দ্বিতীয় চালের জন্য ২২ মিনিট সময় নেন তিনি। চতুর্থ চালের জন্য ৩৮ মিনিট নেন চিনের গ্র্যান্ডমাস্টার। তাঁর পাল্টা চাল মাত্র সাত সেকেন্ডে দেন গুকেশ।
প্রথম ১০টি চালে সময়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিলেন লিরেন। কালো ঘুঁটি নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। কিন্তু ১১তম চালে সময় নেন গুকেশ। একটি চালেই ১ ঘণ্টা ১৭ সেকেন্ড নেন গুকেশ। ফলে যে সময়ের সুবিধা তাঁর ছিল তা ধীরে ধীরে কমে যায়। দু’জনেই প্রায় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যান।
প্রথম ১৫টি চালের পর সময়ে গুকেশের থেকে এগিয়ে যান লিরেন। ভারতীয় দাবাড়ুকে ২৬ মিনিটের মধ্যে শেষ ২৫টি চাল দিতে হত। লিরেনের হাতে ছিল ৪০ মিনিট। কিন্তু ঘাবড়াননি গুকেশ। দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁর মস্তিষ্কে পুরো পরিকল্পনা তৈরি রয়েছে। সময়ে গুকেশ পিছিয়ে থাকলেও তাঁর জয়ের সম্ভাবনা বাড়ছিল। শেষ ১৫ মিনিটে গুকেশকে ১৫টি চাল দিতে হত। সেখানে লিরেনের কাছে শেষ ১৬টি চালের জন্য মাত্র ৮ মিনিট সময় ছিল।
সময়ের চাপেই হার মানতে হল লিরেনকে। সময় কমে আসায় তাড়াতাড়ি চাল দিতে হচ্ছিল তাঁকে। গুকেশের চালের জবাব দিতে যতটা ভাবার সময় দরকার তা ছিল না লিরেনের কাছে। সেই সময় একটি ভুল চাল দিয়ে ফেলেন তিনি। চাল দেওয়ার পরেই তিনি বুঝতে পারেন আর ফিরতে পারবেন না। ফলে হার স্বীকার করে নেন লিরেন। বলা ভাল, গুকেশ তাঁকে হার স্বীকার করতে বাধ্য করেন।
দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আর তিনটি ম্যাচ বাকি। সোমবার রয়েছে ১২তম ম্যাচ। মঙ্গলবার বিশ্রাম। বুধ ও বৃহস্পতিবার বাকি দু’টি খেলা হবে। এখন ৬-৫ এগিয়ে গুকেশ। লিরেনকে ফিরতে হলে বাকি তিনটি ম্যাচের মধ্যে অন্তত একটি জিততে হবে। তবে এ বারের প্রতিযোগিতায় প্রথম থেকেই লিরেন যা রক্ষণাত্মক খেলছেন তাতে এই সম্ভাবনা কম। এখন দেখার পরের তিনটি খেলায় নিজের পরিকল্পনা লিরেন বদলাতে পারেন কি না।