জয় শাহ। —ফাইল চিত্র।
আইসিসি-র চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে আপাতত এগিয়ে রয়েছেন জয় শাহ। বর্তমান চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে তৃতীয় বারের জন্য এই পদে আসতে রাজি নন বলেই জানা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শাহ যদি আইসিসির পরবর্তী চেয়ারম্যান হন তা হলে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে এই দায়িত্ব পাবেন তিনি। এক বার আইসিসির দায়িত্ব নিলে পরবর্তী কালে কি আবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে ফিরতে পারবেন শাহ?
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের সচিব শাহ। আইসিসির লাভের ৭০ শতাংশ যায় ভারত থেকে। তা ছাড়া আইসিসির ফিন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটিরও প্রধান শাহ। এর আগে ভারত থেকে জগমোহন ডালমিয়া, শশাঙ্ক মনোহর, এন শ্রীনিবাসন ও শরদ পওয়ার আইসিসিতে গিয়েছেন।
আইসিসির নির্বাচন কবে?
সূত্রের খবর, এ বার কোনও নির্বাচন না-ও হতে পারে। যাঁরা চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান তাঁদের ২৭ অগস্টের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।
নতুন চেয়ারম্যান কবে থেকে দায়িত্ব নেবেন?
২০২০ সাল থেকে আইসিসির চেয়ারম্যান ছিলেন বার্কলে। চলতি বছর নভেম্বর মাসে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর থেকে দায়িত্ব নেবেন নতুন চেয়ারম্যান।
শাহ কেন এগিয়ে?
শাহ যদি মনোনয়ন জমা দেন তা হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে পারেন তিনি। যদি শাহ ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়ন জমা দেন, তা হলে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রেও জেতার সম্ভাবনা শাহেরই বেশি। কারণ, ভারত ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের সমর্থন তাঁর দিকে রয়েছে। আইসিসিতে মোট ১৭টি ভোট রয়েছে। তার মধ্যে ১২টি পূর্ণ সদস্য, তিনটি সহযোগী সদস্য একটি করে ভোট দিতে পারেন। অর্থাৎ, চেয়ারম্যান হতে গেলে ন’টি ভোট পেতে হয়। শাহ নির্বাচনে দাঁড়ালে ন’টি ভোট পেতে তাঁর সমস্যা হবে না। ৩৫ বছরের শাহ যদি আইসিসি-র সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসেন, তা হলে সবচেয়ে কম বয়সে এই পদে বসার নজির গড়বেন তিনি।
আইসিসির চেয়ারম্যানের কার্যকাল কত বছর?
আইসিসির বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, এক জন চেয়ারম্যান দু’বছর করে তিন বার, অর্থাৎ, মোট ছ’বছর দায়িত্বে থাকতে পারবেন। তবে আইসিসি তাদের সংবিধানে পরিবর্তন করতে পারে। চেয়ারম্যানের মেয়াদ ছ’বছরই থাকবে। তবে দু’বছর করে তিন বারের পরিবর্তে তা তিন বছর করে দু’বার করা হতে পারে।
একসঙ্গে বিসিসিআই সচিব ও আইসিসির চেয়ারম্যান হতে পারবেন শাহ?
না। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মে পরিবর্তন হয়েছে। আইসিসির চেয়ারম্যান হতে গেলে আগের পদ ছাড়তে হবে। অর্থাৎ, শাহ যদি আইসিসির চেয়ারম্যান হন তা হলে বিসিসিআইয়ের সচিবের পদ ছাড়তে হবে তাঁকে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বোর্ড সচিব হিসাবে শাহের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইসিসির চেয়ারম্যান হলে তখন তিনি আর সচিব পদে লড়তে পারবেন না।
আইসিসির কার্যকাল শেষে কি বিসিসিআইয়ে ফিরতে পারবেন শাহ?
লোধা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, বিসিসিআইয়ের সংবিধানে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ২০২৫ সালে শাহের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিয়ম মেনে তিন বছরের জন্য কুলিং অফ পিরিয়ডে যেতে হত তাঁকে। অর্থাৎ, তিন বছরের জন্য ভারতের কোনও ক্রিকেট সংস্থায় থাকতে পারবেন না তিনি। কিন্তু শাহ যদি ছ’বছরের জন্য আইসিসির চেয়ারম্যান হন তা হলে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাঁকে আর কোনও কুলিং অফ পিরিয়ডে যেতে হবে না। সে ক্ষেত্রে আবার ভারতীয় বোর্ডে ফিরতে পারবেন তিনি।
শাহ আইসিসিতে গেলে বিসিসিআইয়ের নতুন সচিব কে?
এখনও কোনও নাম সামনে আসেনি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বেশির ভাগ প্রশাসকের বয়স হয়েছে। প্রাক্তন দুই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও অনুরাগ ঠাকুরেরও সম্ভাবনা নেই। কারণ, বিসিসিআইয়ের সংবিধানের ১৪(৭) ধারা অনুযায়ী, এক জন বোর্ড সভাপতি দ্বিতীয় বারের জন্য সভাপতি পদেই লড়তে পারেন। অন্য কোনও পদের জন্য তাঁকে বিবেচনা করা হবে না। যদিও বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ আশিস শেলার ও যুগ্মসচিব দেবজিৎ সাইকিয়ার সুযোগ রয়েছে সচিব হওয়ার। নতুনদের মধ্যে সুযোগ রয়েছে অভিষেক ডালমিয়ারও। তবে এখনও কারও নাম শোনা যায়নি। শাহ পদত্যাগ করলে তার পরে হয়তো নতুন সচিবের নাম সামনে আসবে।
আইসিসির চেয়ারম্যান হলে শাহের চ্যালেঞ্জ কী কী?
আমেরিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে আইসিসি। কলম্বোয় আইসিসির বৈঠকে বিশ্বকাপের বাজেট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টেস্ট ও এক দিনের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আইসিসির চেয়ারম্যান হলে শুরুতেই এই সব সমস্যা সামলাতে হবে শাহকে।