টম হার্টলি। ছবি: এক্স (টুইটার)।
ক্রিকেট তাঁর প্রিয় খেলা নয়! টম হার্টলির প্রথম ভালবাসা ফুটবল। এভারটনের অন্ধ ভক্তের স্পিনের উত্তর খুঁজে না পেয়ে ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম টেস্ট হারতে হয়েছে ভারতকে। ২৩১ রান তাড়া করতে নেমে টেস্ট অভিষেককারীকে ৭ উইকেট দিয়েছেন রোহিত শর্মারা। ম্যাচে হার্টলির সংগ্রহ ৯ উইকেট। অথচ রবিবারের আগে পর্যন্ত চমকপ্রদ কিছুই করে দেখাতে পারেননি ইংরেজ স্পিনার।
ভারতে আসার আগে হার্টলির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা বলতে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু’টি এক দিনের ম্যাচ। ২০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে তিনি পেয়েছিলেন ৪০টি উইকেট। এমন সাদামাঠা পরিসংখ্যান নিয়েই ভারতে এসেছিলেন ২৪ বছরের বাঁহাতি স্পিনার। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টেই খেলার সুযোগ পাবেন ভাবেননি। যদিও মাঠে নেমে প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁর উপর আস্থা রেখে ভুল করেননি ব্র্যান্ডন ম্যাকালাম, বেন স্টোকসেরা।
হার্টলির পরিবারে কেউ কখনও ক্রিকেট খেলেননি। তবে খেলাধুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাঁর বাবা বিল হার্টলি ছিলেন অ্যাথলিট। ১৯৭৪ সালে ইউরোপিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে ৪x৪০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতেছিলেন। এর থেকে বড় সাফল্য তাঁর খেলোয়াড়জীবনে নেই। নিজে অ্যাথলিট হলেও ছেলের উপর কিছু চাপিয়ে দেননি তিনি। বরং হার্টলিকে ক্রিকেট খেলতে উৎসাহিত করেছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে তেমন সাফল্য না থাকা সত্ত্বেও হার্টলি কিভাবে স্টোকসের দলে? ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। হার্টলি আসলে ইংল্যান্ডের এক বিশেষ পরিকল্পনার ফসল। গত বছরের অগস্ট মাস থেকে ভারতে পাঁচ টেস্টের সফর নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কোচ ম্যাকালাম, অধিনায়ক স্টোকসের সঙ্গে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট রব কি পরিকল্পনা শুরু করেন। তাঁরা কাউন্টি ক্রিকেটের দলগুলির স্পিনারদের নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেন। ভারতের পিচের কথা ভেবে ম্যাকালাম চেয়েছিলেন এক জন লম্বা স্পিনার, যে ঠিক মতো বল স্পিন করাতে পারে। ৬ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার জন্য প্রাথমিক তালিকায় সুযোগ পান ল্যাঙ্কাশায়ারের হার্টলি। তাঁকে পছন্দ হওয়ার আরও একটা কারণ ব্যাট করতে পারার দক্ষতা।
কয়েক জন স্পিনারের মধ্যে থেকে শেষ পর্যন্ত উচ্চতা এবং ব্যাটিং দক্ষতার জন্য হার্টলিকে বেছে নিয়েছিলেন ম্যাকালাম। গুরুত্ব দেননি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্সকে। বাকিটা তৈরি করে নিয়েছেন নিউ জ়িল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নিজে। যার ফল হায়দরাবাদ টেস্টেই পেয়েছেন স্টোকসেরা। ফল ভুগেছেন রোহিতেরা।