বিরাট কোহলি। ছবি: পিটিআই।
বিরাট কোহলি ৫০! এক দিনের ক্রিকেটে শতরানের নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন কোহলি। সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন সচিন তেন্ডুলকর নিজে। যাঁর দখলে এত দিন ছিল এই রেকর্ড।
ইডেন গার্ডেন্সে নিজের ৩৬তম জন্ম দিনে এক দিনের ক্রিকেটে ৪৯তম শতরান করে সচিনকে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন কোহলি। বুধবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে করলেন ৫০তম শতরান। এক দিনের ক্রিকেট তৈরি হল নতুন বিশ্বরেকর্ড। ওয়াংখেড়ের ২২ গজে কোহলির দায়িত্বশীল আগ্রাসী ব্যাটিং দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক নতুন রেকর্ডও গড়ল।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইডেনে সচিনের মাইলফলক ছোঁয়ার পর থেকেই কোহলির ৫০তম শতরানের অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেট বিশ্ব। সকলেই আশা করছিলেন বিশ্বকাপেই নতুন বিশ্বরেকর্ড আসবে কোহলির ব্যাট থেকে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক হতাশ করলেন না। তবে তাঁর ৯২ রানের মাথায় একটা আশঙ্কা তৈরি হয়। কোহলির পায়ে টান ধরায় খেলা কিছু ক্ষণ বন্ধ রাখতে হয়। কোহলিকে অবশ্য শুভমনের মতো উঠে যেতে হয়নি। ফিজিয়োর চিকিৎসার পর আবার খেলতে শুরু করেন। ১০৫ বলে শতরান পূর্ণ করার পর উচ্ছ্বাসের এক বিরাট লাফ দিলেন কোহলি। যে লাফ বুঝিয়ে দিল তাঁর তৃপ্তি। ৮টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে শতরান করেন তিনি।
সচিন সামনে তাঁর ঘরের মাঠেই হাতছাড়া হয়ে গেল এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর সব থেকে বেশি শতরানের রেকর্ড। বুধবার প্রথমে এক বিশ্বকাপে সচিনের সব থেকে বেশি অর্ধশতরানের রেকর্ড ভাঙেন কোহলি। তার পর সচিনের এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৬৭৩ রানের বিশ্বরেকর্ড ভাঙলেন। পরে এক দিনের ক্রিকেটে সব থেকে বেশি শতরানের রেকর্ডও ভেঙে দিলেন কোহলি। সব মিলিয়ে বুধবার সচিনের তিনটি রেকর্ড ভেঙে দিলেন কোহলি।
বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে এক দিনের ক্রিকেটে ৫০টি শতরানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন কোহলি। তার আগে ৮০ রান করার সঙ্গে সঙ্গে এক বিশ্বকাপে সচিনের সব থেকে বেশি রান করার রেকর্ডও ভেঙে দেন তিনি। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সচিন করেছিলেন ৬৭৩ রান। এ দিনই বিশ্বের ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসাবে এক বিশ্বকাপে ৬০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। সচিন, ম্যাথু হেডেন, ডেভিড ওয়ার্নার, রোহিত শর্মা এবং শাকিব আল হাসানের এই কৃতিত্ব ছিল।
এ বারের বিশ্বকাপে অষ্টম বার ৫০ রানের গন্ডি পেরোলেন কোহলি। তার মধ্যে দু’টি ইনিংসে শতরান হয়েছে। বাকিগুলির মধ্যে প্রায় তিন বার শতরানের কাছে এসেও থেমে গিয়েছেন। বিশ্বকাপে ভারত প্রথম ম্যাচ খেলেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে কোহলি করেছিলেন ৮৫ রান। পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৫৫ রান করেন। পুণেতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন। পরের ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯৫ রান করেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এই ওয়াংখেড়েতেই ৮৮ রান করেন। এর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইডেনে অপরাজিত ১০১ রান করেন। রাউন্ড রবিন পর্বের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৫১ রানে ফিরে যান।