রান আউটের পর ধোনি এবং হরমনপ্রীত। —ফাইল চিত্র
দু’টি সেমিফাইনালের মাঝে ব্যবধান সাড়ে তিন বছরের। ২০১৯ সালের জুলাই এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি। প্রথমটি হয়েছিল ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টারে, দ্বিতীয়টি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে। প্রথমটিতে বিপক্ষ ছিল নিউ জ়িল্যান্ড এবং পরেরটিতে অস্ট্রেলিয়া। এমন বিস্তর অমিলের মাঝেও মিলে গেলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং হরমনপ্রীত কৌর। ভারতের দুই ৭ নম্বর জার্সিধারি অধিনায়ককে মিলিয়ে দিল রান আউট।
বৃহস্পতিবার মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হরমনপ্রীত যখন রান আউট হয়ে ফিরছেন, ভারতের জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ৪০ রান। তিনি না থাকলে সেটা তোলা যে কঠিন হবে বুঝতে পেরেছিলেন ভারতের অধিনায়ক। ক্ষোভে ব্যাট ছুড়ে দেন। দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় ক্রিজে ঢোকার ৬ ইঞ্চি আগে ব্যাটটা মাটিতে আটকে যায়। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালিসা হিলি সময় পেয়ে যান উইকেট ভাঙার। ম্যাচটাই ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে ওই রান আউটের পর।
২০১৯ সালে ধোনির রান আউটও কিছুটা এমনই ছিল। হরমনপ্রীতের মতো সেই ম্যাচে ধোনিও অর্ধশতরান করেছিলেন। দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ৫০ ওভারের ম্যাচে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২৪০ রান। ধোনি যখন আউট হন, তখন ভারতের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। কিন্তু বাউন্ডারি থেকে মার্টিন গাপ্টিলের ছোড়া বলে উইকেট ভেঙে যায়। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায় ভারতের জয়ের স্বপ্ন। সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় ভারতকে। বৃহস্পতিবারের মতোই।
মেয়েদের সেমিফাইনালে গোটা ম্যাচেই রাশ ছিল অস্ট্রেলিয়ার হাতে। শুরু থেকে উইকেট ধরে রেখে শেষ বেলায় বড় রান তোলেন মেগ ল্যানিংরা। ভারতের সামনে ১৭৩ রানের লক্ষ্য রাখেন তাঁরা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারায় ভারত। জেমাইমা রদরিগেজ় এবং হরমনপ্রীতের ৬৯ রানের জুটি ভারতকে ফাইনালে যাওয়ার আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু ২৪ বলে ৪৩ রান করে জেমাইমা ফেরেন বাউন্সারে। মাথার উপর দিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষককে। ২০১৯ সালের সেমিফাইনালে এমন জুটি গড়েছিলেন ধোনি এবং রবীন্দ্র জাডেজা। ৫৯ বলে ৭৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন ভারতের বাঁহাতি অলরাউন্ডার। লং অফে কেন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন জাডেজা।
২০১৯ সালে ভারত ম্যাচটি হেরেছিল ১৮ রানে। বৃহস্পতিবার তারা হারল ৫ রানে। জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েও হার। মেয়েদের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের এটাই এখন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল। হলুদ জার্সিধারীদের বিরুদ্ধে বার বার হার। ২০০৩ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতকেও বিশ্বকাপের ফাইনালে হারতে হয়েছিল এই হলুদ জার্সিধারীদের বিরুদ্ধেই। সে বার ফাইনালে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া ট্রফি নিয়ে চলে গিয়েছিল।