(বাঁ দিকে) অমিত শাহ এবং এন বীরেন সিংহ (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের টালমাটাল পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লি এবং ইম্ফল, দু’দিকেই তৎপরতা শুরু হল। রবিবার মহারাষ্ট্রে প্রচার কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি ফিরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্র মারফত জানা যায়, দিল্লি ফিরেই মণিপুর নিয়ে জরুরি বৈঠক সারেন তিনি। সোমবার দুপুর ১২টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ পদাধিকারীদের সঙ্গে আরও একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তাঁর। দফায় দফায় বৈঠকের পরেই মণিপুরের তিনটি মামলার তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হাতে তুলে দিয়েছে শাহের মন্ত্রক।
অন্য দিকে, সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানী ইম্ফলে বিজেপি এবং শরিক দলগুলির বিধায়কদের জরুরি বৈঠকে ডাকলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে রবিবার সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করে কনরাড সাংমার দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ডাকাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারও কারও মতে, পরিষদীয় শক্তির বিচারে সরকারের স্থায়িত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই এই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মণিপুর।
এনপিপি সমর্থন প্রত্যাহার করলেও বীরেন সরকারের পতন ঘটবে, আপাতত এমন সম্ভাবনা নেই। ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির ৩৭ জন বিধায়ক রয়েছে। সে রাজ্যে সরকার গঠন কিংবা টেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় জাদুসংখ্যা বা ‘ম্যাজিক ফিগার’ ৩১। সে দিক থেকে দেখলে বিজেপি একক শক্তিতেই সরকার রক্ষা করতে পারবে। তা ছাড়া বীরেন সরকারকে এখনও অবধি সমর্থন জানাচ্ছে এনপিএফ-এর ৫ বিধায়ক, নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-র এক বিধায়ক এবং তিন নির্দল বিধায়ক। তাই কনরাডের দলের সাত বিধায়কের সমর্থন খোয়ালেও আপাতত সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে চিন্তা নেই বিজেপির।
তবে তার পরেও অস্বস্তি থাকছে বিজেপির। কারণ রাজ্যে গোষ্ঠীহিংসার আবহে দলের সাত কুকি বিধায়ক বেসুরে বাজছেন। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফলে গিয়ে তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনেও যোগ দিচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ডাকা বৈঠকে যোগ দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোন তিনটি মামলাকে এনআইএ-কে দিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুধু জানা গিয়েছে হিংসা, প্রাণহানি সংক্রান্ত এই তিন মামলার তদন্ত করছিল মণিপুর পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নিয়ে তদন্তভার তুলে দেওয়া হল এনআইএ-র হাতে। মনে করা হচ্ছে, তদন্তে গতি আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।