IPL Franchisees

আইপিএল দলগুলি কী ভাবে খুঁজে নেয় ভবিষ্যতের বুমরা, হার্দিকদের? কাদের উপর থাকে দায়িত্ব?

আইপিএলে ভাল খেলে দেশের জার্সি পরার সুযোগ পান রিঙ্কু সিংহ, আরশদীপ সিংহের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটারেরা। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এমন অনামিদের কী করে ক্রিকেটের মূল স্রোতে নিয়ে আসে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৯
Hardik Pandya and Jasprit Bumrah

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে হার্দিক পাণ্ড্য এবং যশপ্রীত বুমরা। —ফাইল চিত্র।

আইপিএলকে বলা হয় ভারতীয় ক্রিকেটের রান্নাঘর। এই কোটিপতি লিগে ভাল খেলেই ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা এবং হার্দিক পাণ্ড্য। এখনও আইপিএলে ভাল খেলে দেশের জার্সি পরার সুযোগ পান রিঙ্কু সিংহ, আরশদীপ সিংহের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটারেরা। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এমন অনামিদের কী করে ক্রিকেটের মূল স্রোতে নিয়ে আসে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি?

Advertisement

২০২২ সালের নিলামের আগে লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর গৌতম গম্ভীর ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। দিল্লির তরুণ ক্রিকেটার আয়ুষ বাদোনির খেলা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা বাদোনির উপর যাতে কোনও রকম চাপ তৈরি না হয়, তাই কাউকে কিছু না জানিয়েই মাঠে গিয়েছিলেন গম্ভীর। সেই ম্যাচে দেখার পরেই তরুণ ক্রিকেটারকে নেওয়ার জন্য নিলামে কেনার জন্য ঝাঁপায় লখনউ। গম্ভীর-ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি বলেন, “গম্ভীরের কিছু পরিচিত মানুষ রয়েছে। ক্রিকেটারদের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের উপর ভরসা করে ও। তবে নিজে না দেখে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না। ক্রিকেটারকে না জানিয়েই তাদের খেলা দেখতে চলে যায়। তার পর সিদ্ধান্ত নেয় নেওয়া হবে কি না। যদি ভাল না লাগে, তাহলে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানিয়ে দেবে গম্ভীর।”

তরুণ, অখ্যাত ক্রিকেটারদের দলে নিয়ে চমকে দেওয়ার পথটা দেখিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পরে বাকি দলগুলিও তাদের অনুসরণ করতে শুরু করে। গোটা দেশ জুড়ে খেলা দেখে ক্রিকেটার খুঁজে নেয় আইপিএলের দলগুলি। ভারতীয় ক্রিকেটের পরবর্তী তারকা খুঁজে নিতে দলগুলি বয়সভিত্তিক, ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে নজর রাখে ক্লাব ক্রিকেটেও। সেখান থেকেই তারা খুঁজে নেয় প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের। প্রতি বছর কোনও না কোনও অনামি ক্রিকেটার কোটিপতি হয়ে যান। এ বারের নিলামেও সেটার অন্যথা হয়নি। সমির রিজ়ভিকে ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু এই খোঁজার প্রক্রিয়াটা কেমন?

এই সব ক্রিকেটারকে খুঁজে বার করার যে প্রক্রিয়া তাকে বলা হয় স্কাউটিং। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমেই বিরাট সংখ্যক ক্রিকেটারদের একটা তালিকা তৈরি করা হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেটারদের বেছে নেওয়া হয়। এর পর চলে সেই তালিকা ছোট করার প্রক্রিয়া। ওই সব ক্রিকেটার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় কেমন খেলছেন, তাঁদের পরিসংখ্যান, ট্রায়ালে কেমন খেলছেন, সব কিছুর উপর ভিত্তি করে নাম বাদ দেওয়া হয়। আর এই কাজ শুধু আইপিএলের আগে হয়, এমনটা নয়। সারা বছর ধরেই দলগুলি এই প্রক্রিয়া চালায়। আইপিএলের দলগুলি প্রাক্তন ক্রিকেটার, পরিসংখ্যানবিদ, আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি এবং ধারাভাষ্যকারদের একটা দলকে এই দায়িত্ব দেয়। তাঁরা সারা বছর ধরে তথ্য যোগাড় করেন।

অনেক দল আবার মরসুম শুরুর আগে ক্যাম্প করে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হয় ক্রিকেটারদের। গুজরাত টাইটান্স যেমন নিলামের আগে ক্যাম্প করেছিল। দিল্লি ক্যাপিটালসও কলকাতায় ক্যাম্প করেছিল। সেই ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরও ক্যাম্প করেছিল নিলামের আগে। দলগুলি একই সময়ে ক্যাম্প রাখে না। ক্রিকেটারেরা বিভিন্ন দলের ক্যাম্পে যোগ দেন। তাই দলগুলি বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্প করে। ক্রিকেটারদের কথা মাথায় রেখেই এটা করা হয়।

বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করা হয়। বেঙ্গালুরু বোলারদের জন্য আলাদা ক্যাম্প করে। কলকাতা নাইট রাইডার্স অনূর্ধ্ব-২৫ এক দিনের ম্যাচে খুঁজে পেয়েছিল সুযশ শর্মাকে। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সময় চলে আইপিএলের ক্যাম্প। সেই সব জায়গা থেকেই তরুণ, অনামি ক্রিকেটারদের খুঁজে বার করে আইপিএল দলগুলি।

আইপিএলের সব দলই প্রায় ২০-২৫ জন ক্রিকেটারকে দলে রাখে। ৮ জন বিদেশি বাদ দিলে বাকি সকলেই ভারতীয়। এত জন প্রতিভাবান ভারতীয় ক্রিকেটারকে খুঁজতে হলে সারা বছর দলগুলিকে সন্ধান রাখতে হয়। সেই কাজটাই করেন স্কাউটেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement