মহড়া: প্রস্তুতি দেখতে দর্শকাসন ভরিয়ে ফেলেছেন সমর্থকেরা। পিটিআই
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দুই ইনিংস মিলিয়ে হয়েছিল ৪২৩ রান। অল্পের জন্য যে ম্যাচে হেরে যায় ভারত। আজ, রবিবার কটকের বরাবাটি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নামছে ভারত। অধিনায়ক ঋষভ পন্থের কাছে যা ঘুরে দাঁড়ানোর পরীক্ষা। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করারও লড়াই। কটকেই ১-১ করার জন্য মরিয়া ভারতীয় দল।
দ্বিতীয় ম্যাচের জন্য যে বাইশ গজ তৈরি হয়েছে, তাতেও বড় রানের সম্ভাবনা রয়েছে। ইডেনের মতো সেই পিচে হয়তো বাউন্স থাকবে না, কিন্তু কটকে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ব্যাটে দ্রুত বল আসবে। পিচে হাল্কা ঘাস থাকায় বল পিছলেও ব্যাটে আসতে পারে। তাই ভুবনেশ্বর কুমার, কাগিসো রাবাডাদেরও হতাশ হওয়ার কারণ নেই। তাঁরাও শুরুর দিকে উইকেট থেকে সাহায্য পাবেন। তবে শিশির নিয়ে সে রকম কোনও সমস্যা নেই। শেষ কয়েক দিনে শিশির বেশি পড়েনি। তাই স্পিনারদের বল হাত থেকে পিছলে যাওয়ারওসম্ভাবনা নেই।
রবিবার কটকে বৃষ্টির সম্ভাবনাও কম। কিন্তু বৃষ্টিকে রোখার যাবতীয় ব্যবস্থাপনা করেছে ওড়িশা ক্রিকেট সংস্থা। মাঠের নীচে রয়েছে বালির স্তর। ইডেনের মতোই পুরো মাঠ ঢেকে ফেলার আচ্ছাদন কেনা হয়েছে। সিএবি-র পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানকার পিচ প্রস্তুতকারককে সাহায্য করতে। সুজনবাবু বলছিলেন, ‘‘পিচের দায়িত্বে আমি নেই। তবে বৃষ্টির পরে কী ভাবে মুহূর্তের মধ্যে মাঠ তৈরি করে ফেলা যায়, সেই ট্রেনিং দিতেই এখানে এসেছি। শুনেছি উইকেট ভালই হচ্ছে। বড় রানের সম্ভাবনার কথাও শুনেছি।’’
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার অনুশীলনের দিনই গ্যালারি ভর্তি হয়ে যায় এ দিন। ভারতের কোনও মাঠে এই দৃশ্য দেখা যায় না ম্যাচের আগের দিন। ভারতীয় বোর্ড টুইট করে সেই ছবি তুলে ধরেছে। লেখা হয়েছে, ‘‘অনুশীলনের দিনই ম্যাচের মতো উন্মাদনা।’’ দু’টি ভিডিয়োও তুলে ধরেছে বিসিসিআই ডট টিভি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মূল পিচের পাশের প্র্যাক্টিস পিচে ছয় মারার অনুশীলন করছেন ঋষভ, হার্দিক পাণ্ড্য ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। স্টেপ-আউট করে পন্থ ছয় মারতেই গ্যালারি গর্জে উঠছে ম্যাচের মতো। হার্দিক ব্যাট করার সময় সব চেয়ে বেশি চিৎকার শোনা যায় গ্যালারিতে। হার্দিকের নামে ধ্বনিও তোলেন কটকের সমর্থকেরা।
২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল কটকে। সাড়ে চার বছর পরে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরে এসেছে সেই শহরে। তাই দর্শকদের উন্মাদনাও চরমে পৌঁছেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ওয়েন পার্নেলও প্রশংসা করেছেন ওড়িশার মানুষের আপ্যায়নের। পার্নেল বলেছেন, ‘‘প্রথম বার এলাম এই শহরে। ভারতের যে প্রান্তেই যাই, আপ্যায়নের কোনও রকম খামতি থাকে না। কটকও আমাদের আপন করে নিয়েছে।’’
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে পার্নেলদের ২-০ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আজ। প্রথম ম্যাচ হেরে ঋষভদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে। এই পরিস্থিতির সুবিধে আদৌ তাঁরা তুলতে পারেন কি না, সেটাই দেখার। ভারত যদিও এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়বে না। ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবে পন্থ-বাহিনী। গুরু রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় তাঁর আলোচনা হয় এ দিন। যা দেখে বলে দেওয়াই যায়, শুধুমাত্র সিরিজ়ে ঘুরে দাঁড়ানোই নয়, ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার বড় লড়াইওহতে চলেছে কটকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।