(বাঁ দিকে) হার্দিক পাণ্ড্য এবং অনিকেত বর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে নীতা অম্বানী জানিয়েছিলেন, অর্থাভাবে প্রায় তিন বছর ম্যাগি খেয়ে কাটিয়ে ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়কের সেই গল্প অনুপ্রাণিত করেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অনিকেত বর্মাকে। কাকা অমিত বর্মার কাছে মানুষ হয়েছেন অনিকেত। তিনিই জানিয়েছেন অনিকেতের কাহিনি।
মূলত কাকার ইচ্ছাতেই ক্রিকেটার হয়েছেন ঝাঁসির বাসিন্দা। তিন বছর বয়সে মাকে হারানোর পর থেকে কাকা অমিতই তাঁর জীবনের সব কিছু। এক সাক্ষাৎকারে অমিত বলেছেন, ‘‘অনিকেতের বয়স তখন ১৪ বছর হবে। তখন ওকে একটা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে পড়ত। খুব খিদেও পেত ওর। সে সময় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে দিনের পর দিন হার্দিকের ম্যাগি খেয়ে থাকার বিষয়টা জানতে পেরেছিলাম। তখন অনিকেতকে গল্পটা বলেছিলাম। ও খুব অনুপ্রাণিত হয়েছিল। তার পর থেকে ওর মধ্যে একটা বাড়তি উদ্যম দেখতাম। বড় খেলোয়াড় হওয়ার ইচ্ছা তৈরি হয় অনিকেতের মধ্যে। ক্রিকেটের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে শুরু করে। এক দিন মাঠে পৌঁছে আমার পা ছুঁয়ে নমস্কার করে বলে, ‘আমি অনেক কিছু নিয়ে অভিযোগ করি না?’ আমি হেসে ফেলেছিলাম। কিন্তু অনিকেতের মুখে একটা জেদ চোখে পড়েছিল।’’
একটা সময় পর্যন্ত ছেঁড়া জুতো পরে খেলতেন অনিকেত। কাকাই তাঁকে ক্রিকেট খেলার জন্য ভাল একটা জুতো কিনে দিয়েছিলেন। অমিত বলেছেন, ‘‘আমার প্রথম চাকরি ছিল একটা গাড়ির দোকানে। তিন হাজার টাকা মাইনে পেতাম। তখন অনিকেত একটা ছেঁড়া জুতো পরে খেলত। আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। তবু ওকে দোকানে নিয়ে গিয়ে ১২০০ টাকার দিয়ে একটা জুতো কিনে দিই। তার পর থেকে রোজ নতুন জুতো জোড়া নিয়ে ঘুমোত অনিকেত। নিজের জীবনে কখনও একটু দামি জিনিসও ব্যবহার করিনি। তবে অনিকেতের জন্য সব কিছু করতে পারি।’’
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ৪১ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে নজর কেড়েছেন অনিকেত। হায়দরাবাদের প্রস্তুতি ম্যাচে ভাল খেলার সুবাদে তাঁকে আইপিএলের ম্যাচ খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন প্যাট কামিন্সেরা। দলকে হতাশ করেননি ২৩ বছরের ব্যাটার। নিলামে তাঁকে ৩০ লাখ টাকায় কিনেছিলেন হায়দরাবাদ কর্তৃপক্ষ।