SRH vs RR match today

ঈশানের শতরানে পুরনো ছন্দেই হায়দরাবাদ, ঘরের মাঠে ৪৪ রানে হারাল রাজস্থানকে

বছর পাল্টে গেল। পাল্টাল না সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। গত বারের আইপিএলের ফাইনালিস্টরা যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই এ বারের আইপিএল শুরু করল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৯:২৮
cricket

শতরানের পর ঈশান কিশন। ছবি: পিটিআই।

বছর পাল্টে গেল। পাল্টাল না সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। গত বারের আইপিএলের ফাইনালিস্টরা যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই এ বারের আইপিএল শুরু করল। হায়দরাবাদের অতি আগ্রাসনের সামনে থমকে গেল রাজস্থান রয়্যালস। রবিবার ঘরের মাঠে কাব্য মরানের দল ৪৪ রানে হারিয়ে দিল রাহুল দ্রাবিড়ের রাজস্থানকে। শতরান করে নজর কেড়ে নিলেন ঈশান কিশন। আগে ব্যাট করে হায়দরাবাদের তোলা ২৮৬/৬-এর জবাবে রাজস্থানের ইনিংস শেষ হল ২৪২/৬ রানে।

Advertisement

টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। তিনি হয়তো ভাবতেও পারেননি কী ভুল করেছিলেন। হায়দরাবাদের পাটা উইকেটে আগে তাদের ব্যাট করতে দেওয়া মানে শুরুতেই হেরে যাওয়া। ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা বোঝা গেল।

আগের মরসুমে প্রতিটি ম্যাচেই আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা গিয়েছিল হায়দরাবাদের। তিন বার আড়াইশোর বেশি রান তুলেছিল এবং ছ’বার দুশোর বেশি রান তুলেছিল তারা। এ বারও তার ব্যতিক্রম নেই। প্রথম ম্যাচেই নিজেদের তৈরি করার আইপিএলের সর্বোচ্চ রানের নজির ভেঙে দেওয়ার কাছে চলে এসেছিল। এক রানের জন্য থামতে হল। রাজস্থানের বিরুদ্ধে প্রত্যেক ব্যাটারই আগ্রাসী ছন্দে খেললেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বল বার বার বাউন্ডারিতে গিয়ে পড়ল।

গত আইপিএলে ট্রেভিস হেড এবং অভিষেক শর্মা যে ভাবে শুরুটা করছিলেন, তাতেই অর্ধেক কাজ হয়ে যাচ্ছিল হায়দরাবাদের। এ বার তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ঈশান। ফলে আইপিএলের ভয়ঙ্করতম টপ অর্ডার হায়দরাবাদের। সেটা বোঝা গেল প্রথম ম্যাচেই। প্রথম ওভারে ১০, দ্বিতীয় ওভারে ১৪, তৃতীয় ওভারে ২১। তিন ওভারেই উঠে গেল ৪৫ রান। হায়দরাবাদের ধ্বংসলীলা শুরু ওখান থেকেই।

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে অভিষেক (২৪) আউট হতেও যা থামেনি। হেডের সঙ্গে যোগ দেন ঈশান। তিনি আরও ভয়ঙ্কর। দুই বাঁ হাতি মিলে রাজস্থানের বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দেন। ন’টি চার এবং তিনটি ছয় মেরে ৬৭ রানে আউট হন হেড। ঈশানের সঙ্গে যোগ দেওয়া নীতীশ রেড্ডিও আগ্রাসন ছাড়েননি। তিনিও শুরু থেকে চালাতে থাকেন। ১৫ বলে ৩০ করে আউট হন।

ঈশানের আলাদা করে প্রশংসা প্রাপ্য। এক সময় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের নয়নের মণি ছিলেন তিনি। তাঁর জন্য ১৫ কোটি খরচও করেছে। কিন্তু গত বার দল থেকে ছেড়ে দেয়। সুযোগ লুফে নেয় হায়দরাবাদ। আর প্রথম ম্যাচেই ঈশান বুঝিয়েছেন, তাঁর উপর আস্থা রেখে ভালই করেছে হায়দরাবাদ। ক্রিজ়‌ে নামার পর থেকে শেষ পর্যন্ত যে ভাবে আক্রমণাত্মক খেললেন, মাঠের চারদিকে শট মারলেন, তা নির্বাচকদের ভাবাতে বাধ্য। চলতি মরসুমে এ রকম কয়েকটি ইনিংস তাঁর জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে দিতে পারে।

রাজস্থানের হয়ে সবচেয়ে খারাপ বল করলেন জফ্রা আর্চার। চার ওভারে ওভারে ৭৬ রান দিলেন। ঈশান, হেড দু’জনেই তাঁর উপরে একটু বেশি ‘সদয়’ ছিলেন। তুষার দেশপান্ডে এবং সন্দীপ শর্মার বোলিং হায়দরাবাদের রানকে আরও বাড়তে দেয়নি। দু’জনেই বলের গতির হেরফের ঘটিয়ে হায়দরাবাদ ব্যাটারদের খুব একটা মারতে দিলেন না। তবে এক ওভারে নয় রান দেওয়া নীতীশ রানাকে আর বল করানো হল না কেন, সে উত্তর দ্রাবিড়রাই দিতে পারবেন।

২৮৭ রান তোলার জন্য রাজস্থানকে অসম্ভবকে সম্ভব করতে হত। দ্বিতীয় ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় তারা। তৃতীয় বলে যশস্বী জয়সওয়ালকে ফিরিয়ে দেন সিমরজিৎ সিংহ। অধিনায়ক রিয়ান পরাগ এসে প্রথম বলেই চার মারেন। দ্বিতীয় বলেই প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ।

কেকেআর ছেড়ে আসা নীতীশ রানাও (১১) নতুন দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ। রাজস্থানের সম্মান বাঁচাতে হল দুই পুরনো যোদ্ধা সঞ্জু স্যামসন এবং ধ্রুব জুরেলকেই। দু’জনে মিলে চতুর্থ উইকেটে ১১১ রান যোগ করলেন। বেশ চালিয়েই খেলছিলেন তাঁরা। তবে সেই রানের গতি মোটেই এমন ছিল না যে ২৮৭ রান তাড়া করে জেতা যায়।

সঞ্জু এবং জুরেল ক্রিজ়ে থাকার সময় তবু কিছুটা বেঁচে ছিল রাজস্থানের আশা। তিন বলের ব্যবধানে দু’জনে ফেরার পর সব আশা শেষ হয়ে যায়। হর্ষল পটেলের বলে হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দেন সঞ্জু (৬৬)। জুরেল (৭০) ফিরে যান অ্যাডাম জ়‌াম্পার বলে।

তার পরেও যে রাজস্থান প্রায় আড়াইশোর কাছাকাছি তুলল, তার নেপথ্যে শিমরন হেটমায়ার এবং শুভম দুবের জুটি। পাঁচ ওভারের মতো খেলে তাঁরা ৮০ রানের জুটি গড়লেন। তবে কখনওই হায়দরাবাদের রানের কাছাকাছি যেতে পারেনি রাজস্থান। ২৩ বলে ৪২ করে হেটমায়ার আউট হন। শুভম অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ৩৪ করে।

Advertisement
আরও পড়ুন