Sri Lanka

Sri Lanka: পেট্রল নেই, গ্যাস নেই, বন্ধ স্কুল, বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা এখন বিভোর শুধু ক্রিকেটে

গোটা দেশে শুধু নেই আর নেই। আছে একটাই জিনিস। সেটা হল ক্রিকেট। সেই ক্রিকেটকেই ঘিরেই বাঁচার স্বপ্ন দেখছে শ্রীলঙ্কা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ১৭:৫৬
শ্রীলঙ্কার মানুষ মজে ক্রিকেটে।

শ্রীলঙ্কার মানুষ মজে ক্রিকেটে। ফাইল ছবি

আর্থিক ভাবে বিধ্বস্ত একটা দেশ। না আছে পেট্রল, না আছে গ্যাস, না আছে ওষুধ। বন্ধ স্কুল, অফিস। রাস্তায় চলছে না গাড়ি। এই অবস্থায় গোটা দেশের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে একটিই জিনিস। তা হল ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়া এখন খেলছে সে দেশে। ভারতের মহিলা দলও এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায়। দুই জাতীয় দলের খেলা দেখতেই এখন স্টেডিয়ামে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শকরা।

সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। শাসক দলের বদল সত্ত্বেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। রাস্তার ধারে সারি সারি খালি গ্যাসের সিলিন্ডার দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পেট্রল পাম্পে বাড়ছে অপেক্ষমান গাড়ির ভিড়। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। অতিপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ গাড়ি ব্যবহার করতে পারছেন না। তা সত্ত্বেও ক্রিকেট মাঠে প্রত্যাশার থেকে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। মানুষের হাতে অর্থ নেই। তবে ক্রিকেট ম্যাচ দেখার ক্ষেত্রে তাঁরা কার্পণ্য করছেন না।

Advertisement

শ্রীলঙ্কার বাসিন্দা উজিত নীলন্ত বলেছেন, “হ্যাঁ, দেশে সমস্যা রয়েছে। মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পেট্রল ভরার লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেমেয়েরা আনন্দ করার জন্য কিছু পাচ্ছে না। এই সময়ে ক্রিকেট ম্যাচ আমাদের কাছে মুক্ত বাতাসের মতো। সমস্ত দুঃখ মিটিয়ে দিচ্ছে একটা ম্যাচ।” গলে প্রথম টেস্টে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে হাজির ছিলেন উজিত। দ্বিতীয় টেস্টও দেখতে যাবেন।

ছেলেকে ক্রিকেটার বানাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট সব পরিকল্পনা তছনছ করে দিয়েছে। তাঁর মতো অনেক মা-বাবাই সন্তানদের স্বপ্ন পূর্ণ করতে পারেননি। ক্রিকেট ছাড়া আর কোনও খেলাই সে দেশে কদর পায় না। বর্ণবিদ্বেষ, ধর্মীয় কারণে বিবাদ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে ক্রিকেট। এমনকি, ২৫ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধও শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেটের উন্নতি থামাতে পারেনি।

ট্রেনে করে গলে খেলা দেখতে এসেছিল ১৬ বছরের নেতুমকশিলা। সামনে পরীক্ষা থাকলেও স্কুল বন্ধ থাকার কারণে তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। বলেছে, “দুঃখের সময় ক্রিকেটই আমাদের একমাত্র মুক্তি। মন হালকা রাখতেই আমরা খেলা দেখতে এসেছি।” শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে এক সময় সে দেশে সফর করা উচিত হবে কি না, সেটা নিয়েই সংশয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষমেশ শ্রীলঙ্কায় আসে। পাঁচটি এক দিনের ম্যাচেই দেখা যায় তুমুল ভিড়। শেষ ম্যাচে অজিদের সে দেশে আসার জন্য ধন্যবাদও জানান দর্শকরা।

আরও পড়ুন
Advertisement