(বাঁ দিকে) রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সারা দিন একসঙ্গে ছিলেন ২২ গজের সঙ্গীর সঙ্গে। অথচ রবীন্দ্র জাডেজাকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন বুঝতেই দেননি, কয়েক ঘণ্টা পরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন। অশ্বিন সাংবাদিক বৈঠক করার ৫ মিনিট আগে বিষয়টি জেনে বাক্রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন জাডেজা। কিছুটা অভিমানী শুনিয়েছে বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে।
অনিল কুম্বলে এবং হরভজন সিংহের জুটির পর টেস্ট ক্রিকেটে অশ্বিন-জাডেজা জুটি হয়ে উঠেছিল ভারতীয় দলের ভরসা। দু’জনে একসঙ্গে ৫৮টি টেস্ট খেলে নিয়েছেন ৫৮৭টি উইকেট। ২২ গজের দু’প্রান্ত থেকে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের দিনের পর দিন চাপে রেখে গিয়েছেন তাঁরা। দুই অলরাউন্ডারের বোঝাপড়াও ছিল প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্কের। অশ্বিনের অবসরে সেই জুটি ভেঙে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ জাডেজা। মেলবোর্ন পৌঁছে দীর্ঘ দিনের সঙ্গীর অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন বরোদার অলরাউন্ডার। জানিয়েছেন, অশ্বিন যে দিন অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন, সে দিন প্রায় সারা ক্ষণ এক সঙ্গেই ছিলেন দু’জনে।
জাডেজা বলেছেন, ‘‘সারাটা দিন আমরা একসঙ্গেই ছিলাম। অথচ অশ্বিন আমাকে সামান্যতম ইঙ্গিতও দেয়নি।’’ হাসতে হাসতে বলেছেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি ওর মাথার মধ্যে কী চলছিল।’’ জাডেজা আরও বলেছেন, ‘‘বিষয়টা শেষ মুহূর্তে জানতে পারি। অশ্বিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার ৫ মিনিট আগে। খবরটা আমার কাছে আঘাতের মতো ছিল। আমরা অনেক দিন ধরে বোলিং জুটি ছিলাম। সব সময় পরস্পরকে উৎসাহিত করতাম। একসঙ্গে আলোচনা করে পরিকল্পনা তৈরি করতাম। ব্যক্তিগত ভাবে অনেক কিছুর অভাব অনুভব করব।’’
অশ্বিনের অবসরে মনখারাপ জাডেজার। মাঠের লড়াইয়ে প্রিয় বন্ধুর মূল্যবান পরামর্শ আর পাবেন না। তবু বাস্তব মেনে নিয়ে সামনের দিকে তাকাতে চাইছেন জাডেজা। তিনি বলেছেন, ‘‘আশা করব ভাল কোনও স্পিনার-অলরাউন্ডার অশ্বিনের অভাব পূর্ণ করবে দলে। ভারতে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। এমন নয় যে কেউ অপরিবর্তনীয়। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এটা তরুণদের জন্য সুবর্ণসুযোগ। কেউ নিশ্চয়ই কাজে লাগাবে।’’
ব্রিসবেনে চাপের সময় ব্যাট হাতে ৭৭ রান করেছিলেন জাডেজা। সেই ইনিংসের পর তাঁর আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘বিদেশের মাটিতে দলের প্রয়োজনে রান করতে পারলে ভালই লাগে। আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। আমরা একই মানসিকতা নিয়ে মেলবোর্নে খেলব। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হবে। দলের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হবে আমাদের।’’ বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির প্রথম দুই টেস্টে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় আক্ষেপ নেই জাডেজার। বরং না খেলায় তিনি লাভবান হয়েছেন বলেই মনে করেন। জাডেজা বলেছেন, ‘‘প্রথম দুটো ম্যাচে না খেলায় প্রস্তুতির বেশি সুযোগ পেয়েছি। এখানকার পরিবেশ, পিচের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ বেশি পেয়েছি। অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রমে ফল পেয়েছি খেলতে নেমে।’’
গত দু’বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ় জিতে ফিরেছিল ভারত। জাডেজা মনে করেন টানা তিন বার এই কৃতিত্ব দেখানোর সুযোগ রয়েছে তাঁদের সামনে। উল্লেখ্য, ভারত-অস্ট্রেলিয়া চতুর্থ টেস্ট শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে।