সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: এক্স (টুইটার)।
কলকাতা পুলিশের আপত্তিতে আইপিএলের কলকাতা নাইট রাইডার্স-লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচ চলে গিয়েছে গুয়াহাটিতে। ৬ এপ্রিল রামনবমীর দিন ইডেন গার্ডেন্সে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। হাতছাড়া হওয়া সেই ম্যাচ আবার ইডেন ফিরে পেতে পারে। শনিবার আইপিএলের উদ্বোধনের দিন এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
কেকেআরের হোম ম্যাচ কলকাতার হাতছাড়া হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় লালবাজারের কর্তাদের। প্রশ্ন ওঠে, রামনবমীর দিন অন্য রাজ্যের পুলিশ আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনে সক্ষম হলেও কলকাতা পুলিশের কেন প্রতি বছর সমস্যা হয়? সমাজমাধ্যমে পুলিশের সমালোচনায় সরব হন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতা-কর্মীদের একাংশও। প্রশ্ন ওঠে কলকাতা পুলিশের কর্মদক্ষতা নিয়ে। সমালোচনার মুখে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হন লালবাজারের কর্তারা। গত শুক্রবার প্রথম সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশ জানায়, তাদের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শনিবার সৌরভ বলেন, ‘‘অপেক্ষা করুন। দেখুন না কী হয় শেষ পর্যন্ত। সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশের পোস্ট দেখেননি? আমার মনে হয় না, ম্যাচ কলকাতা থেকে সরে যাবে।’’
পরে লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করছে। আইপিএলের ম্যাচের নিরাপত্তায় পুলিশকর্মীদের মোতায়েনে নতুন কৌশল নেওয়া হতে পারে।’’ ৬ এপ্রিল রামনবমীর নানা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি ইডেনে নির্বিঘ্নে আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করছেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরা। উল্লেখ্য, গত বছরও রামনবমীর দিন ইডেনে আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা থেকে সরে গিয়েছিল সেই ম্যাচ।
কেকেআর-এলএসজি ম্যাচের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। এক দিকে, শাহরুখ খানের দল আইপিএলের প্রথম থেকে কলকাতার প্রতিনিধিত্ব করে। তারা গত বারের চ্যাম্পিয়নও। অন্য দিকে, এলএসজির মালিক কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্কা। কলকাতায় প্রতি বছর লখনউ মোহনবাগানের মতো সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলে। কারণ গোয়েন্কা মোহনবাগানের ফুটবল দলেরও বিনিয়োগকারী। তাই এই ম্যাচকে ঘিরে আলাদা আবেগ থাকে। সম্মানের লড়াই হিসাবে দেখেন কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ। এমন একটি ম্যাচ ইডেন থেকে সরে যাওয়ায় মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। সৌরভের মন্তব্য তাঁদের নতুন আশা দেখাচ্ছে।
৬ এপ্রিলের ম্যাচে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে সিএবিকে জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। অনুরোধ করা হয়েছিল সূচি পরিবর্তন করে কলকাতা-লখনউ ম্যাচ অন্য দিন করার। কলকাতা পুলিশের অনুরোধ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) পাঠিয়ে দেয় সিএবি। সেইমতো আগামী ৬ এপ্রিলের ম্যাচ কলকাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় গুয়াহাটিতে। কারণ ঠাসা সূচির মধ্যে অন্য দিন ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বিসিসিআই।