(বাঁ দিক থেকে) সঞ্জু স্যামসন এবং রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত সাদা বলের সিরিজ়ে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল সঞ্জু স্যামসনকে। কিন্তু কোনও ম্যাচেই দাগ কাটতে পারলেন না এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। বার বার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ২৮ বছরের সঞ্জুকে। ইতিমধ্যেই দেশের হয়ে ১৩টি এক দিনের ম্যাচ এবং ২২টি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে বার বার ব্যর্থ হয়েছেন সঞ্জু। আগামী দিনে তাঁকে আর সুযোগ দেওয়া উচিত কি না সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিল।
উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থ গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকে মাঠের বাইরে। ২০২৩ সালে তিনি খেলতেই পারবেন না। এই সময় সঞ্জু স্যামসন এবং ঈশান কিশনের কাছে সুযোগ চলে এসেছে নিজেদের প্রমাণ করে দলে জায়গা পাকা করে নেওয়ার। এক দিনের ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে পর পর তিনটি অর্ধশতরান করে দলকে কিছুটা ভরসা দিয়েছেন ঈশান। কিন্তু সঞ্জু দু’টি এক দিনের ম্যাচের একটিতে ৯ রান করেন, অন্যটিতে ৫১ রান। টি-টোয়েন্টিতে পাঁচটি ম্যাচেই খেলানো হয় সঞ্জুকে। কিন্তু কোনও ম্যাচে ১৫ রানের গণ্ডিই পার করতে পারেননি তিনি।
লোকেশ রাহুল সুস্থ হয়ে ফিরে এলে ভারত হয়তো আবার তাঁকে উইকেটরক্ষার দায়িত্ব দেবে। সে ক্ষেত্রে সঞ্জুর সুযোগ পাওয়া আরও কঠিন হয়ে যাবে। ঈশান ওপেন করতে পারেন। দলের প্রয়োজনে তাঁকে শুরুতে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু সঞ্জু খেলেন মিডল অর্ডারে। রাহুল ফিরলে সেই জায়গা চলে যাবে তাঁর দখলে। তখন সঞ্জুকে দলের বাইরেই থাকতে হতে পারে।
সঞ্জুর ভারতীয় দলে অভিষেক হয় ২০১৫ সালে। জ়িম্বাবোয়ে সফরে যাওয়া টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন তিনি। অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বে সেই দলের হয়ে খেলেছিলেন সঞ্জু। উইকেটরক্ষক নয়, মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসাবে। ২০ বছরের সঞ্জু সেই ম্যাচের পর আবার সুযোগ পান ২০২০ সালে। এখনও পর্যন্ত ২২টি টি-টোয়েন্টি খেলে একটি মাত্র ম্যাচে অর্ধশতরান করেছেন সঞ্জু, সেটাও আবার দুর্বল আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক সম্পর্কে নিন্দকেরা বলেন, “বন্যেরা বনে সুন্দর, সঞ্জু স্যামসন আইপিএলে।” সমালোচকদের জবাব দিতে পারেননি সঞ্জু। আইপিএলে কোনও ম্যাচে ভাল খেললেও দেশের হয়ে সেটা করতে পারেন না তিনি।
সঞ্জুকে এত সুযোগ দেওয়া নিয়ে খুশি নন অভিষেক নায়ার। কলকাতা নাইট রাইডার্সের সহকারী কোচ বলেন, “সুযোগ পেলে রান করতে হবে। সঞ্জুকে তিন নম্বরে ব্যাট করানো উচিত। ওটাই ওর জায়গা। কিন্তু ভারতীয় দলে পাঁচ বা ছ’নম্বরে নামানো হয় সঞ্জুকে। সেই জায়গাতেই যদি ব্যাটার প্রয়োজন হয়, তা হলে রিঙ্কু সিংহকে নিয়ে যাওয়া উচিত। আমার মনে হয়ে সঞ্জুকে সঠিক জায়গায় খেলানো হচ্ছে না। ও পাওয়ার প্লে-তে খেলতে পারে, স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেলে। কিন্তু এখানে সেটা হচ্ছে না।”
আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে ভারত। সেই দলে রাখা হয়েছে রিঙ্কুকে। যশপ্রীত বুমরা সেই সিরিজ়ে ফিরছেন। তিনিই অধিনায়ক। ফিনিশার হিসাবে এই সিরিজ়ে রিঙ্কু সুযোগ পেতে পারেন। তরুণদের দেখে নিতে চাইছেন ভারতের নির্বাচকেরা। সেখানে সুযোগ পেতে চলেছেন উইকেটরক্ষক জিতেশ শর্মাও। রয়েছেন সঞ্জুও। কাকে ভারতীয় দল উইকেটরক্ষার দায়িত্ব দেয়, সেই দিকে নজর থাকবে।