সৌরভকে নিয়ে সচিন ফাইল ছবি
গত সাড়ে তিন দশকে অনেক ভাবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছেন তিনি। কখনও জুনিয়র ক্রিকেটে সতীর্থ, কখনও দুর্দান্ত ওপেনিং ব্যাটার, কখনও জাতীয় দলের অধিনায়ক এবং এখন ব্যস্ত প্রশাসক। তবে সচিন তেন্ডুলকরের কাছে সব থেকে বড় পাওনা হল তাঁদের বন্ধুত্ব, যা ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার এত বছর পরেও শক্তিশালী এবং অটুট।
শুক্রবার ৫০ পূর্ণ করবেন সৌরভ। তার আগে প্রাক্তন সতীর্থকে নিয়ে অনেক কথা বললেন সচিন। স্মৃতির ঝাঁপি উপুড় করে বেরিয়ে এল অনেক কথা। সেই স্মৃতিচারণ যেমন রয়েছে দুষ্টুমি, তেমনই রয়েছে অধিনায়ক হিসাবে সৌরভের সাফল্যের প্রসঙ্গও। সচিন বলেছেন, “সৌরভ দুর্দান্ত অধিনায়ক ছিল। কী ভাবে খেলোয়াড়দের খোলা মনে খেলতে দিতে হবে এবং একইসঙ্গে ওদের দায়িত্ব দিতে হবে, এই দুটো বিষয়ে দারুণ ভারসাম্য রাখতে পারত। ও দায়িত্ব নেওয়ার সময় ভারতীয় ক্রিকেট রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এমন কিছু খেলোয়াড়কে দরকার ছিল, যারা ভারতীয় ক্রিকেটকে আগামী দিনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
তেন্ডুলকরের সংযোজন, “সেই সময় আমাদের সেরা কিছু ক্রিকেটার উঠে এসেছিল। জাহির খান, যুবরাজ সিংহ, বীরেন্দ্র সহবাগ, হরভজন সিংহ, আশিস নেহরা তাদের মধ্যে কয়েক জন। প্রত্যেকেই প্রতিভাবান। কিন্তু ওদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কারও সাহায্য দরকার ছিল, যেটা দিয়েছিল সৌরভ। প্রত্যেককে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া ছিল, একই সঙ্গে প্রত্যেকে খোলা মনে খেলতে পারত।”
এ প্রসঙ্গে ১৯৯৯ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা তুলে ধরেছেন সচিন, যে বার সৌরভকে সহ-অধিনায়ক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সচিন বলেছেন, “নেতৃত্ব ছাড়ার আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে অধিনায়ক ছিলাম। তখন আমিই বলেছিলাম সৌরভকে সহ-অধিনায়ক করার জন্য। তার আগে দীর্ঘ দিন ওকে কাছ থেকে দেখেছি, ওর সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি। তাই বুঝতে পেরেছিলাম ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে ও-ই যোগ্য ব্যক্তি। সৌরভ অধিনায়ক হওয়ার পরে আর পিছন ফিরে তাকায়নি। যা অর্জন করেছে সেটা তো সবাই জানে।”
কানপুরে জুনিয়র ক্রিকেট খেলতে গিয়ে প্রথম বার সৌরভের সঙ্গে দেখা সচিনের। সেই সময় একটি দুষ্টুমির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন সচিন। কী ভাবে তিনি, প্রাক্তন ক্রিকেটার যতীন পরাঞ্জপে এবং কেদার গডবোলে বুদ্ধি করে সৌরভের ঘর জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন, সেই স্মৃতি উল্লেখ করেছেন সচিন। বলেছেন, “এক দিন দুপুরে সৌরভ ঘুমোচ্ছিল। তখন আমি, যতীন এবং কেদার ওর ঘর জলে ভরিয়ে দিই। ঘুম ভেঙে অবাক হয়ে গিয়েছিল সৌরভ। দেখছিল সারা ঘরে জল, সুটকেস ভাসছে। পরে বুঝতে পারে ওটা আমাদের কীর্তি। আসলে ছোটবেলায় এ রকম মজা সবাই করে থাকে। আমরাও ব্যতিক্রম ছিলাম না।”