Chandrakant Pandit

Ranji Trophy 2022: ফিরল ২৩ বছর আগের কান্না, শুধু পাল্টে গেল পণ্ডিতের আবেগ

রঞ্জির ইতিহাসে প্রথম বার জয়ী দল হিসাবে নাম লেখা হল মধ্যপ্রদেশের। সেই জয়ের মুহূর্তে গোটা দলের সঙ্গে আনন্দে ভাসলেন পণ্ডিতও।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২২ ১৭:১৩
রঞ্জিতে প্রথম বার ট্রফি জিতল মধ্যপ্রদেশ।

রঞ্জিতে প্রথম বার ট্রফি জিতল মধ্যপ্রদেশ। ছবি: পিটিআই

জয়ের জন্য মধ্যপ্রদেশের তখনও পাঁচ রান বাকি। রজত পাটীদার একটি চার মারলেন। বাউন্ডারিতে মধ্যপ্রদেশের বাকি ক্রিকেটারদের ভিড়। সকলে মাঠে ঢোকার জন্য উদগ্রীব। ব্যতিক্রম এক জন। চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। চেয়ারে বসে রয়েছেন তিনি। এক রান বাকি। কাজ বাকি। অপেক্ষায় বসে হেডস্যর।

সরফরাজ খানের বল ডিপ কভারের দিকে ঠেলে এক রান দিতেই দৌড় শুরু কুমার কার্তিকেয়দের। অপেক্ষার অবসান। এত বছর ধরে যে ট্রফি ছিল নাগালের বাইরে সেই ট্রফিই এ বার হাতে উঠবে। ৪১ বারের রঞ্জি জয়ীদের হারিয়ে প্রথম বার রঞ্জি জয় মধ্যপ্রদেশের। আনন্দে আত্মহারা ক্রিকেটাররা। পণ্ডিত চেয়ার ছেড়ে উঠলেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে এক বার ঈশ্বর স্মরণ করলেন। দর্শকদের হাতজোড় করে প্রণাম করলেন। কাজ শেষ। কাঁদতে কাঁদতে মাঠে ঢুকলেন হেডস্যর। আনন্দে চোখে জল পণ্ডিতের। অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করলেন তিনি।

Advertisement

২৩ বছর আগে মধ্যপ্রদেশের হয়ে যে কাজ অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল, সেই কাজ শেষ হল। ম্যাচ শেষে বার বার বললেন, “২৩ বছর পর এই জয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালে অধিনায়ক হিসাবে যে কাজটা করতে পারিনি, ২০২২ সালে কোচ হিসাবে সেটা পারলাম।”

চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না কঠিন অনুশাসন মেনে চলা পণ্ডিত। তাঁর ছাত্ররাও হেডস্যরের সেই আবেগ দেখে তাঁকে কাঁধে তুলে নিলেন। মাঠের মধ্যে ছাত্রদের কাঁধে পণ্ডিত। যে দলকে নিজের কাঁধে তুলে ফাইনাল জেতালেন, সেই দল তাঁকে কাঁধে নিয়ে ঘুরছে। চোখ মুছছেন পণ্ডিত। ২৩ বছর আগে তিনি মুখ ঢেকে কেঁদেছিলেন। হারের লজ্জা মাথা নত করে দিয়েছিল তাঁর। রবিবার তিনি কাঁদছেন। কান্না লুকোবার কোনও চেষ্টা নেই। মাথা উঁচিয়ে মাঠে ঘুরছেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর মাঠে গোটা দলকে এক লাইনে দাঁড় করালেন পণ্ডিত। নাটক শেষে গোটা দল যে ভাবে মঞ্চের উপর এসে দর্শকদের মাথা নিচু করে অভিবাদন জানায়, ধন্যবাদ জানায়, ঠিক একই ভাবে গোটা মধ্যপ্রদেশ দলটাকে দেখা গেল তিন বার মাথা নিচু করে দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে। মাঝে সেই দলের পরিচালক, অভিভাবক, কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। রঞ্জি জয়ের পরেও দলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক করে কথা বললেন। তাঁর গলার সঙ্গে গলা মেলাতে দেখা গেল সকলকে। এক সুরে বাধা গোটা দল আর অদৃশ্য দড়িটা রয়েছে পণ্ডিতের হাতে।

ম্যাচ শেষে মধ্যপ্রদেশ অধিনায়ক আদিত্য শ্রীবাস্তব দলের ব্লেজার পরে মাইক হাতে এলেন। প্রথম বার রঞ্জি জয়ের কৃতিত্ব তিনি দিলেন পণ্ডিতকেই। তাঁকেই দলের অধিনায়ক হিসাবে মেনে নিলেন শ্রীবাস্তব। রঞ্জি ট্রফি হাতে নিয়ে সোজা চলে গেলেন কোচের কাছে। দলের মধ্যমণি তখন পণ্ডিত। কোচ এবং অধিনায়ক সেই ট্রফি হাতে নিয়ে মাঝখানে দাঁড়িয়ে। বার বার চুমু খাচ্ছেন ট্রফিতে।

বহু দিনের না পাওয়াকে অবশেষে হাতে পেলেন যে।

Advertisement
আরও পড়ুন