মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপের পর নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন মহম্মদ শামি। ২৪টি উইকেট নিয়ে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ উইকেট প্রাপক তিনিই। তিনটি ম্যাচে ৫ উইকেট নেন বাংলার জোরে বোলার। তেমনই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নিয়ে মাটিতে বসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। যা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ সমালোচনা করেছিল শামির। ২ নভেম্বরের সেই ম্যাচের ৪১ দিন পর মুখ খুললেন তিনি।
বিশ্বকাপের লিগ ম্যাচে ভারতের ৮ উইকেটে ৩৫৭ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছিল ৫৫ রানে। ভারতের ৩০২ রানের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল শামির। ১৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে একাই শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ধস নামান বাংলার জোরে বোলার। ৫ উইকেট নেওয়ার মাটিতে বসে অনেকটা নমাজ পড়ার আদলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল শামিকে। যা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ সমাজমাধ্যমে তাঁর সমালোচনা করেছিল। তৈরি হয় বিতর্ক।
ঘটনার ৪১ দিন পর এক সাক্ষাৎকারে সমালোচকদের কড়া ভাষায় জবাব দিলেন শামি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি যদি প্রার্থনা করতে চাই, তা হলে কে আমাকে আটকাবে? কাউকে প্রার্থনা করা থেকে বিরত করা যায় না। আমি প্রার্থনা করতে চাইলে অবশ্যই করব। তাতে কার কী সমস্যা? মুসলিম ধর্মাবলম্বী হিসাবে আমি অত্যন্ত গর্বিত। এক জন ভারতীয় হিসাবেও আমি ভীষণ গর্বিত। তাতে কার কী সমস্যা? আমাকে কি প্রার্থনা করার জন্য কারও কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? তেমন হলে এই দেশে কেন থাকব?’’
শামি এখানেই থামেননি। ক্ষোভের সঙ্গে আরও বলেছেন, ‘‘৫ উইকেট নিয়ে আগে কি কখনও নমাজ পড়েছি আমি? অনেক বার ৫ উইকেট নিয়েছি। তা হলে আমাকে বলে দেওয়া হোক কোথায় গিয়ে প্রার্থনা করব? সেখানে গিয়েই প্রার্থনা করব আমি।’’
শামি অবশ্য সমালোচকদের বেশি গুরুত্ব দিতে চান না। কারণ এই ধরনের মানুষের সংখ্যা খুব কম বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর লক্ষ্য মাঠে নেমে সব সময় দেশের জন্য নিজের ২০০ শতাংশ দেওয়া। শামি বলেছেন, ‘‘আসলে এই সব লোকেরা কারও পক্ষে থাকে না। এরা শুধু হইচই করতে চায় কিছু একটা নিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে আমি নিজের ২০০ শতাংশ দিয়ে বল করেছিলাম। ওদের পর পর উইকেট পর ছিল। ৩ উইকেট নেওয়ার পর মনে হয়েছিল, আমাকে অন্তত আরও একটা উইকেট নিতে হবে। মনে হচ্ছিল ৫ উইকেট হয়ে যেতে পারে। তার আগে আমার অনেকগুলো বল ব্যাটারদের ব্যাটের কানার খুব কাছ দিয়ে চলে গিয়েছিল। তাই একটু হতাশ লাগছিল। কিছুটা ক্লান্ত লাগছিল। ৫ উইকেট পাওয়ার পর তাই মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছিলাম। অথচ কিছু মানুষ সেটার অন্য অর্থ তৈরি করল। আমি মনে করি যারা এ সব ভুলভাল ব্যাখ্যা করে, তাদের আসলে কোনও কাজ নেই।’’
বিশ্বকাপের পর শামিকে বিশ্রাম দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচকেরা। জাতীয় দলের হয়ে বাংলার জোরে বোলারকে আবার দেখা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে। আপাতত সে জন্য প্রস্তুত করছেন নিজেকে। তাঁর লক্ষ্য আসন্ন টেস্ট সিরিজ়েও বিশ্বকাপের ফর্ম ধরে রাখা এবং ভারতের জয়ে অবদান রাখা।