মহম্মদ আজহারউদ্দিন। —ফাইল চিত্র।
স্ট্যান্ড-বিতর্ক কমছে না। আবার হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থাকে নিশানা করলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। দেশের হয়ে ৪৩৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা আজহারের অভিযোগ, ইচ্ছা করে তাঁর নামে কালি লাগানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সংস্থা। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের আক্ষেপ, ক্রিকেট খেলে ভুল করেছেন তিনি।
বিতর্কের মাঝে সংবাদমাধ্যমে আজহার বলেন, “বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কখনও কখনও মনে হয়, ক্রিকেট খেলেই ভুল করেছি। এত দিন ধরে দেশে সেবা করেছি। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। তার পরেও আমার নামে কালি লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে ক্রিকেট খেলারই অসম্মান করা হচ্ছে।”
আজহারের অভিযোগ, হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি থাকাকালীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র করা হয়। তিনি বলেন, “আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলাম। তাই আমাকে আর নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না। এ ভাবে সত্যিকে চেপে রাখা যাবে না। হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে তো সানরাইজার্স হায়দরাবাদও অভিযোগ করেছে। সবাই তো মিথ্যা বলতে পারে না। আমার আবেদন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিষয়টা দেখুক।”
কী নিয়ে বিতর্ক?
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজহারের নামে একটি স্ট্যান্ড রয়েছে। সেই স্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি খেলার টিকিট থেকেও আজহারের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থাকে। দ্রুত এই নির্দেশ পালন করতে বলা হয়েছে।
হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার এথিক্স অফিসার ও অম্বুডস্ম্যান বিচারপতি ভি ঈশ্বরাইয়া এই নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি আজহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন লর্ডস ক্রিকেট ক্লাব। হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার অধীনে থাকা ২২৬ সদস্যের মধ্যে এই ক্লাব একটি। তার পরেই সব খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিয়েছেন ঈশ্বরাইয়া।
রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে যখন আজহারের নামে স্ট্যান্ড হয়েছিল, তখন তিনি সেই ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি। যে বৈঠকে এই নামে সিলমোহর পড়েছিল, সেই বৈঠকেরও সভাপতিত্ব করেছিলেন আজহার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, জোর করে নিজের নামে স্ট্যান্ডের নামকরণ করেছেন তিনি। এমনকি, টিকিটে যে তাঁর নাম থাকবে সেটিও তিনিই ঠিক করেছিলেন। ফলে তাঁর নাম সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন আজহার। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। আজহার জানিয়েছেন, এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। সংবাদমাধ্যমে আজহার বলেন, “স্বার্থের সংঘাতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আমি এত নীচে নামতে পারব না। ১৭ বছর ক্রিকেট খেলেছি। ১০ বছর অধিনায়ক ছিলাম। তার পরে আমি এই পেলাম। এ ভাবেই কি হায়দরাবাদে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। সবাই দেখলে হাসবে। আমরা হাই কোর্টে যাব। আদালত ঠিক করে দেবে কী হবে।” তার পরেও আজহারের অভিযোগ থেকে স্পষ্ট, এই বিতর্ক এখানেই থামবে না। তা আরও বাড়বে।