Manoj Tiwary

ব্যাট হাতে আর দেখা যাবে না মনোজকে, ক্রিকেট থেকে অবসর মন্ত্রীমশাইয়ের

ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মনোজ তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তিনি। অর্থাৎ বাংলার হয়েও তাঁকে আর খেলতে দেখা যাবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ১২:৩৯
cricket

মনোজ তিওয়ারি। — ফাইল চিত্র।

ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মনোজ তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তিনি। অর্থাৎ বাংলার হয়েও তাঁকে আর খেলতে দেখা যাবে না। ৩৭ বছর বয়সে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন গত মরসুমে বাংলার অধিনায়ক।

Advertisement

গত মরসুমই যে মনোজের শেষ মরসুম ছিল, সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল। সে কারণেই রঞ্জি ট্রফিতে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে তা স্বীকার করেননি কেউ। মনোজ নিজে খুব খারাপ খেলেননি গোটা মরসুমে। দলও উঠেছিল ফাইনালে। কিন্তু ইডেন গার্ডেন্সে সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরে যায় বাংলা। তার পরে মনোজ জানিয়েছিলেন, আরও একটি মরসুম রঞ্জিতে খেলার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। ট্রফিটা এক বার হাতে ধরতে চান। আচমকাই ক্রিকেটজীবনে দাঁড়ি টেনে দিলেন রাজ্যের ক্রীড়া দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ দিন ইনস্টাগ্রামে মনোজ লিখেছেন, “ক্রিকেট খেলাকে বিদায় জানালাম। এই খেলা আমাকে সব কিছু দিয়েছে। প্রত্যেকটা ছোটখাটো জিনিস যা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। জীবনে বার বার অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ক্রিকেট খেলার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ঈশ্বরের প্রতিও, যিনি বরাবর আমার পাশে থেকেছেন।”

মনোজ আরও লিখেছেন, “যাঁরা আমার এই ক্রিকেটযাত্রায় পাশে থেকেছেন তাঁদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ক্রিকেট জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি তার জন্যে ছোটবেলার কোচ থেকে শুরু করে গত বছরও যার অধীনে খেলেছি, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমার এই যাত্রায় মানবেন্দ্র ঘোষ শুধু কোচই ছিলেন না, আমার বাবার মতোই ছিলেন। উনি না থাকলে আজ ক্রিকেটে এত দূর আসতে পারতাম না। আপনাকে ধন্যবাদ। ইদানীং আপনার শরীর ভাল নেই। তাই দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ বাবা-মাকে। কখনও পড়াশোনার জন্যে অতিরিক্ত চাপ দেননি আমাকে। ক্রিকেট খেলতে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। আমার জীবনে আসার পর থেকে সব সময় পাশে দাঁড়ানোর জন্যে স্ত্রী সুস্মিতাকে ধন্যবাদ।” বাংলা দলের সব সতীর্থ কোচ এবং আজীবন যাঁরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের সবাইকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন মনোজ।

দেশের হয়ে ১২টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন মনোজ। ২৮৭ রান করেছেন। একটি শতরান এবং একটি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। টি-টোয়েন্টিতে তিনটি ম্যাচ খেলে ১৫ রান করেছেন। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স-সহ একাধিক দলে খেলেছেন তিনি। ২০১২ সালে কলকাতা প্রথম আইপিএল জয়ের সময় শেষ ওভারে দু’টি বাউন্ডারি মেরে দলকে জিতিয়েছিলেন মনোজই। সেই দৃশ্য এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভাসে।

২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার পরে নির্বাচকেরা ঝুঁকেছিলেন তরুণদের সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে। অস্ট্রেলিয়ায় এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় মনোজের। আগুনে গতির পেসারদের সে ভাবে সামলাতে পারেননি তিনি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জেরে সেই সময়ে ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বেশ কিছু ম্যাচে। কেউ চোট পেলেই মনোজকে দলে নেওয়া হত।

মনোজের আসল লড়াই ছিল রোহিত শর্মার সঙ্গে। মুম্বইয়ের ব্যাটার অনেক ম্যাচে খারাপ খেললেও তাঁকে ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বাংলার মনোজ কোনও দিনই তা পাননি। ফলে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খুব অল্প সময়ই স্থায়ী হয়েছে। রোহিত কালক্রমে এখন জাতীয় দলের অধিনায়ক। কিন্তু মনোজ কোনও দিনই ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি। ইদানীং ঘরোয়া ক্রিকেটই ছিল তাঁর সম্বল। আইপিএলেও কোনও দল ডাকত না।

বছর কয়েক আগেই রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছিলেন। শিবপুরের বিধায়ক তিনি। রাজ্যের ক্রীড়া দফতরেও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তার মাঝেই খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বার সেই খেলাতেই দাঁড়ি টেনে দিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement