মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দলে ফেরার জন্য মহম্মদ শামিকে শর্ত এবং সময় বেঁধে দিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে বাংলার জোরে বোলারকে দেখা যাবে কি না, তা নির্ভর করবে তাঁর উপরেই। নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে তবেই অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বিমানের টিকিট পাবেন শামি।
বাংলার বোলারের অস্ট্রেলিয়া যাওয়া নির্ভর করবে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে পারফরম্যান্সের উপর। আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় টেস্ট। তার আগে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে শামিকে। বিসিসিআই সূত্রে খবর, শামির ফিটনেসে খুশি নন বোর্ড কর্তাদের একাংশ এবং জাতীয় নির্বাচকেরা। লম্বা স্পেলে বল করতে তাঁর সমস্যা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ওজন কমিয়ে ফিটনেস বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে শামিকে। বোর্ডের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিমের উপর যখন আর শামিকে একটুও নির্ভর করতে হবে না, তখনই দলে ফিরতে পারে। ওকে প্রতিটা স্পেলের পর মেডিক্যাল টিমের সাহায্য নিতে হচ্ছে এখন।’’
দীর্ঘ দিন ম্যাচের মধ্যে না থাকায় শামির ওজন কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই বোর্ড কর্তা বলেছেন, ‘‘খেলতে শুরু করেছে শামি। ধীরে হলেও ওর শরীরে ওজন কমতে শুরু করেছে। মেডিক্যাল টিমের সদস্যেরা মনে করছেন, খেলতে খেলতে সম্পূর্ণ ফিটনেস ফিরে পাবে শামি। রঞ্জি ট্রফির প্রথম পর্বের পর সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির ম্যাচগুলোয় শামির উপর নজর রয়েছে আমাদের।’’
বাংলার হয়ে খেললেও শামির সব কিছু দেখভাল করছেন বিসিসিআইয়ের ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান নিতিন পটেল এবং জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ট্রেনার নিশান্ত বোরদোলোই। ২৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি। ফিটনেস প্রমাণ করার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে শামিকে। অর্থাৎ, ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফিটনেস প্রমাণ করতে না পারলে শামির বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি খেলা হবে না। আর পারলে তৃতীয় টেস্টের আগে তাঁকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হতে পারে।
তার পরেও প্রশ্ন থাকছে শামির নির্বাচন নিয়ে। বোর্ডের ওই কর্তা বলেছেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দু’ওভারের স্পেল দিয়ে কিছু বিচার করা যায় না। টেস্ট ম্যাচে টানা বল করা আলাদা ব্যাপার। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ভাল পারফর্ম করলে ওকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হতে পারে। ওখানে ভারতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলনের সুযোগ পাবে। টেস্ট খেলবে কি না, এখনই বলা সম্ভব নয়। নির্বাচকেরা শামিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওকে প্রয়োজন।’’ শামিকে তাড়াহুড়ো করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাতে চাইছেন না বোর্ড কর্তাদের একাংশ। পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পক্ষে তাঁরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেরা ফর্মে শামিকে দেখতে চান তাঁরা।
চোটের জন্য প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ছিলেন শামি। গত ১৩ নভেম্বর বাংলার হয়ে রঞ্জির ট্রফির ম্যাচে মাঠে ফেরেন। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, শামিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হবে। শামি যোগ দিলে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ভারতের বোলিং আরও শক্তিশালী হবে। কিন্তু সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে শামির পারফরম্যান্সে হতাশ জাতীয় নির্বাচকেরা। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ৪৬ রানে ১ উইকেট নেন। দ্বিতীয় ম্যাচে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ২১ রানে ৩ উইকেট নেন। আবার তৃতীয় ম্যাচে মিজ়োরামের বিরুদ্ধে ৪৬ রান দিয়েও উইকেট পাননি। চোট সারিয়ে ফেরা শামি ধারাবাহিকতার অভাব স্পষ্ট। যা ভাবাচ্ছে অজিত আগরকরদেরও।