ইতিহাস মহিলা দলের। ছবি পিটিআই
জটায়ু বেঁচে থাকলে নির্ঘাৎ লিখতেন ‘বার্মিংহামে বাজিমাত’। লাভলি চৌবে, রূপা রানি তিরকে, পিঙ্কি এবং নয়নমণি সইকিয়া মঙ্গলবার কমনওয়েলথ গেমসে যা করে দেখালেন, সেই কাহিনির এর চেয়ে লাগসই নাম আর হয় না।
ইতিহাস তৈরি হল কমনওয়েলথ গেমসে। লন বোলে সোনা জিতল ভারত। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭-১০ পয়েন্টে হারাল তারা। কমনওয়েলথে এর আগে লন বোলে কোনও দিন পদক আসেনি। চতুর্থ স্থানই এত দিন সেরা ফল ছিল। সেই পরিসংখ্যান ধুয়েমুছে গেল মঙ্গলবার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই ভাল খেলতে থাকে ভারত। এক সময় এগিয়ে যায় ৮-২ পয়েন্টে। এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সমতা ফেরায় তো বটেই। তারা এগিয়ে যায় ১০-৮ পয়েন্টে। এর পর ভারতের ঘুরে দাঁড়ানো শুরু। ১৪ রাউন্ডের শেষে ১৫-১০ এগিয়ে যায় ভারত। শেষ রাউন্ডেও দুই পয়েন্ট পায় ভারত।
সোমবারই লন বোলের ফাইনালে উঠে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন লাভলিরা। সাধারণ ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা অনেকেই জানেন না এই খেলাটি কমনওয়েলথ গেমসে রয়েছে। সেই অখ্যাত খেলাতেই এ বার বাজিমাত। লাভলি আগের দিনই জানিয়েছিলেন, এই খেলায় না আছে অর্থ, না আছে প্রাপ্য সম্মান। আন্তর্জাতিক কোনও প্রতিযোগিতায় খেলতে গেলে নিজেদের টাকা খরচ করে যেতে হয়। কমনওয়েলথে সংস্থার তরফে খরচ দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবে এর আগে যখন তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, তখন কটাক্ষও শুনতে হয়েছে।
লন বোল দলের নেতা হলেন লাভলি। ৩৮ বছরের এই খেলোয়াড় ঝাড়খণ্ড পুলিশে কর্মরত। রূপা থাকেন রাঁচীতে। ক্রীড়া বিভাগের সঙ্গে যুক্ত। দিল্লির মেয়ে পিঙ্কি আরকে পুরমের একটি স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক। নয়নমণি অসমের বনবিভাগে কাজ করেন।
ফাইনালে উঠে লাভলি বলেছিলেন, “আমাদের কাছে এই প্রতিযোগিতা অলিম্পিক্সের সমান। কারণ অলিম্পিক্সে এই প্রতিযোগিতা নেই। চার বছর আগে এক পয়েন্টের জন্য পদক হারিয়েছিলাম। এ বছর ইতিহাস তৈরি করলাম। আশা করি এ বার স্বীকৃতি মিলবে।” লাভলি এক সময় ১০০ মিটারের স্প্রিন্টার ছিলেন। নয়নমণি ছিলেন ভারোত্তোলক। নিজেদের খেলায় চোট পাওয়ায় দু’জনেই লন বোল বেছে নেন।