(বাঁ দিকে) সুনীতা উইলিয়াম্স। তাঁর তৈরি রোবট (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকে রয়েছেন নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়াম্স। সঙ্গী সহযাত্রী বুচ উইলমোর। তবে কেউই বসে নেই। চলছে নানা গবেষণার কাজ। সম্প্রতি একটি রোবটও বানাচ্ছেন দু’জনে, যা সংগ্রহ করবে মহাকাশে বিকল হয়ে যাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষ!
নতুন এই রোবটিক সিস্টেমের নাম ‘অ্যাস্ট্রোবি’। গেকো-র ধাঁচে অনেকগুলি আঠালো প্যাডের সমন্বয়ে এই রোবটটি তৈরি। মাকড়সার পায়ের মতো তিনটি ‘হাত’ রয়েছে এই অ্যাস্ট্রোবি-র। নকশার বিশেষত্বের জন্যই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’-র পরিবেশেও সচল থাকতে পারে অ্যাস্ট্রোবি। ভবিষ্যতে মহাকাশে বিভিন্ন গ্রহের কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করাই হবে এই তিন ‘হাত’ওয়ালা রোবটের কাজ!
শুধু রোবট-তৈরিই নয়, পাশাপাশি লাল রঙের রোমেইন লেটুসেরও চাষ করছেন সুনীতা-বুচ! তবে খাওয়ার জন্য নয়, বরং গবেষণার স্বার্থেই এই লেটুস চাষ। এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হল, গাছকে কতটা জল দেওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে কী ভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পুষ্টি প্রভাবিত হয়, তা দেখা। এই গবেষণা সফল হলে অদূর ভবিষ্যতে দীর্ঘায়িত মহাকাশ অভিযানগুলির ক্ষেত্রে খাবারের সমস্যা মেটানো যাবে। পাশাপাশি, এক বার মহাকাশের মতো প্রতিকূল পরিবেশে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ জলে ফসল ফলানো গেলে পৃথিবীর খরাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতেও সহজে ফসল ফলানোর রাস্তা মিলতে পারে।
প্রসঙ্গত, পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে মহকাশেই রয়েছেন সুনীতা ও বুচ। মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে চড়ে গত ৫ জুন নাসার ওই দুই নভশ্চর পাড়ি দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে। শুরুতে কথা ছিল, দিন কয়েক পরেই ফিরছেন সুনীতারা। কিন্তু আচমকা মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এর পরেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে সুনীতাদের ফেরা। আপাতত দুই নভশ্চরকে ফেরাতে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বরেই স্পেসএক্সের যানটি নিয়ে সুনীতাদের কাছে পৌঁছেছেন নাসার নিক হেগ ও রুশ কসমোনট আলেকজ়ান্দের গর্বোনভ। সামনের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সুনীতাদের নিয়ে ফিরবেন তাঁরা।