মহাকাশে নাসার সাফল্য। ছবি: টুইটার
মহাকাশে ঘুরতে থাকা বিশাল এক গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়েছে নাসার মহাকাশযান ‘ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট’, সংক্ষেপে ‘ডার্ট’। পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা যে কোনও মহাজাগতিক বস্তুর হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে এই মহাকাশযানটি বানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তার সফল পরীক্ষা হল মঙ্গলবার রাতে।
নাসার ‘ডার্ট’ যে গ্রহাণুটিকে ধাক্কা মেরেছে, তার নাম ডাইমরফোস। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৫২৫ ফুট চওড়া এই গ্রহাণু আকারে আস্ত একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের মতো। মহাকাশে প্রায়ই এমন গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে। কখনও কখনও নীল গ্রহের একেবারে কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায় সেগুলি। যে কোনও মুহূর্তে এই সব মহাজাগতিক বস্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে। তা এড়াতেই ‘ডার্ট’ বানিয়েছেন নাসার গবেষকরা।
IMPACT SUCCESS! Watch from #DARTMIssion’s DRACO Camera, as the vending machine-sized spacecraft successfully collides with asteroid Dimorphos, which is the size of a football stadium and poses no threat to Earth. pic.twitter.com/7bXipPkjWD
— NASA (@NASA) September 26, 2022
জানা গিয়েছে, এই ডাইমরফোস থেকে আপাত ভাবে পৃথিবীর কোনও বিপদের সম্ভাবনা ছিল না। তার উপর কেবল পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে ‘ডার্ট’। এটি পৃথিবী থেকে এক কোটি ১০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ডাইমরফোস প্রদক্ষিণ করছে ডিডাইমোস নামের আরও বড় একটি গ্রহাণুকে। সেটি ২৫০০ ফুট চওড়া। দু’টি গ্রহাণুই পৃথিবীর নিকটবর্তী মহাজাগতিক বস্তু হিসাবে বিবেচিত হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রায় ছয় কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এসেছিল রাক্ষুসে এক গ্রহাণু। পৃথিবীকে সজোরে ধাক্কা মেরেছিল সেটি। প্রবল সংঘর্ষে কেঁপে উঠেছিল নীল গ্রহ। সেই মহাজাগতিক প্রলয়কাণ্ডেই পৃথিবীর বুক থেকে ডাইনোসর নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। ডাইমরফোসের উপর ‘ডার্ট’-এর সফল প্রয়োগে এত দিনে সেই ডাইনোসরদের ‘বদলা’ নেওয়া হল, বলছেন কেউ কেউ। নাসার ‘ডার্ট’ ভবিষ্যতেও এমন বিপদ থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে পারবে বলে আশাবাদী তাঁরা।