চাঁদের পথে জাক্সার মহাকাশযান। —ফাইল চিত্র।
চাঁদের মাটিতে সাফল্য পেল আরও এক দেশ। ভারতের পর পঞ্চম দেশ হিসাবে চাঁদে পা রাখল জাপান। পঞ্চম স্থানটিও রইল এশিয়ার দখলেই। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো গত ২৩ অগস্ট চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে নামিয়েছিল। পাঁচ মাসের মধ্যে চন্দ্র অভিযানে সাফল্য পেল জাপান। তবে সাফল্য পেলেও তার সঙ্গে ব্যর্থতার সামান্য ছাপও থেকে গেল।
জাপানের চন্দ্র অভিযান মসৃণ হয়নি। তারা চাঁদের মাটি ছুঁলেও যা করতে চেয়েছিল, তা এখনও পারেনি। আদৌ জাপানের মূল উদ্দেশ্য সফল হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জাপানের মহাকাশযান ‘স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন’ (স্লিম)-এ সৌরশক্তি পৌঁছচ্ছে না। চাঁদের মাটিতে কাজ করার জন্য সৌরশক্তিই ভরসা। জাপানি ল্যান্ডারটিতে সেই সৌরশক্তি ব্যবহারকারী যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে তা ঠিক করা প্রয়োজন। না হলে চন্দ্রাভিযান ব্যর্থ হবে।
জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা অবশ্য জানিয়েছে, সৌরশক্তির অভাবে চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য অনুসন্ধান করতে না পারলেও তাদের অভিযানকে সফলই ধরা হবে। কারণ চাঁদের মাটিতে তারা সফল ভাবেই মহাকাশযান নামিয়েছে। পরবর্তী কাজকর্ম যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভেস্তে গেলেও বিশ্বে পঞ্চম দেশ হিসাবে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার গরিমা ম্লান হবে না।
এই মুহূর্তে জাপানের চন্দ্রযানটিতে যে সৌরশক্তি রয়েছে, তাতে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ চলবে। তার মধ্যে ত্রুটি শুধরে নেওয়া না গেলে থমকে যাবে চাঁদে জাপানি অভিযান।
সৌরশক্তি ব্যবহারকারী যন্ত্রে কেন গোলযোগ দেখা দিল, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অনুসন্ধান চলছে। আপাতত ব্যাটারির শক্তিতে চলছে জাপানের ‘স্লিম’। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্যাটারি ফুরিয়ে যাবে। সেই সময়ের মধ্যে চাঁদের মাটি থেকে কিছু ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
গত অগস্টে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে পা রেখেছিল। পাখির পালকের মতো অবতরণের পর বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে এসেছিল রোভার প্রজ্ঞান। এক চন্দ্রদিবস ধরে সে চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেরিয়েছে এবং নানা তথ্য সংগ্রহ করেছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ভারতই প্রথম দেশ হিসাবে পৌঁছতে পেরেছে। এখনও পর্যন্ত এই কৃতিত্ব আর কারও নেই।