—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
চন্দ্রযানের সাফল্যের পর থেকেই দিন গুনছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। সূর্যের কাছে কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছে ভারতের সৌরযান। বাকি আর সামান্য পথ। তার পরেই সূর্যের কাছে এল১ পয়েন্টে পৌঁছে যাবে আদিত্য-এল১। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো সেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। সামনে তাঁদের অগ্নিপরীক্ষা।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আগামী শনিবার ৬ জানুয়ারি এল১ পয়েন্টে পৌঁছনোর কথা ইসরোর সৌরযানটির। তবে সেখানে পৌঁছলে ইসরোকে একটি কাজ করতে হবে। সেই কাজে সামান্য ভুল হলেই হতে পারে বড়সড় বিপদ। এত দিনের সব পরিশ্রম মাটি হয়ে যেতে পারে এক মুহূর্তে।
সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝে ল্যাগারেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্ট আদিত্য-এল১-এর গন্তব্য। ওই পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবী উভয়েরই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব সমান থাকে। সেখানে পৌঁছে সূর্যকে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে ইসরোর সৌরযান। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে জানা যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, আদিত্য-এল১-এর যাত্রার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সূক্ষ্ম ধাপ অপেক্ষা করে আছে এল১ পয়েন্টে। সেখানে পৌঁছলে ইসরোকে ‘ফায়ার’ করতে হবে। অর্থাৎ সৌরযানটিকে ধাক্কা দিতে হবে। তবে তা অত্যন্ত সাবধানে এবং মেপে মেপে। পরিমাপে এক চুল গোলমাল হলেই বিজ্ঞানীদের নিয়ন্ত্রণ ছাড়িয়ে বেরিয়ে যেতে পারে আদিত্য-এল১। সে ক্ষেত্রে সূর্যের দিকে আরও এগিয়ে যাবে সৌরযানটি। একসময় তা ধ্বংস হয়ে যাবে। ইসরোর আর কিছুই করার থাকবে না।
শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ওই শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত ‘ফায়ার’ করবে ইসরো। সেটাই এখন তাদের ‘অগ্নিপরীক্ষা’। মাপ অনুযায়ী সঠিক ধাক্কা দিয়ে সৌরযানটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে বসিয়ে দেবেন বিজ্ঞানীরা। তার পর শুরু হবে তার পেলোডগুলির কাজ।
গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল আদিত্য-এল১। তার পর পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে তার চারপাশেই পাক খাচ্ছিল সৌরযানটি। পৃথিবীর কাছে মোট পাঁচটি কক্ষপথ বদলের পর অবশেষে টান কাটিয়ে বেরিয়ে যায় সেটি। তার পর এত দিন সূর্যের দিকে নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে চলেছিল আদিত্য-এল১। পথে কোনও বাধা আসেনি। সূর্যের নানা রকম ছবি তুলে পাঠিয়েছে সৌরযানটি।