সূর্যের বর্হিপৃষ্ঠ ঘিরে এই অতি উজ্জ্বল ‘ঘূর্ণিঝড়’ ঘুরছে বলে জানিয়েছে নাসা। ছবি: সংগৃহীত।
সূর্যের ভূপৃষ্ঠ থেকে একটি বিশাল অংশ ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে গিয়ে তার উত্তর মেরুর চারপাশে ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় বিস্মিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কী কারণে এমন হল, তা বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছেন তাঁরা।
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা নাসা-র জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে গত সপ্তাহে এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে টুইট করেছেন ট্যামিথা স্কোভ। মহাকাশের আবহাওয়া নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়াই তাঁর পেশা। সূর্যের গা থেকে রশ্মির বিকিরণের ফলে অনেক সময়ই পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়। সাম্প্রতিক এই মহাজাগতিক ঘটনায় পৃথিবীর উপরে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহল বেড়েছে। নিজের টুইটে ট্যামিথা লিখেছেন, ‘‘একেই বলে ‘পোলার ভর্টেক্স’! সূর্যের উত্তর মেরুর প্রধান ফিলামেন্ট থেকে একটা বড়সড় অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এবং ওই জায়গায় একটি ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ স্থানটি যে স্থির নয়, বরং ঘূর্ণায়মান, তা-ও জানিয়েছেন ট্যামিথা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর দুই মেরুস্থানেই একটি বিশাল জায়গা জুড়ে নিম্নচাপ রয়েছে। সাধারণ ভাবে বললে, ঠান্ডা হাওয়া ঘড়ির উল্টো দিকে ঘূর্ণন করলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে ‘পোলার ভর্টেক্স’ বলা হয়। সাধারণত, গ্রীষ্মকালে এটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে শীতে এর শক্তি বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনায় হতবাক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বহু দশক ধরে সূর্যের পর্যবেক্ষণ করছেন আমেরিকার ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমস্ফেরিক রিসার্চ’-এর সৌর-পদার্থবিদ স্কট ম্যাকইনটশ। ‘স্পেস ডট কম’ নামে একটি সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, এ ধরনের দৃশ্য তিনি কখনও দেখেননি।
Talk about Polar Vortex! Material from a northern prominence just broke away from the main filament & is now circulating in a massive polar vortex around the north pole of our Star. Implications for understanding the Sun's atmospheric dynamics above 55° here cannot be overstated! pic.twitter.com/1SKhunaXvP
— Dr. Tamitha Skov (@TamithaSkov) February 2, 2023
নাসা জানিয়েছে, সূর্যের বর্হিপৃষ্ঠ ঘিরে এই অতি উজ্জ্বল ‘ঘূর্ণিঝড়’ ঘুরছে। যদিও এ নিয়ে আরও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই মহাজাগতিক ঘটনাকে ‘সোলার পোলার ভর্টেক্স’ আখ্যা দিয়েছেন ট্যামিথা। অন্য একটি টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘‘সোলার পোলার ভর্টেক্স’-এর আরও পর্যবেক্ষণের পর জানা গিয়েছে যে, ওই (ঝড়ের মতো) উপাদানটি সূর্যের উত্তর মেরুর প্রায় ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ প্রদক্ষিণ করতে প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় নিয়েছে। এর অর্থ, এ ক্ষেত্রে অনুভূমিক হাওয়ার গতি মোটামুটি ভাবে প্রতি সেকেন্ডে ৯৬ কিলোমিটার।’’