শুটিংয়ের সেটে কাটত অধিকাংশ সময়। সেই শুটিং সেটকেই জীবনের শেষ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার স্থান হিসাবে বেছে নিলেন অভিনেত্রী তুনিশা শর্মা? সেটেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর দেহ।
শনিবার বিকেলে তুনিশার মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্র স্তব্ধ টেলিভিশন দুনিয়া। হিন্দি ছোট পর্দায় দাপিয়ে কাজ করছিলেন তিনি। ছিলেন সকলের চোখের মণি।
কেন অকালে চলে গেলেন ২০ বছরের তুনিশা? উঠছে নানা প্রশ্ন। একটি ধারাবাহিকের শুটিং সেটের সাজঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তুনিশাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শুধু ধারাবাহিক নয়, একাধিক হিন্দি ছবিতেও কাজ করতে দেখা গিয়েছে তুনিশাকে। বি-টাউনের উঠতি তারকা তিনি। কাজ করেছেন ক্যাটরিনা কইফ, সলমন খানদের সঙ্গেও।
‘ফিতুর’ এবং ‘বার বার দেখো’ ছবি দু'টিতে কাজ করেছেন তুনিশা। উভয় ক্ষেত্রেই তাঁকে দেখা গিয়েছে ক্যাটরিনার ছোটবেলার অবতারে। এ ছাড়া, তুনিশা কাজ করেছেন ‘দবাং ৩’ এবং ‘কহানি ২’ ছবিতেও।
হিন্দি টেলিভিশনের দুনিয়ায় তুনিশার হাতেখড়ি ২০১৫ সালে। ‘মহারানা প্রতাপ’ ধারাবাহিকে চাঁদ কাঁওয়ারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া, ‘চক্রবর্তী অশোক সম্রাট’ ধারাবাহিকে রাজকুমারী অহংকারার চরিত্রে জনপ্রিয়তা পান।
২০১৬ সালে বলিউডে অভিষেক হয় তুনিশার। অনেকে বলেন, তাঁর সঙ্গে ক্যাটরিনার মুখের মিল রয়েছে। ‘ফিতুর’ ছবিতে তাঁর ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছিলেন তুনিশা।
এর পর থেকে একাধিক হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে তুনিশাকে। টেলি দুনিয়ায় তাঁর কাজ যথেষ্ট প্রশংসা পায়। সম্প্রতি ‘আলিবাবা: দাস্তান-ই-কাবুল’ ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
জনপ্রিয় এক হিন্দি চ্যানেলে তুনিশার বিপরীতে এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেন শীজ়ান মহম্মদ খান। যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই ধারাবাহিক।
সমাজমাধ্যমেও তুনিশার জনপ্রিয়তা কম নয়। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি। প্রায়ই নানা পোস্টের মাধ্যমে অনুরাগীদের মনোরঞ্জন করতেন তুনিশা।
কেরিয়ার যখন মধ্যগগনে, তখন তাঁর আচমকা মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না অনুরাগীরা। মৃত্যুর কারণ নিয়েও থেকে যাচ্ছে একরাশ ধোঁয়াশা।
তুনিশার ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, অভিনেত্রী ছিলেন অত্যন্ত হাসিখুশি। তাঁর কোনও কথায় কখনও মানসিক অবসাদের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তিনি যে এ ভাবে চলে যাবেন, ভাবতেও পারেননি কেউ।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও তুনিশার ইনস্টাগ্রামে ছিল ইতিবাচক ছোঁয়া। নিজের একটি ছবির সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘যাঁরা প্যাশন দ্বারা চালিত হন, তাঁদের কখনও থামানো যায় না।’’ ৭ ঘণ্টা আগে এটাই তুনিশার শেষ পোস্ট।
শেষ পোস্টে কী বার্তা দিতে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী? নানা জনে তার নানা অর্থ করছেন। কোনও অদৃশ্য রশির টানে কি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছিলেন তুনিশা? উঠেছে সেই প্রশ্নও।
মাত্র ২০ বছর বয়সে তুনিশার মৃত্যু বিনোদন জগৎকে আরও এক বার থমকে দিয়ে গেল। কেরিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে মরতে হল? উত্তর খুঁজছেন অনুরাগীরা।
ছবি: সংগৃহীত।