পরমাণু-চালিত ডুবোজাহাজকে (সাবমেরিন) বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এবং শক্তিশালী নৌযান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এর কারণ ডুবোজাহাজগুলির উচ্চ গতি এবং শত্রুদেশের নজর এড়িয়ে গোপনে যাতায়াত করার ক্ষমতা। পাশাপাশি জ্বালানি ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে জলের তলায় ডুবে থাকতে পারে ডুবোজাহাজগুলি।
বর্তমানে বিশ্বের ছ’টি দেশের নৌ হরের কাছে পরমাণুশক্তি চালিত ডুবোজাহাজ রয়েছে। সেই দেশগুলি হল, আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং ভারত।
এই তালিকায় নাম জুড়তে চলেছে সপ্তম দেশের। সেই দেশ হল অস্ট্রেলিয়া। সূত্রের খবর, অস্ট্রেলিয়া খুব শীঘ্রই নিজেদের হাতে পেতে চলেছেন পরমাণুশক্তিচালিত ডুবোজাহাজ।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যেই আমেরিকা, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চুক্তি হয়েছে। আর সেই চুক্তির ভিত্তিতেই পরমাণুশক্তিচালিত ডুবোজাহাজ পেতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন দেশের হাতে কতগুলি পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ রয়েছে।
এই তালিকায় প্রথমেই নাম আসে আমেরিকার। আমেরিকার হাতে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক পারমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ রয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকার নৌসেনার কাছে মোট ৬৭টি পারমাণবিক ডুবোজাহাজ রয়েছে।
আমেরিকার পরেই নাম রয়েছে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ রাশিয়ার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ায় মোট ৩১টি পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি নিজেদের নৌশক্তি বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পুতিনের দেশ। আর সেই কারণেই তারা ডুবোজাহাজ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। বর্তমানে পারমাণবিক ডুবোজাহাজের সংখ্যার দিক থেকে রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
আমেরিকা এবং রাশিয়ার পর এই তালিকায় নাম রয়েছে চিনের। চিনের নৌবাহিনীতে পরমাণুশক্তিতে চলা ডুবোজাহাজের সংখ্যা ১২।
পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ব্রিটেন। ব্রিটেনে পরমাণুশক্তিতে চলা ডুবোজাহাজের সংখ্যা ১০।
উল্লেখযোগ্য ভাবে ইমানুয়েল মাকরঁর ফ্রান্সের কাছে রয়েছে মোট ন’টি পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ। অর্থাৎ, এই দিক থেকেই ব্রিটেনের একদম ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে সেই দেশ।
তৃতীয় বিশ্বের দেশ হয়েও তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ভারত। তবে ভারতের কাছে রয়েছে মাত্র একটি পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ।
ভারত নিজেদের নৌবহরের পরিধি এবং ডুবোজাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টায় রয়েছে বলে সূত্রের খবর। ভারতের পর এই তালিকায় আর কোনও দেশ নেই।
সব ঠিক থাকলে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সঙ্গে করা চুক্তির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হাতে পাঁচটি ডুবোজাহাজ আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সামরিক অস্ত্রের ইতিহাসে বিবর্তন আসার পর থেকে বিশ্বের সব দেশ নিজেদের শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে। জলপথে শত্রুদের ঠেকাতে নৌশক্তি বৃদ্ধি করার দিকেও মন দিয়েছে অনেক দেশ। আর সেই শক্তি বৃদ্ধি করতেই একের পর এক পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের সংখ্যা বাড়াচ্ছে দেশগুলি।