নগদে লেনদেন ছেড়ে এখন অনলাইন লেনদেনে স্বচ্ছন্দ অনেকেই। তবে ইউপিআই-এর মাধ্যমে লেনদেনে খরচ বাড়ছে বলে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ফাইল চিত্র।
তবে খরচটা ক্রেতার না বিক্রেতার, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সবটাই আপাতত প্রস্তাবের স্তরে রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
ফাইল চিত্র।
জিপে, ফোন পে কিংবা অন্য কোনও সংস্থার মাধ্যমে অনলাইনে টাকা লেনদেন করলে নতুন অর্থবর্ষের প্রথম দিন থেকেই গুনতে হতে পারে অতিরিক্ত অর্থ।
অনলাইন টাকা লেনদেন সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া’ (এনপিসিআই) যে নয়া বিধি আনতে চলেছে, তাতে বলা হয়েছে, ২০০০ বা তার বেশি টাকা লেনদেন করবেন যাঁরা, তাঁদেরই শুল্কবাবদ এই অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে।
টাকার পরিমাণের উপর শুল্কের পরিমাণ নির্ধারিত হবে। লেনদেন হওয়া অর্থের উপর ১.১ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্য হবে। আগামী ১ এপ্রিল থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হতে পারে।
তবে যাঁরা অনলাইনে এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান, তাঁদের কোনও অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে না।
মূলত যে সমস্ত ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অনলাইন মাধ্যমে টাকা নেন, তাঁদেরই শুল্ক বাবদ অতিরিক্ত টাকা গুনতে হবে।
মার্চেন্ট ইউপিআই-এর মাধ্যমে যাঁরা টাকা লেনদেন করেন, তাঁরা গ্রাহক কিংবা ক্রেতার কাছে এই আর্থিক দায়ভার চাপাবেন কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে গ্রাহক কিংবা ক্রেতা, নয়া এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সামগ্রিক ভাবে সবার উপরেই পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নয়া এই বিধি ঘিরে বিতর্ক এবং বিভ্রান্তি দেখা দেওয়ায় এনপিসিআই-এর তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সাধারণ গ্রাহকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। নয়া বিধি কেবল প্রযুক্ত হবে মার্চেন্ট ইউপিআইয়ের ক্ষেত্রেই।
তবে সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, টেলিকম, শিক্ষা, পোস্ট অফিস ইত্যাদি ক্ষেত্রে লেনদেন হলে শুল্কের হার হবে ০.৭ শতাংশ। সুপারমার্কেটে বিকিকিনির ক্ষেত্রে এই হার হবে ০.৯ শতাংশ।
বিমা, রেল ইত্যাদি ক্ষেত্রে লেনদেনের ক্ষেত্রে শুল্কের হার দাঁড়াবে ১ শতাংশ। কৃষি, জ্বালানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে শুল্কের হার হবে ০.৫ শতাংশ।
এনপিসিআই-এর তরফে বলা হয়েছে, ইউপিআই-এর মাধ্যমে যে সব ব্যবসায়ী প্রিপেড পেমেন্ট ইনস্ট্রুমেন্ট (পিপিআই) করে থাকেন, তাঁরা মোটা টাকা লেনদেন করলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থা কিংবা ব্যাঙ্ক কোনও টাকা পায় না।
এই সমস্যা সমাধানের জন্যই এই ধরনের ব্যবসায়িক লেনদেন ২০০০ টাকা বা তার বেশি হলে শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, যিনি এই পরিমাণ অর্থ নেবেন, তাঁকেই পূর্বনির্ধারিত হারে শুল্ক দিতে হবে।
নয়া ব্যবস্থার সুবিধা, অসুবিধাগুলি কী কী এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ কতটা লাভবান হল, তা এনপিসিআই কর্তৃপক্ষ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর খতিয়ে দেখবেন।
ইউপিআই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বীকৃত এমন এক নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা, যাতে এক ব্যক্তি যে কোনও প্রান্ত থেকে অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারেন। গোটা ব্যবস্থাটি মোটের উপর সুরক্ষিত হওয়ায় বহু মানুষ নয়া এই ব্যবস্থায় শামিল হয়েছেন। সরকারের তরফেও বার বার এই ব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।