Mahua Moitra

আমার বয়স ৪৯, আগামী ৩০ বছর সংসদের ভিতরে এবং বাইরে লড়ব: মহুয়া মৈত্র

বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল দুর্গাপুজোর আগে আগে, ১৫ অক্টোবর। তার পর সেই বিতর্ক নিয়ে রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতিতে কম জলঘোলা হয়নি। সেই ‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ নিয়ে শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজই হল লোকসভায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:২৪
০১ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল দুর্গাপুজোর আগে আগে, ১৫ অক্টোবর। তার পর সেই বিতর্ক নিয়ে রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতিতে কম জলঘোলা হয়নি। ‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ ঘিরে বিতর্কের জেরে শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজই হল লোকসভায়। ভোটাভুটিতে পাশ হল সরকার পক্ষের বহিষ্কারের প্রস্তাব। বহিষ্কারের পর মহুয়া বললেন, ‘‘আমার বয়স ৪৯, আগামী ৩০ বছর সংসদের ভিতরে এবং বাইরে লড়ব।’’

০২ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

পুজোর ঠিক আগে আগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে সংসদে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ তোলার অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপহার এবং নগদ টাকা নিয়ে সংসদে আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ জানিয়ে পৃথক ভাবে সিবিআই প্রধানকে চিঠি লেখেন মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। তার পর থেকে এই বিতর্ক রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

০৩ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে অর্থ-উপহারের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে চিঠি পাঠান বিজেপি সাংসদ দুবে। সেই চিঠিতে অবিলম্বে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করা হয়। তাঁর সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়ারও আবেদন করা হয়।

Advertisement
০৪ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

বিজেপি সাংসদের বক্তব্য ছিল, হীরানন্দানির কাছ থেকে ‘ঘুষ’ নিয়ে সংসদে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জুড়ে দিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। একই সঙ্গে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দেন আইনজীবী দেহাদ্রাই।

০৫ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মহুয়া। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের দাবি ছিল, বিজেপি সাংসদ এবং প্রাক্তন বান্ধবের তোলা অভিযোগ মিথ্যা। ২০২১ সালেও মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলেছিলেন দুবে। এনেছিলেন স্বাধিকারভঙ্গের অভিযোগও। নেপথ্যে ছিল দুবের ‘হলফনামা’। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা আসনের সাংসদ দুবের তরফে লোকসভা নির্বাচনের সময়ে জমা দেওয়া হলফনামায় যে শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া।

Advertisement
০৬ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়াকে নিয়ে বিতর্ক যখন দানা বাঁধতে শুরু করেছে, তখনই বিবৃতি দেয় আদানি গোষ্ঠী। বলা হয়, তাদের ‘নাম, সুখ্যাতি এবং বাজারের অবস্থান’ নষ্ট করতে ‘অনেকে বাড়তি কাজ করছেন’।

০৭ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কতটা সত্যি, তা খুঁজে বার করতে লোকসভার স্পিকার এথিক্স কমিটিকে দায়িত্ব দেন বিষয়টি খতিয়ে দেখার। তার মধ্যেই মহুয়ার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ দুবে। প্রত্যেক সাংসদের একটি করে লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড রয়েছে। লোকসভার সচিবালয়ে কিছু জানাতে গেলে তার মাধ্যমে জানাতে হয়। দুবের অভিযোগ ছিল, মহুয়া তাঁর লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ব্যবসায়ী দুবাইয়ে বসে প্রশ্ন লিখে দিতেন। যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ।

Advertisement
০৮ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পরই প্রকাশ্যে আসে দুবাইয়ের ব্যবসায়ী হীরানন্দানির ‘হলফনামা’। স্বীকার করে নেওয়া হয়, তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তুলিয়েছিলেন। মহুয়া তাঁকে সংসদের লগ ইন আইডি দিয়েছিলেন বলেও স্বীকার করেন হীরানন্দানি। মহুয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপহার নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতেও মান্যতা দেওয়া হয় হীরানন্দানির ‘হলফনামা’য়। মহুয়ার অবশ্য দাবি ছিল, হীরানন্দানিকে জোর করে এই হলফনামা লেখানো হয়েছে। গোপন নথি কী ভাবে প্রকাশ্যে এল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মহুয়া।

০৯ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়া ২০ অক্টোবর জানান, সিবিআই বা সংসদের এথিক্স কমিটি (যেখানে বিজেপির নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা রয়েছে) যদি ডাকে, তাদের জবাব দেবেন।

১০ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রথমে মুখ খোলেন এথিক্স কমিটির প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকরও। তিনি বলেন, ‘‘সংদের লগ ইন আইডি সাংসদ বাদ দিয়ে অন্য কারও ব্যবহার করা গুরুতর অপরাধ। যে অভিযোগ উঠেছে, তা সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’’ এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানের সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা নিয়ে সরব হন মহুয়া।

১১ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আবার নতুন অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ দুবে। তাঁর দাবি ছিল, মহুয়া যখন ভারতে, তখন দুবাই থেকে তাঁর সংসদ আইডিতে লগ ইন করা হয়েছে। এতে বিঘ্নিত হয়েছে গোটা দেশের নিরাপত্তা।

১২ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে লোকপালকেও চিঠি দেন বিজেপি সাংসদ দুবে। দাবি করেন, কবে এবং কোথায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ ‘ঘুষ’ নিয়েছিলেন, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাঁর কাছে আছে। এমনকি, সেই ঘুষের অঙ্কও তিনি পেয়েছেন বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ।

১৩ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন ব্যবসায়ী হীরানন্দানি। তিনি বলেন, ‘‘দুবাইয়ে বসে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ আইডি ব্যবহার করে সংসদের ওয়েবসাইটে প্রশ্ন পোস্ট করেছিলাম। আমি গুরুতর ভুল করেছি। বিষয়টি দুঃখজনক।’’ মহুয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, ‘‘কেউ আমাকে হলফনামা দিতে চাপ দেননি।’’

১৪ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

২৫ অক্টোবর বিজেপি সাংসদ দুবেকে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। চিঠিতে বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, দুবে আইডি, পাসওয়ার্ড নিয়ে যে অভিযোগ তুলেছেন, তা অত্যন্ত গুরুতর এবং সংসদের এথিক্স কমিটিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে সাহায্য করবে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (এনআইসি)।

১৫ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

২৬ অক্টোবর বিজেপি সাংসদ দুবে এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইকে এথিক্স কমিটি ডেকে পাঠায়। কেন অভিযুক্তকে না ডেকে আগে অভিযোগকারীদের ডাকা হয়েছে, তা নিয়েও উত্তপ্ত হয় এথিক্স কমিটির বৈঠক। ওই বৈঠক বাতিলের দাবিতে সরব হন বিরোধী সাংসদেরা। ভোটাভুটিও হয়। তাতে ফল হয় ৫-৫। শেষে চেয়ারম্যান সোনকর ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বৈঠক চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, ফল হয় ৬-৫। সে দিনই এথিক্স কমিটি মহুয়াকে জানায়, ৩১ অক্টোবর হাজিরা দিতে হবে মহুয়াকে। বেলা ১১টায় তাঁকে হাজির হতে বলা হয়।

১৬ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

২৭ অক্টোবর এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখে মহুয়া জানান, ৩১ অক্টোবর তিনি যেতে পারবেন না। কারণ হিসাবে তিনি লেখেন, ৩০ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় বিজয়া সম্মিলনী পূর্বনির্ধারিত। ৫ নভেম্বরের পর তাঁকে কমিটির সুবিধা অনুযায়ী যে কোনও দিন, যে কোনও সময় ডাকা হলে তিনি হাজির হবেন।

১৭ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়ার ওই চিঠিতে আরও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ‘দুবে’ শব্দটি ইংরেজিতে ভুল টাইপ হয়ে ‘দুবাই’ হয়েছিল। তা নিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে মহুয়াকে তীব্র ‘বিদ্রুপ’ করেন বিজেপি সাংসদ দুবে।

১৮ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর এক সাক্ষাৎকারে মহুয়া স্বীকার করে নেন, তিনি ব্যবসায়ী হীরানন্দানির কাছ থেকে কয়েক বছর আগে আইশ্যাডো আর লিপস্টিক উপহার পেয়েছিলেন জন্মদিনে। তবে দু’কোটি টাকা নগদ নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভুয়ো বলে ওই সাক্ষাৎকারে উড়িয়ে দেন মহুয়া। মহুয়া এ-ও দাবি করেন, একটি বিদেশি প্রসাধনী প্রস্তুতকারক সংস্থার ওই সামগ্রী তাঁকে হীরানন্দানি কিনে দিয়েছিলেন জন্মদিনের উপহার হিসাবে। মহুয়া আরও জানান, মুম্বই গেলে বন্ধু হিসাবে হীরানন্দানি বিমানবন্দরে তাঁর জন্য গাড়ি পাঠাতেন। ভবিষ্যতে মুম্বই গেলেও তিনি বন্ধু হীরানন্দানিকে বলবেন।

১৯ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

২৮ অক্টোবর ফের মহুয়াকে চিঠি দেয় এথিক্স কমিটি। সেখানে বলা হয়, ২ নভেম্বর সকাল ১১টায় হাজিরা দিতে হবে তৃণমূল সাংসদকে। এর পর ৩১ অক্টোবর মহুয়া চিঠি দিয়ে এথিক্স কমিটিকে জানান, তিনি ২ নভেম্বর হাজিরা দেবেন।

২০ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এথিক্স কমিটির সামনে দেহাদ্রাইকে জেরা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন মহুয়া। সেই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেহাদ্রাই বলেন, “আমি কাউকে ভয় পাই না। আমি কারও ভয়ে চুপ করেও থাকব না। আমাকে এ ভাবে দমানোও যাবে না। যা সত্য সেটাই প্রতিষ্ঠিত হবে। সারা দেশ দেখছে, কে কী করেছেন! এবং এখন কে কী করছেন!”

২১ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

২ নভেম্বর কমিটির সামনে হাজিরা দেন মহুয়া। নির্ধারিত সময়েই বৈঠকে পৌঁছন তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু বৈঠকের দ্বিতীয়ার্ধেই তুলকালাম কাণ্ড বাধে। বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মহুয়া। তাঁর সঙ্গে বৈঠক ছাড়েন বেশ কয়েক জন বিরোধী সাংসদও। মহুয়ার অভিযোগ ছিল, তাঁকে ব্যক্তিগত এবং কুৎসিত প্রশ্ন করা হচ্ছিল। ওই রাতেই লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখে মহুয়া জানান, এথিক্স কমিটির বৈঠকে মৌখিক ভাবে তাঁর ‘বস্ত্রহরণ’ করা হয়েছে। চিঠিতে মহুয়া লেখেন, আগের রাতে কার সঙ্গে, কত বার ফোনে কথা বলেছেন, তার কল রেকর্ডের বিস্তারিত তথ্য জানতে চান কমিটির চেয়ারম্যান।

২২ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর জানা যায় ৭ নভেম্বর বৈঠকে বসবে এথিক্স কমিটি। সেই বৈঠকেই মহুয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হবে সে বিষয়ে কমিটি তাদের রিপোর্ট চূড়ান্ত করবে। তবে সেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়। ৭ তারিখের বদলে ৯ তারিখ বৈঠকে বসবে বলে জানানো হয় লোকসভার এথিক্স কমিটির তরফে।

২৩ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর মধ্যেই ৮ নভেম্বর মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাই দিল্লির থানায় সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। দায়ের করা অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, ‘‘গত ৫ নভেম্বর সকাল ১১টা নাগাদ এবং ৬ নভেম্বর সকাল ৯টা নাগাদ সাংসদ মহুয়া মৈত্র কাউকে না জানিয়েই আমার বাড়িতে আসেন। এ ভাবে (মহুয়া) মৈত্রের আমার বাড়িতে আসার কারণ হিসাবে মনে হচ্ছে, তিনি আমার বিরুদ্ধে আবার কোনও ভুয়ো প্রতারণামূলক অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’’

২৪ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

ওই দিন সন্ধ্যায় এথিক্স কমিটির খসড়া রিপোর্ট ‘ফাঁস’ হয়ে যায় একটি টিভি চ্যানেলে। সেখানে দাবি করা হয়, এথিক্স কমিটি মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের ব্যাপারে সুপারিশ করবে লোকসভার স্পিকারের কাছে।

২৫ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

খসড়া রিপোর্ট ‘ফাঁস’ হওয়ার পর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লেখেন মহুয়া। এথিক্স কমিটির গোপন রিপোর্ট কী ভাবে একটি নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমের হাতে পৌঁছে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।

২৬ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর জানা যায়, এথিক্স কমিটি মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। পক্ষে ভোট পড়ে ছ’টি, বিপক্ষে চারটি। মহুয়া তার প্রতিক্রিয়ায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘জানাই ছিল।’’

২৭ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

প্রসঙ্গত, বিতর্কের শুরুর দিকে তৃণমূল দলীয় ভাবে মহুয়ার পাশে দাঁড়ায়নি। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রথমে জানিয়েছিলেন, মহুয়ার বিষয়ে তৃণমূলের কোনও বক্তব্য নেই। তাঁর দল এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবে না। পরে অবশ্য সরাসরি মহুয়ার পাশে দাঁড়ানোর কথা না বললেও কুণাল এথিক্স কমিটির তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

২৮ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

বিতর্ক প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে সংসদের এথিক্স কমিটি। তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূল।’’ তবে এর উল্টো পথে হেঁটে সরাসরি মহুয়ার পাশে দাঁড়ান রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম। তিনি দাবি করেন, মহুয়া বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন বলেই তাঁকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। মহুয়াকে ‘স্ট্রং মহিলা’ বলে পাশে দাঁড়ান বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। পাশে দাঁড়ান তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

২৯ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

বিরোধীদের মধ্যে তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়ান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীও। সরাসরি না-বললেও মহুয়ার পক্ষে যুক্তি দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। অধীর, সেলিমের পর মহুয়ার পাশে দাঁড়ান সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

৩০ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

৯ নভেম্বর ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে মহুয়া প্রসঙ্গে প্রথম বার মুখ খোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মহুয়া নিজের লড়াই নিজেই লড়তে পারেন।” সেই সঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপির এমন অনেক সাংসদ রয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনা হয়েছে, কিন্তু সে সবের এখনও কোনও শুনানিই হয়নি।’’

৩১ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়ার পাশে দাঁড়ান দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নেতাজি ইন্ডোরে দলের সাংগঠনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘এদের (বিজেপির) প্ল্যান এখন মহুয়াকে তাড়ানো! তিন মাস আর বাকি আছে (সংসদের মেয়াদ শেষ হতে)। মহুয়া যেগুলো ভিতরে বলত, এ বার সেগুলোই বাইরে বলবে। মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই কাজ করে!’’

৩২ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়ার পাশে দাঁড়ান দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নেতাজি ইন্ডোরে দলের সাংগঠনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘এদের (বিজেপির) প্ল্যান এখন মহুয়াকে তাড়ানো! তিন মাস আর বাকি আছে (সংসদের মেয়াদ শেষ হতে)। মহুয়া যেগুলো ভিতরে বলত, এ বার সেগুলোই বাইরে বলবে। মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই কাজ করে!’’

৩৩ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয় ৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ, গত সোমবার। বিজেপি সূত্রে গত এক মাস ধরেই বলা হচ্ছিল, অধিবেশনের প্রথম দিনই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে সংসদের এথিক্স কমিটি। কিন্তু দেখা যায়, সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে লোকসভার স্পিকারের কাছে এথিক্স কমিটি রিপোর্ট পেশ করেনি। ফলে মহুয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ হবে, তা-ও স্পষ্ট হয়নি শীতকালীন অধিবেশনের শুরুর দিন।

৩৪ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর শোনা যায়, শুক্রবারই মহুয়া সম্পর্কে লোকসভার স্পিকারের কাছে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট জমা পড়বে। হয়েছেও তাই। তবে শুক্রবার লোকসভায় প্রবেশের সময় অন্য মেজাজে দেখা যায় মহুয়াকে। লোকসভায় ঢোকার আগে তাঁর মুখে শোনা যায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা। মহুয়া বলেন, ‘‘আমাদের বাংলায় একটা কবিতা আছে কাজী নজরুল ইসলামের। ‘অসত্যের কাছে কভু নত নাহি কর শির/ ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ, লড়ে যায় বীর।’’’

৩৫ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার পর দুপুর ২টো পর্যন্ত তা স্থগিত হয়ে যায়। পরে আবার অধিবেশন শুরুর পর ‘প্রশ্নঘুষ’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করে লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা শুক্রবার জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি।

৩৬ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

মহুয়াকেও বলার সুযোগ দেননি স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি জানান, মহুয়া আগে নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই আবার তাঁকে সুযোগ দেওয়া হবে না। পুরনো উদাহরণ টেনে এই যুক্তি দিয়েছেন স্পিকার। মহুয়া বলার জন্য একাধিক বার উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়।

৩৭ ৩৭
Timeline on Mahua Moitra's 'Cash For Query' case controversy

এর পর ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে মহুয়াকে বহিষ্কারের সরকারের পক্ষের প্রস্তাব পাশ করা হয়। লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে গর্জে ওঠেন মহুয়া। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ। কার্শিয়াং থেকে মহুয়ার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও।

সব ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি