একের পর এক সংসার ভাঙার খবর আসছে ভারতীয় ক্রিকেট দলে। সেই তালিকায় কি এ বার নাম জুড়তে চলেছে ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও ওপেনার বীরেন্দ্র সহবাগের? সংবাদমাধ্যম জুড়ে বীরেন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী আরতি অহলাবতের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের জল্পনা তুঙ্গে। ২০ বছরের দাম্পত্যজীবনে কি তা হলে ইতি টানতে চলেছেন এই দম্পতি?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা আলাদা থাকছেন। কিছু দিনের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদও হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
স্ত্রীর জন্মদিন হোক বা বিবাহবার্ষিকী, যে কোনও বিশেষ দিনেই স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সমাজমাধ্যমে নানা মজার মজার পোস্ট করতেন ভারতের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। কিন্তু দীপাবলির সময় সমাজমাধ্যমে সহবাগের পোস্ট করা ছবি থেকে আলোচনার শুরু।
সেই ছবিতে বীরেন্দ্রের মা ও ছেলেরা থাকলেও স্ত্রী আরতি ছিলেন অনুপস্থিত। আর এই থেকেই বিয়ে ভাঙার খবর জোরালো হয়।
অনুরাগীদের দাবি, বীরেন্দ্র সম্প্রতি স্ত্রী আরতির সঙ্গে কোনও ছবি পোস্ট করেননি, যদিও তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে দম্পতির পুরনো ছবি রয়েছে। এমনকি স্ত্রী আরতিকে সমাজমাধ্যমে অনুসরণ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় সহবাগের স্ত্রী আরতিও। সেখানে তিনি নামের সঙ্গে সহবাগ পদবি ব্যবহার করেন। তাঁর প্রোফাইলটি ব্যক্তিগত করা থাকলেও ১ লক্ষ ৭৭ হাজার অনুরাগী রয়েছে আরতির।
দু’সপ্তাহ আগে বিশ্ব নাগাক্ষি মন্দিরে গিয়েছিলেন বীরেন্দ্র। সেখানেও আরতিকে দেখা যায়নি। যদিও সহবাগ বা তাঁর স্ত্রী এখনও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাঁদের এই নীরবতা বিচ্ছেদের জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
২০০৪ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আরতি ও বীরেন্দ্র। শোনা যায় দুই পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় প্রথমে এই বিয়েতে রাজি হয়নি পাত্র-পাত্রীর পরিবার। এমনও গুঞ্জন ছিল আরতি ও বীরেন্দ্র সম্পর্কে ভাই-বোন। যদিও সেই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
বীরেন্দ্র এবং আরতি একে অপরকে ছোটবেলা থেকেই চেনেন। বীরেন্দ্র যখন আরতিকে প্রথম দেখেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৭ আর আরতির ৫। সহবাগ এবং আরতি ১৭ বছর ধরে বন্ধু ছিলেন। তার পরে ২০০২ সালে সহবাগ আরতিকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে জন্ম আরতি অহলাবতের। তাঁর বাবা দিল্লির আইনজীবী সূর্য সিংহ অহলাবত। আরতি লেডি ইরউইন সেকেন্ডারি স্কুল এবং ভারতীয় বিদ্যা ভবনে পড়াশোনা করেছিলেন। এর পর কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ মৈত্রী কলেজে।
২০০৪ সালে প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী অরুণ জেটলির বাসভবনে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। নয়াদিল্লির এক বিলাসবহুল হোটেলে জমকালো বিয়ের আয়োজন করেছিলেন বীরু-আরতি।
সহবাগ এবং আরতির দুই সন্তান রয়েছে। বড় ছেলের নাম আর্যবীর, তাঁর বয়স ১৮ বছর। ছোট ছেলের নাম বেদান্ত, তার বয়স ১৫ বছর। ছেলেরা ক্রিকেট খেলেন বাবার মতোই।
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন সহবাগ। তার পর থেকে কখনও কোচিং করিয়েছেন, কখনও ধারাভাষ্য দিয়েছেন। নাডার সদস্যও ছিলেন তিনি। তবে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন কখনওই খুব বেশি প্রকাশ্যে আসেনি।
আরতিও বরাবর প্রচার থেকে আড়ালে থেকেছেন। নিজের দুই ছেলে ও সংসার নিয়ে প্রচারের আলো থেকে দূরে ব্যক্তিগত জীবন কাটাতেই পছন্দ করেছেন আরতি।
বিবাহবিচ্ছেদ-বিতর্ক প্রকাশ্যে আসার পরেই সমাজমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে চর্চার শিরোনামে উঠে এসেছেন বীরেন্দ্র-আরতি।
সব ছবি: সংগৃহীত।