আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন। সেই সময় সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী নায়িকাদের তালিকায় শীর্ষে নাম ছিল তাঁর। বলিপাড়ার অনেকে শ্রীদেবী, জয়াপ্রদা এবং মাধুরী দীক্ষিতের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখতেন তাঁকে। অভিনয় থেকে সরে এখন কী করছেন মীনাক্ষী শেষাদ্রি?
১৯৬৩ সালের ১৬ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে জন্ম মীনাক্ষীর। শৈশব থেকেই নাচ এবং অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। ভরতনাট্যম, কত্থক, কুচিপুরির মতো একাধিক ঘরানার নাচ শিখেছিলেন তিনি।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন মীনাক্ষী। তার পরেই বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান। ১৯৮৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘পেন্টার বাবু’। এই ছবির মাধ্যমেই বলিপাড়ায় পা রাখেন তিনি।
১৯৮৩ সালে মুক্তি পায় ‘হিরো’ নামের একটি হিন্দি ছবি। এই ছবিতে জ্যাকি শ্রফের বিপরীতে অভিনয় করেন মীনাক্ষী। কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবিতে অভিনয় করেই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান তিনি। তার পর একের পর এক ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেতে থাকেন।
রাজেশ খন্না, রজনীকান্ত, জীতেন্দ্র, রাজ বব্বর, অমিতাভ বচ্চন, সানি দেওল এবং সঞ্জয় দত্তের মতো খ্যাতনামী বলি তারকার সঙ্গে অভিনয় করেন মীনাক্ষী। এক সহ-অভিনেতার সঙ্গে নামও জড়িয়ে পড়ে তাঁর।
‘সত্যমেব জয়তে’, ‘জ়ুর্ম’, ‘পুলিশ’, ‘মুজরিম’, ‘ক্ষত্রিয়’, ‘হমশকল’-এর মতো একাধিক ছবিতে বিনোদ খন্নার সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় মীনাক্ষীকে। বড় পর্দায় তাঁদের সম্পর্কের রসায়ন মনে ধরে দর্শকের।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ক্যামেরার পিছনেও নাকি ভাল সম্পর্ক ছিল বিনোদ এবং মীনাক্ষীর। কিন্তু সেই সময় তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিনোদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন মীনাক্ষী।
মীনাক্ষী বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বিনোদের সম্পর্ক ভাল ছিল। ও খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ ছিল। আশ্রমে যেত রোজ। ফিরে এসে শুটিং করত। আমার বাবার সঙ্গেও ভাব জমে গিয়েছিল বিনোদের।’’
সাক্ষাৎকারে মীনাক্ষী জানান, তাঁর বাবা অধিকাংশ সময় শুটিং দেখতে আসতেন। বিরতির সময় বিনোদের সঙ্গে আড্ডা মারতেন অভিনেত্রীর বাবা। তিন জন এক জায়গায় হলে নানা ধরনের রসিকতা চলত বলেও জানান মীনাক্ষী।
একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছিলেন মীনাক্ষী। কিন্তু তাঁর কেরিয়ার যখন তুঙ্গে, তখনই অভিনয়জগৎ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
১৯৯৫ সালে হরিশ মাইসুরুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন মীনাক্ষী। তাঁর স্বামী অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি পেশায় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার।
বিয়ের পর হরিশের সঙ্গে বিদেশে চলে যান মীনাক্ষী। বিয়ের এক বছর পর ১৯৯৬ সালে রাজকুমার সন্তোষীর পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ঘাতক’। এই ছবিতে সানি দেওলের সঙ্গে অভিনয় করেন মীনাক্ষী। ‘ঘাতক’ মুক্তির পর অভিনয় থেকে বিরতি নেন তিনি।
বিয়ের পর দুই সন্তানের জন্ম দেন মীনাক্ষী। স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে টেক্সাসে থাকেন মীনাক্ষী।
২০১৬ সালে সানি দেওলের ছবি ‘ঘায়েল: ওয়ান্স এগেন’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় মীনাক্ষীকে। কিন্তু স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার পর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি মীনাক্ষীকে।
নাচ নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন মীনাক্ষী। নাচ শেখানোর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তুলেছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে নিজস্ব অনুরাগীমহল রয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যে ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা তিন লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।
সব ছবি: সংগৃহীত।