পারিবারিক কারণে শেষ হয়নি কলেজের পাঠ। তার পরেও তাঁর হাতে মালিকানা রয়েছে এমন একটি সংস্থার যার দৌলতে আজ বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি তিনি। তিনি আমেরিকার অন্যতম প্রযুক্তি সংস্থা ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন।
সম্প্রতি ফোর্বস পত্রিকার বিচারে বিশ্বে ধনকুবেরদের তালিকায় দু’নম্বরে উঠে এসেছে তাঁর নাম। তিনি পিছনে ফেললেন অ্যামাজ়নের প্রতিষ্ঠাতা জ়েফ বেজ়োসকে। তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে আছেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক।
৮০ বছর বয়সি এই আমেরিকান ধনকুবের তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অ্যাম্পেক্স কর্পোরেশনে একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসাবে। তাঁর বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ১৭ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা। অথচ ফোবর্সের তালিকায় নাম ওঠার আগে পর্যন্ত তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬ লক্ষ ৭৭ হাজার কোটি টাকা।
ওরাকলের শেয়ার মূল্য হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পাওয়ায় বেজ়োসকে টপকে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন তিনি। বেজ়োসের সম্পত্তির পরিমাণ ১৬ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি।
সবাইকে টেক্কা দিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন মাস্ক। ফোবর্সের বিচার্য তালিকা অনুসারে আপাতত ল্যারির সামনে রয়েছেন একমাত্র মাস্কই। টেসলা, স্পেস এক্সের কর্ণধার মাস্কের মোট সম্পত্তির মূল্য ২১ লক্ষ কোটি টাকা। তাঁকে টপকাতে পারলেই বিশ্বের ধনীতম বলে বিবেচিত হবেন তিনি।
গত সপ্তাহে ২০২৬ সালে ওরাকলের আয় প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যেতে পারে এই খবরেই সংস্থার শেয়ারের দাম চড়চড় করে বেড়ে ২০ শতাংশ লাভের মুখ দেখে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জয়জয়কারের ফলে ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওরাকলের এই সাফল্য এসেছে বলে সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে।
গত সপ্তাহে ওরাকল জানায়, ছোট আকারের, সহজে স্থানান্তরযোগ্য ও সাশ্রয়ী খরচে ডেটা সেন্টার নির্মাণ করছে তারা।
১৯৬২ সালে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন ল্যারি। কিন্তু ১৯৬৪ সালে তাঁর মাসি মারা যান। এই মাসিই তাঁকে ছোট থেকে লালনপালন করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরই কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেন ল্যারি। পরে ১৯৬৬ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।
১৯৭৭ সালে ওরাকল প্রতিষ্ঠা করেন এলিসন। বর্তমানে ওরাকলের ৪০ শতাংশের মালিকানা রয়েছে তাঁর হাতে।
ফোর্বসের তথ্য অনুসারে, এলিসন ২০১৮ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলায় পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন। ২০২২ সালে তিনি এই পদ ছাড়েন। বর্তমানে তিনি সংস্থার প্রায় দেড় কোটি শেয়ারের মালিক।
এলিসন ৩৭ বছর ধরে ওরাকলের সিইও ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন।
আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করলেও ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ২০২০ সালে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের লানাই নামের একটি দ্বীপের পাকাপাকি বাসিন্দা হয়ে যান। ২০১২ সালে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিময়ে দ্বীপটির মালিকানা হাতে পান।
ফেসবুকের মালিক মার্ক জ়াকারবার্গ হলেন ফোর্বস পত্রিকার বিচারে বিশ্বের চতুর্থ ধনী। ফ্যাশন সংস্থা লুই ভিত্তোঁর কর্ণধার বার্নার্ড আর্নল্ট পঞ্চম ধনকুবের।
বাকি ধনকুবের যাঁরা এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন তাঁরা হলেন, বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার ওয়ারেন বাফেট। মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অতীতের ধনীতম শিল্পপতি বিল গেটস সপ্তম ধনকুবের।
অষ্টম স্থানে রয়েছেন ল্যারি পেজ, নবম স্থানে ইন্ডিটেক্স ফ্যাশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা অ্যামান্সিও ওর্তেগা এবং দশম স্থানে সের্গেই ব্রিন।
সব ছবি: সংগৃহীত।