![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362219_1.jpg)
আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো দুনিয়ার অন্যতম ‘সুপার পাওয়ার’ হওয়ার রাস্তায় দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে চিন। সেই লক্ষ্যপূরণে একের পর এক পরিকাঠামোগত মেগা প্রকল্পে কাজ করছে বেজিং। বাড়িয়ে চলেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। তবে উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে শুধুমাত্র এখানেই থেমে নেই ড্রাগন। এর জন্য একটি ‘নরম’ হাতিয়ারও ব্যবহার করছেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট তথা চেয়ারম্যান শি জিনপিং।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362362_2.jpg)
চিনের হাতে থাকা ওই অস্ত্রের নাম ভিডিয়ো গেম্স। এর সাহায্যে সারা বিশ্বে নিজেদের সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে চাইছে বেজিং। পাশাপাশি ডিজিটাল বিনোদনের জগৎকে একরকম কব্জাও করে ফেলছে ড্রাগন। এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে চিনা প্রযুক্তি জায়ান্ট ‘টেনসেন্ট’।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362379_3.jpg)
গত কয়েক দশকে দুনিয়া জুড়ে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগের বদলে সংস্কৃতিকে কার্যকর হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে পশ্চিমি দুনিয়ার একাধিক দেশ। উদাহরণ হিসাবে হলিউডের চলচ্চিত্র, আমেরিকান সঙ্গীত এবং জাপানি অ্যানিমেশনের কথা বলা যেতে পারে। বর্তমানে সেখানেই ধীরে ধীরে পা জমানোর চেষ্টা করছে চিন।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362398_4.jpg)
একটা সময়ে বিশ্বব্যাপী পপ সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। সারা দুনিয়া তাতে মেতে উঠেছিল। এখনও সেই চিন্তাভাবনা থেকে অনেক দেশ পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। পশ্চিমি সংস্কৃতির এই দেওয়াল ভাঙতে ভিডিয়ো গেম্সকে ব্যবহার করছে বেজিং। রকেটগতিতে এগিয়ে চলেছে এই ডিজিটাল শিল্প।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362413_5.jpg)
চিনের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি সংস্থা হল ‘টেনসেন্ট’। শেষ এক দশকের বেশি সময় ধরে গেমিং শিল্পের বিকাশ নিয়ে কাজ করে চলেছে এই সংস্থা। বর্তমানে এই ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নম্বর স্থানে পৌঁছে গিয়েছে ‘টেনসেন্ট’। একাধিক সংস্থাকে অধিগ্রহণ এবং বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ব জুড়ে বিশাল গেমিং সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে তারা।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362426_6.jpg)
‘টেনসেন্ট’-এর অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিয়ো গেম্স হল, ‘লিগ অফ লেজেন্ডস’। এটি তৈরি করেছেন সংস্থার কর্ণধার রায়ট গেম্স। ‘লিগ অফ লেজেন্ডস’-এ ৪০ শতাংশ অংশীদারি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ‘ফোর্টনাইট’ নামের আর একটি জনপ্রিয় ভিডিয়ো গেম্সও রায়টেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। সারা বিশ্বে ৪০ কোটির বেশি মানুষ এতে মজে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362444_7.jpg)
বিশ্ব জুড়ে গেমিং সাম্রাজ্য বিস্তার করতে একটি সহজ পদ্ধতি নিয়েছে ‘টেনসেন্ট’। সংস্থাটি এমন কিছু ভিডিয়ো গেম্সে বিনিয়োগ করছে যাতে মোহিত হয়ে রয়েছেন আন্তর্জাতিক দর্শক। পাশাপাশি এর মাধ্যমে চিনা সাংস্কৃতিক উপাদানগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসছে তারা। ভিডিয়ো গেম্সকে প্রচারের বড় অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে বেজিঙের ওই সংস্থা।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362458_8.jpg)
‘টেনসেন্ট’-এর তৈরি করা গেম্সগুলিতে লুকিয়ে আছে চিনা ইতিহাস এবং দেশটির পৌরাণিক কাহিনি। বিশ্লেষকদের দাবি, সাধারণ ভাবে সেগুলিকে সারা বিশ্বে প্রচার করা বেজিঙের পক্ষে কখনওই সম্ভব হত না। কিন্তু, ভিডিয়ো গেম্সের মাধ্যমে বর্তমানে তা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে ওই প্রযুক্তি সংস্থা। আর এ ভাবেই সূক্ষ্ম পদ্ধতিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে ড্রাগন।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362473_9.jpg)
চিনা সংস্থার তৈরি করা জনপ্রিয় মোবাইল গেম্সের মধ্যে রয়েছে ‘অনার অফ কিংস’। এর মাধ্যমে সে দেশের পৌরাণিক কাহিনিগুলিকে তুলে ধরেছে ‘টেনসেন্ট’। বিশ্বব্যাপী প্রচারে গেম্সটির নাম ‘এরিনা অফ ভ্যালর’ রেখেছে বেজিঙের সংস্থা। মূলত চিনা সংস্কৃতির থিমেই একে তৈরি করেছে তারা। পশ্চিমি দুনিয়া যে ভাবে এই ভিডিয়ো গেম্সটিকে গ্রহণ করেছে, তাতে ড্রাগনল্যান্ডের সংস্কৃতি গ্রহণের পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362492_10.jpg)
বিশেষজ্ঞদের দাবি, চিনের এই গেমিং শক্তির মূলে রয়েছে সূক্ষ্মতা। শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে এগুলিকে তৈরি করছে না বেজিং। উল্টে ড্রাগনল্যান্ডের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য। চিনা লোককাহিনি এবং ইতিহাসের ছোঁয়াও এর মাধ্যমে রাখছেন তারা। তুলে ধরা হচ্ছে প্রাচীন ব্যক্তিত্বময় চরিত্রদের।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362508_11.jpg)
এ ছাড়া ভিডিয়ো গেম্সে কালজয়ী উপন্যাসের ছোঁয়াও রাখার চেষ্টা করছে চিনা প্রযুক্তি সংস্থা। উদাহরণ হিসাবে ‘জার্নি টু দ্য ওয়েস্ট’-এর কথা বলা যেতে পারে। এই উপন্যাসের চরিত্রগুলিকে কেন্দ্র করে ভিডিয়ো গেম্স তৈরি করেছে বেজিং। ডিজিটাল খেলার চরিত্র হিসাবে উঠে এসেছেন কিংবদন্তি কারিগর লু বান বা মাঙ্কি কিং।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362530_12.jpg)
‘টেনসেন্ট’-এর মতোই চিনের আর একটি বড় প্রযুক্তি সংস্থা হল ‘স্টুডিয়ো গেম্স সায়েন্স’। তাদের তৈরি ডিজিটাল গেম্স হল ‘ব্ল্যাক মিথ: উকং’। চিনা পৌরাণিক কাহিনির উপর ভিত্তি করে একে তৈরি করেছে তারা। এই ভিডিয়ো গেম্সটির আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তাও কম নয়।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362544_13.jpg)
‘টেনসেন্ট’-এর মতোই চিনের আর একটি বড় প্রযুক্তি সংস্থা হল ‘স্টুডিয়ো গেম্স সায়েন্স’। তাদের তৈরি ডিজিটাল গেম্স হল ‘ব্ল্যাক মিথ: উকং’। চিনা পৌরাণিক কাহিনির উপর ভিত্তি করে একে তৈরি করেছে তারা। এই ভিডিয়ো গেম্সটির আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তাও কম নয়।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362556_14.jpg)
বিশ্লেষকদের দাবি, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর মতো ভিডিয়ো গেম্সও প্রেসিডেন্ট শি-র আগ্রাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ‘ডিজিটাল সিল্ক রুট’ হিসাবে একে ব্যবহার করছেন তিনি। এর মাধ্যমে দেশের গণ্ডির বাইরে ফাইবার অপটিক কেব্ল বা ৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তারের কাজ হাতে পাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি, ইকমার্স এবং ডিজিটাল লেনদেনের দুনিয়ায় একচ্ছত্র রাজত্ব করার লক্ষ্যও রয়েছে ড্রাগন চেয়ারম্যানের।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362572_15.jpg)
প্রযুক্তিশিল্পে আমেরিকা ও রাশিয়া-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে। ডিজিটাল ক্ষেত্রে ক্রমাগত উন্নতি করে চলেছে ভারতও। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে চাইছে বেজিং। আর তাই ভিডিয়ো গেম্সকে মরিয়া ভাবে তুলে ধরছে তারা।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362588_16.jpg)
বিশ্বব্যাপী গেমিং শিল্পে দুর্দান্ত সাফল্য সত্ত্বেও চিনা সংস্থা ‘টেনসেন্ট’কে নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। এর উপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন বেজিঙেরই রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশ। প্রসঙ্গত, অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থার মতো চিনা কমিউনিস্ট পার্টি বা সিসিপির সঙ্গে যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে ‘টেনসেন্ট’-এর।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362602_17.jpg)
চিনের এই সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্বের একাধিক দেশে। যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও ফ্রান্সে এই ধরনের গেমিং অ্যাপকে পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি তুলেছে সমাজের একাংশ। শেষ পর্যন্ত ওই দেশগুলি নিষেধাজ্ঞা চাপালে বেজিং যে বিপাকে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
![China expand global influence through video games effective tool for soft power of Beijing](https://assets.telegraphindia.com/abp/2025/Jan/1737362620_18.jpg)
বরাবরই ‘নেকড়ে যুদ্ধ কূটনীতি’তে জোর দিয়ে এসেছে চিন। আর তাই বিশ্লেষকদের দাবি, এ ব্যাপারে সংঘাতের বদলে সহযোগিতার রাস্তা নিতে পারে বেজিং। তবে যাই হয়ে যাক না কেন, ভিডিয়ো গেম্সের মাধ্যমে প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক শক্তি হিসাবে ড্রাগন যে উঠে এসেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সব ছবি: সংগৃহীত।