Entire Town Based In A Building

গোটা শহর একান্নবর্তী পরিবার! খাওয়াদাওয়া, বাজার সবই একসঙ্গে, শুধু প্রেমে পড়া ‘বারণ’

হঠাৎ গড়ে ওঠা এই জনপদের কাহিনি এত দিন আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি শহরটির কথা প্রকাশ্যে আসে একটি টিক টক ভিডিয়োর দৌলতে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৩:৪৯
০১ ২৪
ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত একটা গোটা শহর একই ছাদের তলায় থাকে।

ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত একটা গোটা শহর একই ছাদের তলায় থাকে।

ফাইল চিত্র।

০২ ২৪
থলে হাতে একই বাজারে যায়, একই মুদির দোকান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনে, রোগ হলে চিকিৎসাও করাতে যায় একই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, আবার পছন্দের পাব-ক্যাফে-রেস্তরাঁও একটিই।

থলে হাতে একই বাজারে যায়, একই মুদির দোকান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনে, রোগ হলে চিকিৎসাও করাতে যায় একই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, আবার পছন্দের পাব-ক্যাফে-রেস্তরাঁও একটিই।

০৩ ২৪
আর এই দোকান, বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মল, রেস্তরাঁ— সব রয়েছে একই ছাদের তলায়। মায় ওই ছাদের নীচেই রয়েছে, একটি পুরোদস্তুর থানা, একটি পোস্ট অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, এমনকি সরকারি দফতরও।

আর এই দোকান, বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মল, রেস্তরাঁ— সব রয়েছে একই ছাদের তলায়। মায় ওই ছাদের নীচেই রয়েছে, একটি পুরোদস্তুর থানা, একটি পোস্ট অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, এমনকি সরকারি দফতরও।

Advertisement
০৪ ২৪
প্রশাসনিক কাজের জন্য বড় একটা বাড়ির বাইরে বেরোতে হয় না কাউকে। অনেকের অফিসও ওই ছাদের নীচেই।

প্রশাসনিক কাজের জন্য বড় একটা বাড়ির বাইরে বেরোতে হয় না কাউকে। অনেকের অফিসও ওই ছাদের নীচেই।

০৫ ২৪
এমনকি, মনোরঞ্জনের জন্য একটি ক্লাবও রয়েছে এই বাড়িতে।

এমনকি, মনোরঞ্জনের জন্য একটি ক্লাবও রয়েছে এই বাড়িতে।

Advertisement
০৬ ২৪
নিত্যদিনের প্রার্থনার জন্যও আবাসিকদের বাইরে যেতে হয় না। শহরের সকলেই খ্রিস্টের উপাসক। তাঁদের জন্য একটি গির্জা রয়েছে ওই ছাদেরই নীচে।

নিত্যদিনের প্রার্থনার জন্যও আবাসিকদের বাইরে যেতে হয় না। শহরের সকলেই খ্রিস্টের উপাসক। তাঁদের জন্য একটি গির্জা রয়েছে ওই ছাদেরই নীচে।

০৭ ২৪
এ পর্যন্ত পড়ে মনে হতে পারে, বাকি আর রইল কী! সত্যি বাকি কিছু নেই প্রায়। থাকার উপায়ও নেই। গোটা শহরে ওই একটিমাত্র বাসযোগ্য বহুতল। তাই গোটা শহরটা প্রায় সব কিছু নিয়ে ঢুকে পড়েছে ওই বহুতলেই।

এ পর্যন্ত পড়ে মনে হতে পারে, বাকি আর রইল কী! সত্যি বাকি কিছু নেই প্রায়। থাকার উপায়ও নেই। গোটা শহরে ওই একটিমাত্র বাসযোগ্য বহুতল। তাই গোটা শহরটা প্রায় সব কিছু নিয়ে ঢুকে পড়েছে ওই বহুতলেই।

Advertisement
০৮ ২৪
শহরটির নাম হুইটিয়ার। আমেরিকার আলাস্কার এক চিলতে জনপদ যার মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ থাকেন শহরের একটিই বহুতলে।

শহরটির নাম হুইটিয়ার। আমেরিকার আলাস্কার এক চিলতে জনপদ যার মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ থাকেন শহরের একটিই বহুতলে।

০৯ ২৪
ছবির মতো দেখতে শহর। চারপাশে সবুজালি, উঁচু পাহাড়। সেই পাহাড়ের গায়ে, মাথায় পুরু বরফের পরত। আর তাদের উপত্যকায় জেগে রয়েছে একটি মাত্র বহুতল। ধবধবে সাদা ১৪ তলা ভবনের গায়ে বাদামি রঙের পোঁচ।

ছবির মতো দেখতে শহর। চারপাশে সবুজালি, উঁচু পাহাড়। সেই পাহাড়ের গায়ে, মাথায় পুরু বরফের পরত। আর তাদের উপত্যকায় জেগে রয়েছে একটি মাত্র বহুতল। ধবধবে সাদা ১৪ তলা ভবনের গায়ে বাদামি রঙের পোঁচ।

১০ ২৪
বাড়িটির নাম বাগিচ টাওয়ার। হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে বিশাল কোনও হোটেল বুঝি। আসলে এই বাড়িতে এককালে ছিল সেনাবাহিনীর ব্যারাক।

বাড়িটির নাম বাগিচ টাওয়ার। হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে বিশাল কোনও হোটেল বুঝি। আসলে এই বাড়িতে এককালে ছিল সেনাবাহিনীর ব্যারাক।

১১ ২৪
বাগিচ টাওয়ারের বয়স প্রায় ৮০। হুইটিয়ার শহরেরও বয়স প্রায় তার কাছাকাছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনা বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল এই অঞ্চলে। সেই সেনাদের প্রয়োজনীয়তার জোগান দিতেই তৈরি হয় একের পর এক সুবিধা— জলের সংযোগ, বিদ্যুৎ, রেলপথ, এমনকি একটি স্টেশনও।

বাগিচ টাওয়ারের বয়স প্রায় ৮০। হুইটিয়ার শহরেরও বয়স প্রায় তার কাছাকাছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনা বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল এই অঞ্চলে। সেই সেনাদের প্রয়োজনীয়তার জোগান দিতেই তৈরি হয় একের পর এক সুবিধা— জলের সংযোগ, বিদ্যুৎ, রেলপথ, এমনকি একটি স্টেশনও।

১২ ২৪
যুদ্ধ শেষ হলে সেনাদের ছেড়ে যাওয়া শিবিরে এই সব সুযোগ-সুবিধার আনুকূল্যে গড়ে উঠতে শুরু করে জনপদ। যা কালক্রমে বদলে যায় একটি সম্পূর্ণ শহরে।

যুদ্ধ শেষ হলে সেনাদের ছেড়ে যাওয়া শিবিরে এই সব সুযোগ-সুবিধার আনুকূল্যে গড়ে উঠতে শুরু করে জনপদ। যা কালক্রমে বদলে যায় একটি সম্পূর্ণ শহরে।

১৩ ২৪
হঠাৎ গড়ে ওঠা এই জনপদ এত দিন আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি তার কথা প্রকাশ্যে আসে একটি টিক টক ভিডিয়োর দৌলতে।

হঠাৎ গড়ে ওঠা এই জনপদ এত দিন আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি তার কথা প্রকাশ্যে আসে একটি টিক টক ভিডিয়োর দৌলতে।

১৪ ২৪
হুইটিয়ার শহরের বাসিন্দা এক তরুণী জেনেসা ওই ভিডিয়ো করেছিলেন, যেখানে তিনি ওই শহরে নিজেদের জীবনের বর্ণনা দিয়েছেন। ভিডিয়োটি যাঁরাই দেখেছেন তাঁরাই শহরটি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছেন জেনেসাকে। সেই সব প্রশ্নের যে সব জবাব দিয়েছেন তিনি, তা শুনে আরও চমকে গিয়েছেন তাঁরা।

হুইটিয়ার শহরের বাসিন্দা এক তরুণী জেনেসা ওই ভিডিয়ো করেছিলেন, যেখানে তিনি ওই শহরে নিজেদের জীবনের বর্ণনা দিয়েছেন। ভিডিয়োটি যাঁরাই দেখেছেন তাঁরাই শহরটি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছেন জেনেসাকে। সেই সব প্রশ্নের যে সব জবাব দিয়েছেন তিনি, তা শুনে আরও চমকে গিয়েছেন তাঁরা।

১৫ ২৪
শহরের বর্ণনা দিয়ে ওই ভিডিয়োয় ভেনেসা বলেছেন, ‘‘এমন শহরও আছে, যেখানে শহরবাসীরা সকলেই একটি বাড়িতে থাকেন। আমি সেই শহরের বা বলা ভাল সেই বাড়িরই বাসিন্দা।’’

শহরের বর্ণনা দিয়ে ওই ভিডিয়োয় ভেনেসা বলেছেন, ‘‘এমন শহরও আছে, যেখানে শহরবাসীরা সকলেই একটি বাড়িতে থাকেন। আমি সেই শহরের বা বলা ভাল সেই বাড়িরই বাসিন্দা।’’

১৬ ২৪
এর পর নিজের ঘর আর ঘর থেকে শহরের বাকি অংশের ছবিও দেখিয়েছেন ভেনেসা। জানিয়েছেন, এই বাড়ির ভিতরেই একটি গির্জা, দোকান, বাজার, প্রশাসনিক দফতর, পোস্ট অফিস রয়েছে।

এর পর নিজের ঘর আর ঘর থেকে শহরের বাকি অংশের ছবিও দেখিয়েছেন ভেনেসা। জানিয়েছেন, এই বাড়ির ভিতরেই একটি গির্জা, দোকান, বাজার, প্রশাসনিক দফতর, পোস্ট অফিস রয়েছে।

১৭ ২৪
শহরে একটি স্কুল রয়েছে। সেটি অবশ্য বাগিচ টাওয়ারের বাইরে। ঠিক রাস্তা পেরিয়ে উল্টো দিকেই। তবে সেই স্কুলে যাওয়ার জন্যও বাড়ির বাইরে বেরোতে হয় না পড়ুয়াদের। ভেনেসা জানিয়েছেন, ‘‘বাড়ির একতলায় একটি সুড়ঙ্গ পথ রয়েছে। সেই সুড়ঙ্গ বেয়ে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় স্কুলবাড়িতে।’’

শহরে একটি স্কুল রয়েছে। সেটি অবশ্য বাগিচ টাওয়ারের বাইরে। ঠিক রাস্তা পেরিয়ে উল্টো দিকেই। তবে সেই স্কুলে যাওয়ার জন্যও বাড়ির বাইরে বেরোতে হয় না পড়ুয়াদের। ভেনেসা জানিয়েছেন, ‘‘বাড়ির একতলায় একটি সুড়ঙ্গ পথ রয়েছে। সেই সুড়ঙ্গ বেয়ে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় স্কুলবাড়িতে।’’

১৮ ২৪
সব মিলিয়ে ৩১৮ জন বাসিন্দা এই বাগিচ টাওয়ারের। শহরের জনসংখ্যাও তার কাছাকাছিই। ভেনেসা জানিয়েছেন, ১৯৬৪ সালে এক বার বেশ বড় ভূমিকম্প হয়েছিল এই শহরে। তার পরে অনেকেই শহর ছেড়ে চলে যান।

সব মিলিয়ে ৩১৮ জন বাসিন্দা এই বাগিচ টাওয়ারের। শহরের জনসংখ্যাও তার কাছাকাছিই। ভেনেসা জানিয়েছেন, ১৯৬৪ সালে এক বার বেশ বড় ভূমিকম্প হয়েছিল এই শহরে। তার পরে অনেকেই শহর ছেড়ে চলে যান।

১৯ ২৪
কিন্তু একটি শহরে একটি মাত্র বাড়ি! এটি বেশ অদ্ভুত না? কারণ জানিয়ে ভেনেসা বলেছেন, শহরে আরও একটি বাড়ি আছে। তবে সেটি বাসযোগ্য নয়। পরিত্যক্তও। আর বাড়ি বানানোর সুযোগও নেই এই শহরে। কেন না শহরের প্রায় পুরোটাই রেলের সম্পত্তি। যদি জমিই না পাওয়া যায়, তবে বাড়ি হবে কোথায়!

কিন্তু একটি শহরে একটি মাত্র বাড়ি! এটি বেশ অদ্ভুত না? কারণ জানিয়ে ভেনেসা বলেছেন, শহরে আরও একটি বাড়ি আছে। তবে সেটি বাসযোগ্য নয়। পরিত্যক্তও। আর বাড়ি বানানোর সুযোগও নেই এই শহরে। কেন না শহরের প্রায় পুরোটাই রেলের সম্পত্তি। যদি জমিই না পাওয়া যায়, তবে বাড়ি হবে কোথায়!

২০ ২৪
তাই বাগিচ টাওয়ারই ভরসা হুইটিয়ারের বাসিন্দাদের। সবাই ওই বহুতলেই একসঙ্গে থাকেন। যেন একটি একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য সকলে।

তাই বাগিচ টাওয়ারই ভরসা হুইটিয়ারের বাসিন্দাদের। সবাই ওই বহুতলেই একসঙ্গে থাকেন। যেন একটি একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য সকলে।

২১ ২৪
ভেনেসার ভিডিয়ো দেখে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, এক ছাদের তলায় সব সময় থাকতে একঘেয়েমি আসে না তাঁদের? একটু অন্য রকম মনোরঞ্জন চাইলে তাঁরা কী করেন? ভেনেসা জানিয়েছেন, বাগিচের বাইরে শহরের একটি হ্রদে বোটিং করার ব্যবস্থা আছে। বরফে মোড়া শহরটিতে স্কি করারও সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

ভেনেসার ভিডিয়ো দেখে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, এক ছাদের তলায় সব সময় থাকতে একঘেয়েমি আসে না তাঁদের? একটু অন্য রকম মনোরঞ্জন চাইলে তাঁরা কী করেন? ভেনেসা জানিয়েছেন, বাগিচের বাইরে শহরের একটি হ্রদে বোটিং করার ব্যবস্থা আছে। বরফে মোড়া শহরটিতে স্কি করারও সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

২২ ২৪
কিন্তু ভেনেসার দুঃখ একটাই। এই শহরে প্রেম করার সুযোগ নেই একেবারেই। ডেটে যাওয়াও এক রকম ‘স্বপ্ন’ই।

কিন্তু ভেনেসার দুঃখ একটাই। এই শহরে প্রেম করার সুযোগ নেই একেবারেই। ডেটে যাওয়াও এক রকম ‘স্বপ্ন’ই।

২৩ ২৪
বাগিচ টাওয়ারের বাসিন্দা ওই তরুণী জানাচ্ছেন, শহরে তাঁর সমবয়সি বাসিন্দা রয়েছেন বড় জোর ২০ জন। প্রায় প্রত্যেক বয়সের মানুষেরই সংখ্যা প্রায় ওই রকম। তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু তাঁর ঠিক উপরের ফ্লোরেই থাকেন।

বাগিচ টাওয়ারের বাসিন্দা ওই তরুণী জানাচ্ছেন, শহরে তাঁর সমবয়সি বাসিন্দা রয়েছেন বড় জোর ২০ জন। প্রায় প্রত্যেক বয়সের মানুষেরই সংখ্যা প্রায় ওই রকম। তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু তাঁর ঠিক উপরের ফ্লোরেই থাকেন।

২৪ ২৪
ভেনেসা বলেছেন, ‘‘বাকি যাঁদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হতে পারত, তাঁদের সঙ্গে ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। আমাদের মধ্যে বন্ধু বা ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক। তাই তাঁদেরকে প্রেমিক হিসাবে ভাবতে খুব অদ্ভুত লাগে।’’

ভেনেসা বলেছেন, ‘‘বাকি যাঁদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হতে পারত, তাঁদের সঙ্গে ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। আমাদের মধ্যে বন্ধু বা ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক। তাই তাঁদেরকে প্রেমিক হিসাবে ভাবতে খুব অদ্ভুত লাগে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি