রোজ একই ধরনের শারীরচর্চা, একই সরঞ্জাম ব্যবহার করে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে যান। এক্সারসাইজ়েও নতুনত্ব প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন অ্যাকোয়া ব্যাগ। জলভর্তি বিশেষ ধরনের এই ব্যাগের ব্যবহার খানিকটা ডাম্বেল, বারবেল, কেটলবেলের মতোই। ২০১৫ সালে আবিষ্কার হয় অ্যাকোয়া ব্যাগ। ক্রমশ তা শারীরচর্চার জনপ্রিয় সরঞ্জাম হয়ে উঠছে।
অ্যাকোয়া ব্যাগের ব্যবহার
ডাম্বেল, কেটলবেল যেমন বিভিন্ন ওজনের হয়, অ্যাকোয়া ব্যাগও তেমনই। যার যেমন ওজন প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী এই ব্যাগে জল ভরতে হয়। ফিটনেস প্রশিক্ষক গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “শারীরচর্চার সময়ে এই জল ক্রমাগত নড়াচড়া করে, যা শরীরের উপরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ক্যালরি বার্নের পাশাপাশি পেশির শক্তি, ফ্লেক্সিবিলিটি, স্টেবিলিটি বাড়াতে, অস্থিসন্ধির ব্যথা কমাতে কাজে লাগে এই অ্যাকোয়া ব্যাগ ওয়ার্কআউট। এতে সামগ্রিক ভাবে বিভিন্ন মাসলের কো-অর্ডিনেশন, ব্যাল্যান্সও বাড়ে।”
রকমভেদ
অ্যাকোয়া ব্যাগ বিভিন্ন ধরনের হয় -
ফিটনেস ট্রেনার অরিজিৎ ঘোষালের কথায়, “অ্যাকোয়া ব্যাগ ওয়ার্কআউট করার আগে ঠিক ব্যাগ বেছে নেওয়া জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা ব্যাগ দিয়ে শারীরচর্চা শুরু করুন। অ্যাকোয়া ব্যাগের সাহায্যে কার্ডিয়ো, অ্যাবস, কোর, গ্লুটস, হিপ ইত্যাদি পেশির ব্যায়াম করা সম্ভব।” ক্লিন, প্রেস, ওভারহেড ক্যারি, রাশিয়ান টুইস্ট ইত্যাদি পাঁচ-ছ’টি ব্যায়াম নিয়ে একটি সেট তৈরি করে সার্কিট করার পরামর্শ দিলেন অরিজিৎ।
অ্যাকোয়া ব্যাগের সুবিধে
এতে শরীরের স্ট্রেংথ, স্টেবিলিটি, ফ্লেক্সিবিলিটি যেমন বাড়ে, তেমনই মাথার সঙ্গে শরীরের সমন্বয়ও বাড়ে। নিয়মিত অ্যাকোয়া ব্যাগ ট্রেনিংয়ে দৈনন্দিন কাজে বা খেলার মাঠে শরীর দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
সতর্ক থাকুন
যাঁরা এই পদ্ধতি নতুন শিখছেন, তাঁদের প্রথম দিকে অ্যাকোয়া ব্যাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হতে পারে। বেসিক মুভমেন্ট, রোটেশনাল প্যাটার্ন না শিখে অ্যাকোয়া ব্যাগ ব্যবহার করতে গেলে বেকায়দা লেগে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। আগে কোর মাসলের শক্তি না বাড়িয়ে অ্যাকোয়া ব্যাগ ট্রেনিং শুরু করলে তেমন উপকার পাওয়া যাবে না। তাই অবশ্যই প্রশিক্ষকের নজরদারিতে ব্যায়াম করুন। সাধারণ ক্ষেত্রে এক্সারসাইজ়ের সময়ে সহজে ওজন বাড়ানো–কমানো যায়। কিন্তু জল ভরে বা কমিয়ে অ্যাকোয়া ব্যাগে ওজন বাড়ানো–কমানো কিন্তু বেশ ঝক্কির। সঙ্গে জল লিকেজের সমস্যাও থাকে। তা ছাড়া, হার্টের নির্দিষ্ট কোনও সমস্যা থাকলে, ভারী ওজন তোলা বারণ হলে অবশ্যই অ্যাকোয়া ব্যাগ ট্রেনিং এড়িয়ে চলুন। পিঠে বা কোমরে ব্যথার ক্ষেত্রেও এ ধরনের ট্রেনিং না করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অরিজিৎ বলছেন, “মূলত এটি লো-ইমপ্যাক্ট ওয়ার্কআউট। ফলে যাঁরা মাসল বাড়াতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই ব্যায়াম বিশেষ উপকারী নয়।”
লো-ইমপ্যাক্ট ওয়ার্কআউট হলেও অ্যাকোয়া ব্যাগ দিয়ে হাই-ইন্টেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং সম্ভব। রোটেশনাল মুভমেন্ট যে ধরনের এক্সারসাইজ়ে বেশি হয়, সে ধরনের শারীরচর্চায়ও এই ব্যাগ কার্যকরী। বক্সার, অ্যাথলিট, খেলোয়াড়দের জন্য এই ওয়ার্কআউট বেশ ভাল। তবে প্রশিক্ষকেরপরামর্শ ও নজরদারিতে তা ব্যবহার করতে হবে।