Weight Loss

ছেলের সঙ্গে স্লিপে উঠে আটকে গিয়েছিলেন, জেদ করে এক ধাক্কায় ৬২ কেজি কমালেন মা

ছেলের সঙ্গে স্লিপে চড়তে গিয়ে আটকে যান ১১৪ কেজির লকেট ক্যাটার্স। সন্তানের সামনে এমন অপ্রস্তুত হওয়ায় জেদ করে ৬২ কেজি কমালেন মা।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৪:০৪
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সি লকেট ক্যাটার্সের রোগা হওয়ার কাহিনি এখন সকলের মুখে মুখে।

আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সি লকেট ক্যাটার্সের রোগা হওয়ার কাহিনি এখন সকলের মুখে মুখে। ছবি: সংগৃহীত

ছেলের বায়না মেটাতে তার সঙ্গে স্লিপে উঠেছিলেন। কিন্তু ১১৪ কেজি ওজন হওয়ায় ছেলে নেমে গেলেও স্লিপে আটকে যান মা। কোনও মতে টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে তাঁকে বার করা হয়। তখনকার মতো সমস্যা মিটলেও এই ঘটনা দাগ কেটে যায় তাঁর মনে। তাই জেদ করে এক ধাক্কায় ৬২ কেজি ওজন কমিয়ে ফেললেন তিনি। আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সি লকেট ক্যাটার্সের রোগা হওয়ার কাহিনি এখন সকলের মুখে মুখে।

দুই সন্তানের মা ওই তরুণীর স্থূলতার ইতিহাস শৈশবের নয়। দ্বিতীয় বার মা হওয়ার সময়ে হঠাৎই এতটা ওজন বেড়ে যায়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন। এই ক্রনিক সমস্যার কারণে ওজন একটু একটু করে বাড়তে থাকে। এ ছাড়া, খাবারের প্রতি একটা আলাদা ভালবাসাও রয়েছে লকেটের। সব সময়েই কিছু না কিছু তিনি খেতেনই। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর খাবারের প্রতি টান যেন দ্বিগুণ হয়। দু’বার করে সকালের খাবার খেতেন। দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পরেও বিকেলে খিদে পেয়ে যেত। খিদে মেটাতে বাইরে থেকে আনাতেন মুখরোচক সব খাবার। কখনও বাড়িতেও বানিয়ে নিতেন। রাতেও ভারী খাবার খেতেন। মিষ্টি খেতে অসম্ভব ভালবাসতেন। ওই তরুণী জানিয়েছেন, বার্গার, নাগেটস, নরম পানীয়, সোডা— ওই তরুণীর সারা দিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলিই থাকত। ফলে ওজনের পারদ চড়তে থাকে ক্রমশ। ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে কখনও তেমন চিন্তিত ছিলেন না লকেট। রোগা হওয়ার কোনও চেষ্টাও করেননি। কিন্তু একটি ঘটনা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল তাঁর। লকেটের কথায়, ‘‘বড় ছেলেকে নিয়ে আমি এবং আমার স্বামী এক দিন পার্কে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার ছেলে একটি স্লিপে চড়ার জন্য বায়না শুরু করে। কিন্তু সে একা উঠতে ভয় পায়। অগত্যা আমাকেও উঠতে হয় তার সঙ্গে। আমার দু’জনে পাশাপাশি দু’টি স্লিপে উঠেছিলাম। স্লিপগুলি খুব চওড়া ছিল না। আমি বসতে পারলেও সুড়ুৎ করে নীচে নেমে যেতে ব্যর্থ হই। আমি সেখান থেকে বেরোতেও পারছিলাম না। সেখানে উপস্থিত অনেকেই সাহায্য করার বদলে আমাকে দেখে মুখ টিপে হাসছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমার স্বামী এসে হাত ধরে টেনে উদ্ধার করেন। পুরো ঘটনাটি ছেলের সামনে ঘটায় আমি খুবই লজ্জিত হয়ে পড়েছিলাম। বাড়ি ফিরেই আমি সিদ্ধান্ত নিই,যে ভাবেই হোক রোগা হতে হবে। পরিশ্রম শুরু করি।’’

Advertisement

পরের দিন থেকেই ডায়েট করতে শুরু করেন লকেট। বাইরের খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দেন। তরল খাবার খেতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে শুরু করেন কঠোর শরীরচর্চা। পুষ্টিবিদ, চিকিৎসক, জিম প্রশিক্ষক— সকলের পরামর্শ মেনে চলতে থাকেন তিনি। এরই মাঝে লকেটের ‘পিসিওএস’ ধরা পড়ে। তাতে সাময়িক ভাবে ভেঙে পড়লেও ফের শুরু করেন পরিশ্রম। ডিমের সাদা অংশ, পালংশাক এবং টম্যাটো সিদ্ধ ছিল তাঁর সকালের খাবার। দুপুরে একেবারে অল্প খাবার খেতেন। রাতে খেতেন স্যুপ। তবে তাঁর পরিশ্রম বিফলে যায়নি। ১১৪ কেজির লকেট এখন ৫৩ কেজি। নিজে তো বটেই, পরিবারের সকলেই তাঁর এই পরিবর্তনে খুব খুশি।

আরও পড়ুন
Advertisement