ঝগড়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের যোগ আছে কি?
ব্র্যাড পিট, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি অভিনীত ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ সিনেমার কথা মনে আছে? স্বামী-স্ত্রীর তীব্র ঝগড়া শেষ পর্যন্ত পর্যবসিত হয় ভালবাসা এবং শারীরিক সম্পর্কে। এমন ঘটনা হলিউড ছবিতে নিত্যই দেখা যায়। কিন্তু বিষয়টি কি আদৌ বাস্তবসম্মত, নাকি পুরোটাই সিনেমার প্রয়োজনে বানানো?
হালে মনোবিদ্যার কিছু গবেষণা বলছে, প্রেমের সম্পর্কে ঝগড়ার পরিণতি হিসেবে আসতে পারে শারীরিক নৈকট্য। তার পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
হরমোনের অবদান: আমেরিকার মনোবিদ অ্যান্ড্রু আরনের মতে, ঝগড়ার সময় শরীরে টেস্টোস্টেরন, অ্যাড্রিনালিন, কোর্টিসলের মতো হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এগুলির সব ক’টিই উত্তেজনা এবং মানসিক চাপ বাড়ায়। আর যৌনসম্পর্কের সময় বাড়ে সেরোটোনিন, ডোপামিনের মতো মন ভাল রাখার হরমোনের ক্ষরণ। আগের হরমোনগুলি চেষ্টা করে পরেরগুলির দিকে শরীরকে নিয়ে যেতে। ফলে ঝগড়ার পিছন পিছন শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছে বাড়ে অনেকের ক্ষেত্রেই।
ভয় কাটানো: যে কোনও ঝগড়াই মনের ভিতরে এক ধরনের ভয়ের জন্ম দেয়। শারীরিক সম্পর্ক সেই ভয় কাটিয়ে দিতে সাহায্য করে। ভয়ের বদলে সেখানে জায়গা করে নেয় এক ধরনের উত্তেজনা এবং আনন্দ। ঝগড়ার পর শারীরিক সম্পর্কের পিছনে এটাও একটা কারণ বলে মত আরনের।
শক্তি বেড়ে যাওয়া: অন্য এক মনোবিদ এলেসা জেনডরফার দাবি করেছেন, ঝগড়ার সময় হরমোনের কারণেই শরীরে ‘এনার্জি’ বা শক্তি কিছুটা বেড়ে যায়। সেই শক্তিই শারীরিক সম্পর্কের দিকে অনেককেই ঠেলতে থাকে। দু’জনের ‘এনার্জি’র মাত্রাই যদি ঝগড়া থেকে বেড়ে যায়, তা হলে তা সুস্থ যৌনসম্পর্কের দিকে নিয়ে যেতে পারে বিষয়টিকে।
দুঃখপ্রকাশ বা ক্ষমা চাওয়া: মনোবিদ এবং চিকিৎসক গেইল সলৎজের বক্তব্য, ঝগড়ার পরে পরস্পরের কাছে দুঃখপ্রকাশের একটা তাগিদ তৈরি হয় অনেক ক্ষেত্রেই। কিন্তু সেই দুঃখপ্রকাশ বা ক্ষমা চাওয়াটা অনেকেই মুখের ভাষায় ব্যক্ত করতে পারেন না। আর সেখানেই এগিয়ে আসে শরীরের ভাষা। শুধু তাই নয়, সলৎজের মতে, প্রতিটা ঝগড়ার সূত্রেই চলে আসতে পারে ছোটবেলার নানা খারাপ স্মৃতি। সেই স্মৃতিগুলি কাটিয়ে দিতেও সাহায্য করে শারীরিক সম্পর্ক।