দোলেও কি লাগল রাজনীতির রং? ছবি: সংগৃহীত।
বসন্ত উৎসবের আমেজ শহর জুড়ে। রঙের বাজারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সামনেই লোকসভা ভোট। রঙের বাজারেও কি ভোটের প্রভাব চোখে পড়ছে? হরেক দোকানে এক একটি বস্তায় সাজানো এক এক রকমের রং। এ বার কোন রঙের আবিরের চাহিদা বেশি ছিল, তা জানতে শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখল আনন্দবাজার অনলাইন।
লাল, নীল, সবুজ, হলুদ, রং যা-ই হোক না কেন, এ বছর কিন্তু ভেষজ রঙের চাহিদা প্রতি বছরের তুলনায় আরও বেড়েছে। সেই রং সামান্য ফিকে হলেও আপত্তি নেই। তবে পরিবেশসচেতনতা যত বেড়েছে, তার সঙ্গে রঙের পছন্দেও নতুনত্ব এসেছে। কাঁকুড়গাছি এলাকার রং বিক্রেতা শঙ্করলাল শর্মা বলেন, ‘‘এ বছর হার্বাল আবিরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। রঙের মধ্যে এ বছর কিন্তু লালের চাহিদা কম। নীল রঙের আবির সবচেয়ে বেশি বিক্রি করেছি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এসে নীল আবিরের খোঁজ করছে, ওই রং মাখলে নাকি ছবি ভাল আসছে।’’
শহরের নানা প্রান্তে নানা ধরনের কথা। তবে পছন্দের ধারা বোধ হয় এক দিকেই গড়িয়েছে। শমিক হালদারের দোকান রয়েছে গড়িয়াহাট এলাকায়। তিনি বললেন, ‘‘ভোটের আগে সাধারণত সবুজ, গেরুয়া রঙের আবিরের চাহিদা বাড়ে, তবে এ বার রাজনৈতিক দলগুলির নির্দিষ্ট রং নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন মাতামাতি চোখে পড়েনি। উল্টে এ বছর উজ্জ্বল রঙের চাহিদা বেড়েছে। বেগুনি, নীল, আকাশি, হলুদ— এ সব রং বেশি বিক্রি করেছি।’’ লেকটাউনের ব্যবসায়ী চাঁদমোহন সাহা বলেন, “আবির খেলায় সবাই মেতে ওঠেন। যার যেমন পছন্দ, তেমন নিয়ে যান, সেখানে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।’’
রং কেনার আগে তরুণ প্রজন্মের মনে কী চলে? একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুমেধা পাল। সে বলল, ‘‘লাল রং বড্ড সেকেলে। আমি তো নিয়ন রঙের আবির দিয়েই খেলেছি। নীল রঙের আবিরটাও বেশ ভাল। নিজস্বীগুলি ওই আবিরে খুব ভাল এসেছে।’’ কলেজ ছাত্র প্রিয়ঙ্কর রায় আবার বলেন, ‘‘উৎসবের মাঝে রাজনীতিকে ঢোকাতে পছন্দ করি না। ইচ্ছে করেই লাল, সবুজ আর গেরুয়া আবির কিনিনি। ওই রং মাখলেই তো না চাইতেও গায়ে রাজনীতির রং লেগে যাবে। তার বদলে জেনে-বুঝেই হলুদ, বেগুনি, গোলাপি আবির কিনেছি।’’ তবে রাজনীতিতে পছন্দের রং যেমনই হোক না কেন, এ বছর দোলে গেরুয়া আর সবুজের যুদ্ধ হয়নি। বাজার বলছে, নীল আর বেগুনি জিতে গিয়েছে।