Hanol An Offbeat Tourist Destination

পথ চলাতেই আনন্দ! এই গরমে ঘুরে আসুন দেহরাদূনের অদূরে হানল থেকে

সপরিবার যান বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে—ঘুরে নিতে পারেন হানল। দেহরাদূন থেকে হানল যাওয়ার পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য যতটা আকর্ষক, জনপ্রয়িতার আড়ালে থাকা হানলের রূপও তেমনই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫৩

ছবি: সংগৃহীত।

ভ্রমণের সংজ্ঞা এক এক একজনের কাছে এক এক রকম। কেউ ভালবাসেন নির্জন স্থানে গিয়ে নিজের মতো সময় কাটাতে। কারও পছন্দ শহর। কেউ যখন ভিড় এড়াতে চান, তখন অনেকে ব্যস্ত শহুরে জীবনেই বেড়ানোর আনন্দ খুঁজে পান।

Advertisement

আর একদল আছেন, যাঁদের ‘পথ চলাতেই আনন্দ’! রাস্তা যত দীর্ঘই হোক না কেন, আপত্তি নেই। বরং গাড়ি বা বাইকে যেতে যেতে পেরিয়ে যাওয়া পাহাড়, উপত্যকা, জনপদ, প্রান্তর, সবুজ দেখাতেই মেলে অনাবিল আনন্দ।

গরমের দিনে বেড়ানোর জন্য এমন কোনও স্থান চান? যে জায়গাটিতে যাওয়ার রাস্তাই উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে? এমন কোনও জায়গা, যেখানে দীর্ঘ পথশ্রমের পর শান্তিতে কোনও নদীর বয়ে চলা দেখতে দেখতে জিরিয়ে নেওয়া যায়। তা হলে উত্তরাখণ্ডের হানল থাকতে পারে আপনার বেড়ানোর তালিকায়।

পাহাড়ের কোলে নিরিবিলি এক জনপদ। টন নদী। খুব পুরনো মন্দির। প্রকৃতির উজাড় করা রূপ। তবে দেহরাদূন থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে হানল পৌঁছোনোর রাস্তাটি মন জয়ের জন্য আদর্শ।

চক্রতা, লোখান্ডি, টিউনি পার করে হানল। এই পথের শোভা শুধু গাড়িতে নয়, উপভোগ্য হতে পারে বাইকেও। মসৃণ পিচের রাস্তা। পাহাড়ের রূপ এক এক মরসুমে এক এক রকম। গরমে আবহাওয়া থাকে অত্যন্ত মনোরম।

পাহাড়ি জনপদগুলিতে ধাপে ধাপে চাষ হয় ধান। সেই শোভাই যখন পাহাড়ি রাস্তার বাঁক থেকে চোখে পড়ে, দৃশ্যতই তা হয়ে ওঠে অপরূপ। এখানকার পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য হল, বিস্তীর্ণ উপত্যকা জুড়ে থাকা ঘাসজমি। বিশেষত বর্ষার জলে তা যখন পুষ্ট হয়ে ওঠে মনে হয়, প্রকৃতি যেন সবুজের গালিচা বিছিয়ে রেখেছে।

মহাসু মন্দির।

মহাসু মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।

দেহরাদূন থেকে যাত্রা শুরু করলে প্রথম জনপদ চক্রতা। এই পথেই পড়বে ঘাসে ঢাকা উপত্যকা। সেখানেই রয়েছে উঁচু উঁচু পাইন গাছ। চাইলে রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়ে সেখানে বনভোজন সারতে পারেন। কিংবা কিছুটা সময় নিঃশব্দে সেখানে হেঁটে বেড়াতে পারেন।

পাহাড়ে সূর্যোদয়ের এক রূপ, আবার পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্য আর এক। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের চেয়ে আচমকা পাহাড় ঢেকে দেওয়া মেঘের রূপও কম কিছু নয়। পাহাড়ি যাত্রা পথে এমন নানা রূপের সাক্ষী থাকতে পারেন। হানল যাওয়ার সময় রাত্রিবাস করতে পারেন টিউনিতেও।

হানলের অদূরে টিউনি বেশ ছিমছাম একটি শহর। হোটেল, বাজার, দোকানপাট—সবই আছে এখানে। পাহাড়ি জনপদের উপর দিয়ে দিয়ে বয়ে গিয়েছে যমুনা। হানলের চেয়ে টিউনির রূপ কম কিছু নয়। এখানকার টন, পাব্বর নদীতে কায়াকিং, রিভার র‌্যাফটিং-ও হয়। ট্রেকিং, পর্বতারোহনের জন্য টিউনির নিজস্ব পরিচিতি আছে।

টিউনি থেকে আরও কিছুটা এগোলে হানল। টন নদীর তীরে তার অবস্থান। এখানেই রয়েছে মহাসু দেবতা মন্দির। পাথরের তৈরি প্রাচীন মন্দিরের ভাস্কর্য এবং স্থাপত্যশৈলীও আকর্ষক। স্থানীয়দের কাছে বড়ই পবিত্র এই মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা লোককথা। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ রয়েছে মহাসু মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে।

কেউ কেউ বলেন, হানলেতে এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু পাইন অরণ্যের দেখা মেলে এখানেই। পাহাড়ি ঝর্না, নদী— এই জায়গার রূপ বাড়িয়েছে বহু গুণ। এখান থেকে ট্রেক করে ঘুরে নেওয়া যায় আশপাশের বিভিন্ন স্থান। কয়েকটি দিন থেকে উপভোগ করা যায় নির্জন জনপদের সৌন্দর্য। পক্ষী পর্যবেক্ষকদের জন্যও এই স্থান আদর্শ।

হানলে ঘোরার সময়: দেহরাদূন থেকে এই জায়গা প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দূরে, সিমলা থেকে ১৪০ কিলোমিটার। পার্বত্য শোভা এবং রাস্তার সৌন্দর্য উপভোগে বাইক বা চার চাকার গাড়িতে আসাই ভাল। বর্ষার সময়টুকু বাদ দিলে সারা বছর এখানে ঘোরা যায়। বিশেষত সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে এখানকার উপত্যকা, পাহাড় ভীষণ সুন্দর দেখায়।

থাকার জায়গা: টিউনিতে হোটেল, হোমস্টে রয়েছে। হানলের কাছাকাছি কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে।

কী ভাবে যাবেন?

বিমানে দেহরাদূন গিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে হানল যেতে পারেন। শিমলা থেকেও যাওয়া যায়।

Advertisement
আরও পড়ুন