প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
ডায়াবিটিসের রোগীদের রক্তে শর্করা মাত্রা হঠাৎ ওঠানামা করে। কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। নাহলে কিডনির সমস্যা, স্নায়ুর-ক্ষতি, হৃদরোগ, চোখের সমস্যার মতো নানা রকম ডায়াবিটিস জনিত জটিলনতা তৈরি হতে পারে। অনেক সময় খাওয়াদাওয়া বা শরীরচর্চা ঠিক করে করলেও হঠাৎ করে রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। হয়তো কারণগুলো আমাদের অজানা, তাই নিয়ন্ত্রণও করা যাচ্ছে না। তাই কোন কোন কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সেগুলো জেনে রাখা ভাল।
ডিহাইড্রেশন
শরীরে কম জল গেলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হয়ে যায়। মানে রক্তে শর্করা মাত্রা অনেক ঘন হয়ে যায়। তার ফলে বারবার বাথরুম যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ফলে ডিহাইড্রেশন আরও গুরুতর হয়ে যায়।
কৃত্তিম চিনি দেওয়া পানীয়
চিনি ছাড়া চা মুখে রোচে না বাঙালির। তাই অনেকেই চিনির বদলে কৃত্তিম ভাবে মিষ্টি যোগ করার জন্য বিকল্প ব্যবহার করেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে এগুলো শরীরে গেলেও রক্তে শর্করা মাত্রা খানিক হেরফের হয়। দোকানে গিয়ে ‘সুগার ফ্রি’ লেখা পানীয় ভুলেও খাবেন না। বা প্যাকেটের ফলের রসও কেনা একদম বন্ধ করে দিন।
কিছু ওষুধেরর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ডায়াবিটিসের ওষুধের পাশাপাশি আপনি যদি আরও কিছু ওষুধ খান, তাহলেও রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যেমন স্টেরয়েড বা অবসাদের ওষুধ বা গর্ভনিরোধক ওষুধ এবং আরও কিছু মানসিক সমস্যার ওষুধ। হঠাৎ রক্তে শর্করা মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে দেখতে হবে আপনি অন্য কোনও ওষুধ খাচ্ছেন কি না।
ভোরবেলা ঘুম ভাঙার পর
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হয়তো শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু ঘুম থেকে উঠেই দেখলেন অনেক বেড়ে গিয়েছে। ভয় পাবেন না। আমাদের শরীর রাত ২টো থেকে সকাল ৮টার মধ্যে কর্টিসল হরমোন তৈরি করে শরীকে বাকি দিনের জন্য প্রস্তুত করে। এই হরমোনের কারণে সাময়িক ভাবে আপনার শরীরে ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ না-ও করতে পারে।
মেয়েদের ঋতুচক্র
ঋতুস্রাব হওয়ার এক সপ্তাহ আগে কিছু মেয়েদের শরীরের ইনসুলিন তুলনামূলক ভাবে কম কাজ করতে পারে। তবে কতটা প্রভাব পড়বে, তা প্রত্যেক মেয়ের ক্ষেত্রে আলাদা।
ঘুম কম
টাইপ টু ডায়াবিটিসের রোগীদের দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুম হলে, রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হতে পারে। ঘুম কম হলে মানসিক চাপও বাড়ে। ফলে শর্করা মাত্রা বেড়ে যায়।
আবহাওয়ায় বদল
আমেরিকার সিডিসি’র মতে, হঠাৎ করে তাপমাত্রা অনেকটা বদলে গেলে, শরীরে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। ফলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার জন্যে রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
বেশি পরিমাণে কফি
সাধারণত ৪০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যাফিন খেলে শরীরে কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু ডায়াবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে ওইটুকু ক্যাফিনেও রক্তে শর্করা মাত্রা এদিক-ওদিক হয়ে যেতে পারে। তবে কিছু টাইপ টু ডায়াবিটিস রোগীদের শরীরে ক্যাফিন কোনও প্রভাবই ফেলে না। কিন্তু অন্যদের এক কাপ কফি খেলেও গোলমাল হয়ে যায়।