দৌড়লে মন ভাল হয়? ছবি: সংগৃহীত।
শরীরচর্চার একটি আদি এবং অকৃত্রিম মাধ্যম হল দৌড়। শুধুমাত্র দৌড়বাজ হলেই যে নিয়মিত দৌড়তে হবে, এমনটা কিন্তু নয়। জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে ভাল না লাগলে অনেকেই সকালে বাড়ির চারপাশে এক বার দৌড়ে আসেন। দৌড়লে একেবারে গোটা শরীরের ব্যায়াম হয়। আলাদা করে পেট, কোমর কিংবা পায়ের জন্য ব্যায়াম করতে হয় না। আর সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দৌড়ের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও যোগ রয়েছে। নিয়মিত দৌড়লে নিয়ন্ত্রণে থাকে মানসিক অবসাদও। তথ্যটি ‘জার্নাল অফ অ্যাফেক্টিভ ডিজ়অর্ডার’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
মনের উপর চাপ বাড়তে থাকলে বা কেউ অবসাদে ভুগলে চিকিৎসকেরা সাধারণত অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতেই হয়। তবে সব ওষুধেরই তো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধরনের ওষুধ শরীরে অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ওষুধের বিকল্প হিসাবে দৌড়নোর অভ্যাস করা যেতেই পারে। কিন্তু এই বিষয়টি আদৌ কতটা কার্যকর, তা যাচাই করতে একটি সমীক্ষার আয়োজন করে ইউরোপীয়ান কলেজ অফ নিউরোসাইকোফার্মাকোলজি।
মানসিক অবসাদে ভুগছেন এমন ১৪০ জনকে নিয়ে করা হয় সমীক্ষা। তাঁদের দু’টি দলে ভাগ করে নিয়েছিলেন গবেষকেরা। চিকিৎসার মাধ্যম হিসাবে একটি দল শুধুমাত্র দৌড়কেই বেছে নিয়েছিল। আর অন্য দলটি বেছে নিয়েছিল ওষুধ। ১৬ সপ্তাহ ধরে চলা এই গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা দেখেন, চিকিৎসার মাধ্যম হিসাবে যে দলটি শুধুমাত্র দৌড়কেই বেছে নিয়েছিল, তার সদস্যদের মধ্যে মানসিক অবসাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অন্য দলটির তুলনায় অনেক বেশি। আমস্টারডামের ভ্রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্রেন্ডা পেনিক্স জানিয়েছেন, চিকিৎসার মাধ্যম হিসাবে মানসিক অবসাদে আক্রান্ত রোগীরা কোনটিকে বেছে নিতে পারেন, সে বিষয়ে আলোকপাত করাই এই গবেষণার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল। তবে শুধু গবেষক কিংবা চিকিৎসকেরাই নন, মানসিক অবসাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত দৌড়নোর পক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও।