মার্ক হার্ডের প্রাক্তন স্ত্রী বছর ষাটের পলা হার্ডের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বিল গেটস। ছবি: সংগৃহীত।
বয়স সংখ্যামাত্র। প্রেমের সঙ্গে এর কোনও লেনদেন নেই।
বয়স বেড়ে গেলেই বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ আসতে শুরু করে। ‘এ বার তো বিয়েটা কর! আর কত দিন এ ভাবে চলবে!’ এমন অনেক কথা ভেসে আসে। বাড়ির চাপে অনেকে বিয়ে করেও ফেলেন। তবে পছন্দের সঙ্গী পান কি? সেই সম্পর্ক কত দিন টিকবে, তা নিয়েও থেকে যায় প্রশ্ন! অনেকে আবার বিবাহবিচ্ছেদের পরে ফের প্রেমে পড়েন। হোক না তখন বয়স ষাটের কোঠায়। তাতে ক্ষতি কী?
৬৭-র বিল গেটসের প্রেমকাহিনি খানিকটা তেমনই। ভালবাসার মাসেই প্রকাশ্যে এল তাঁর প্রেমিকার কথা। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘অরাকল’-এর সিইও মার্ক হার্ডের প্রাক্তন স্ত্রী বছর ষাটের পলা হার্ডের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। কখনও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে, কখনও আবার মেলবর্নের রাস্তায় একান্তে সময় কাটাতে দেখা দিয়েছে দু’জনকে। পলা বয়সে বিলের থেকে সাত বছরের ছোট। এককালে নামী সংস্থার প্রযুক্তি অধিকর্তা পলা এখন ইভেন্ট প্ল্যানার। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অবসরে সমাজকল্যাণের কাজও করেন। অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন বহু সংস্থাকে। ২০২১ সালে প্রাক্তন স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছেন বিল। একই সালে স্বামীকে হারান পলাও। একে অপরকে পেয়ে বেশ সুখেই আছেন তাঁরা। বাড়তি বয়সেও একাকিত্ব ঘোচাতে একে অপরের প্রেমে মজেছেন।
এমন ঘটনা আরও আছে। বয়স ষাটের দিকে এগোচ্ছে। তবু তিনি আজও বহু অষ্টাদশীর স্বপ্নের পুরুষ। কারণ, তিনি জর্জ ক্লুনি। ১৯৯৩ সালে প্রথম স্ত্রী তালিয়া বালসামের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর অনেকের সঙ্গেই তাঁর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। ২০১৩ সালে জর্জের জীবনে আসেন আমাল আলামুদ্দিন। ৫৪ বছরের জর্জ ক্লুনি বিয়ে করেন ৩৬ বছরের আইনজীবী আমাল আলামুদ্দিনকে। সেই রয়্যাল ওয়েডিং ঘিরে সে সময় যথেষ্ট শোরগোল হয়েছিল বিনোদন দুনিয়ায়।
প্রেমের যে কোনও বয়স হয় না, বার বার তা প্রমাণ করেছেন প্রভাবীরা। এমন অনেক তারকাই আছেন, যাঁরা প্রেম খুঁজে পেয়েছেন একটু দেরিতে। বিয়ের পিঁড়িতেও বসেছেন একটু দেরি করেই। অথচ দিব্যি চলছে তাঁদের সাংসারিক জীবন। বলি-টলি পাড়ায় এমন সম্পর্কের উদাহরণ অজস্র।
নীনা গুপ্তের কথাই ধরা যাক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। বিবাহিত এক পুরুষের সন্তানের জন্ম দিয়ে হাজার বিতর্কের মুখে পড়তে হয় অভিনেত্রীকে। অথচ সেই সম্পর্ক টেকেনি। এর পর নানা পুরুষের কাছ থেকে আসে নানা রকম কুপ্রস্তাব। নীনার প্রথম স্বামীর নাম অম্লানকুসুম ঘোষ। সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। ৫৪ বছর বয়সে ফের নতুন জীবন শুরু করেন অভিনেত্রী। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিবেক মেহরাকে বিয়ে করেন নীনা। এখন তাঁদের সুখী দাম্পত্যের চর্চা সর্বত্রই। পর্দায় একের পর এক সাহসী চরিত্রে অভিনয় করছেন নীনা। খোলামেলা পোশাকেও এখনও নজর কাড়ছেন ভক্তদের। বেশ কিছু সাক্ষাৎকারে শোনা যায় তাঁর সুখী দাম্পত্যের কাহিনি। দাম্পত্য সুখ তাঁর হাবভাবে স্পষ্ট। সম্পর্কের বাঁধন মজবুত না হলে এই বয়সে এতটা সুখী হওয়া যায় না, এমনই বক্তব্য নীনার।
৬৬ বছর বয়সে জীবনের নতুন একটি ইনিংস শুরু করেন প্রাক্তন ক্রিকেটার অরুণ লাল। ২০২২ সালে বুলবুল সাহার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে বাঁধা পড়েন তিনি। দীর্ঘ দিনের দাম্পত্য জীবন ছিল অরুণ এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী দেবযানীর। তবে দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে ইতি টেনে অরুণ বিয়ে করেন বুলবুলকে।
টলিপাড়াতেও এ রকম প্রেমের উদাহরণ মিলবে। পাত্রের বয়স ৭৫ শুনে অনেকই অবাক হয়েছিলেন। পাত্রী তখন অবশ্য ৪৯। ভালবাসার কাছে বয়স যে তুচ্ছ — তা আরও এক বার প্রমাণ করেছে অভিনেতা দীপঙ্কর দে ও দোলন রায়ের জুটি। ২০২০ সালে বিয়ে করেন দু’জন। তবে দীপঙ্কর যখন দোলনের প্রেমে পড়েন, তখনও মোটেই তরুণ ছিলেন না তিনি। তাতে প্রেম গাঢ় হতে অসুবিধা হয়নি।