Parenting Tips

খেলতে খেলতেই পরিবেশ সচেতন হয়ে উঠুক শিশু, প্রকৃতিকে ভালবাসার পাঠ কী ভাবে দেবেন বাবা-মায়েরা?

ছোট ছোট পদক্ষেপেই প্রকৃতি ও পরিবেশকে ভালবাসার পাঠ দেওয়া যায়। সে দায়িত্ব নিতে হবে অভিভাবকদেরই। শিশুর মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমানোর এটিও কিন্তু উপায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪০
Simple ways to teach children about Environment dgtl

মোবাইল নয়, গাছ ভালবাসবে শিশু। ছবি: ফ্রিপিক।

মোবাইল ছেড়ে পরিবেশকে ভালবাসতে শিখুক শিশু। প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হোক ছোট থেকেই। গল্প বলে, খেলার ছলে সন্তানকে পরিবেশ সচেতনতার পাঠ দিতে হবে বাবা-মাকেই। সন্তানের রোজের রুটিনের কিছুটা সময় রাখুন গাছের পরিচর্যা ও পশুপাখিদের জন্য। মোবাইল না দিয়ে ছোট টবে একটি বা দু’টি গাছ দিন যত্ন করার জন্য। দেখবেন আর বৈদ্যুতিন গ্যাজেট চেয়ে বায়না করছে না।

Advertisement

প্রতিদিন একটু একটু করে পরিবেশ নিয়ে ছোট ছোট গল্প বলতে হবে শিশুকে। শেখাতে হবে গাছপালা পরিবেশের জন্য কতটা জরুরি। শুরুটা করুন গাছ লাগানো দিয়ে। বাড়ির বারান্দা, ঘরের জানলা বা ছাদে, অথবা বাড়ির সামনে জায়গা থাকলে, শিশুকে গাছ লাগানো শেখান। একটি বা দু’টি গাছ নির্দিষ্ট করে দিন পরিচর্যার জন্য। জল দেওয়ার সময়, জলের পরিমাণ, সার দেওয়ার পদ্ধতি— নিজে হাতে ধরে শিখিয়ে দিন। কোন গাছ কতটা বাড়ল, ফুল ধরল কিনা দেখতে বলুন। শুধু আপনার সন্তান নয়, তার বন্ধুদেরও বলুন গাছের পরিচর্যা করতে। তার পর একটি খেলা শিখিয়ে দিন। কার গাছ কতটা বাড়ল, কার গাছে আগে ফুল এল সেই সংক্রান্ত। তার বদলে সেই শিশুটি পুরষ্কার পাবে। দেখবেন, মোবাইল, ট্যাব ছেড়ে গাছপালার যত্ন নিয়েই থাকবে।

বারান্দায় একটি ঝোলানো গামলায় রোজ জল রাখতে বলুন পাখিদের জন্য। যদি সম্ভব হয়, শিখিয়ে দিন কী ভাবে পাখির ঘর বানাতে হবে। সেখানে জল ও খাবার রাখতে বলুন। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার যত্নের দায়িত্ব দিন খুদেকে। সময় মতো খাবারের থালাটা দেওয়া, বাটিতে জল ভরে দেওয়া, পোষ্যের সঙ্গে খেলা বা কথা বলা শেখাতে পারলে ছোট থেকেই পশুপাখিদের প্রতি ভালবাসা জন্মাবে শিশুর মনে। পরিবেশ ও পশুপাখির প্রতি ভালবাসা জন্মালে শিশুর জেদি, একগুঁয়ে বা স্বার্থপর মনোভাব কখনওই আসবে না।

জলের অপচয় বন্ধ করা শেখান। কল অযথা খুলে রাখা যে ঠিক নয়, তা বোঝান। ছোট থেকে অভ্যাস করালে দেখবেন শিশু বাইরে গিয়ে বা স্কুলে গিয়েও তা মেনে চলছে। প্লাস্টিকের ব্যাগ বা খাবারের প্যাকেট যত্রতত্র না ফেলে ডাস্টবিনে গিয়ে ফেলা শেখাতে হবে। সে বাড়িতে হোক বা বাইরে। শিশুকে সবসময়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ বা প্যাকেট দেবেন না। স্কুলের টিফিন কাগড়ের ব্যাগে দিন অথবা কাপড়ের আলাদা ব্যাগ রাখুন। তা হলেই প্লাস্টিক ব্যবহারের অভ্যাস ছোট থেকেই কমে যাবে শিশুর।

জন্মদিনে একগাদা খেলনা না দিয়ে টবে বাহারি গাছ দিন। বন্ধুদের ডেকে ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করুন। সেখানে পরিবেশ নিয়ে আঁকতে উৎসাহ দিন। পুনর্ব্যবহারের গুরুত্ব বোঝান শিশুকে। বইখাতা ছিঁড়ে গেলে বা মলাট পুরনো হয়ে গেলে, না ফেলে দিয়ে বরং অন্য কাজে লাগানো শেখান। অনেক সময়ে দেখবেন খাতা বা ডায়রির বেশ কয়েকটি পাতা বেঁচে যায়। সেগুলি সংগ্রহ করে জুড়ে রাফ খাতা বানিয়ে দিন। রঙিন কাগজের মোড়ক খোলার পরে তা ফেলে না দিয়ে বরং বিভিন্ন রকম ক্রাফ্ট বানানো শেখান। প্লাস্টিকের বোতল এ দিক, ও দিক না ফেলে তা জমিয়ে রেখে পরে কোনও সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া যায়। এখন অনেক সংস্থাই আছে যারা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তা পুনর্ব্যবহারের জন্য কাজে লাগায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement