Parenting Tips

টিফিন নিয়ে রোজ বায়না করে সন্তান? পিৎজ়া-বার্গার ছাড়া খেতেই চায় না? কী ভাবে সামলাবেন?

মুখরোচক না হলে খাবার খেতেই চায় না সন্তান। এমন অভিযোগ বেশির ভাগ বাবা-মায়েরই। রোজের বায়না সামলাতে তাঁরা অস্থির। জেনে নিন, কী করলে সন্তানের পুষ্টিকর খাবারের প্রতি রুচি তৈরি হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১০:০৪
How to get your child to finish their tiffin, here are the easy tips

টিফিন নিয়ে আর বায়না করবে না, জানুন টিপ্‌স। ছবি: সংগৃহীত।

স্কুলের টিফিন নিয়ে কমবেশি সব বাবা-মাকেই ঝক্কি পোহাতে হয়। বাচ্চা আজ এটা খাবে না, তো কাল সেটা। বায়না লেগেই আছে। হাতে গড়া রুটি-তরকারি দিলে মুখে রোচে না। পিৎজ়া-বার্গারের দিকেই ঝোঁক বেশি। মনোমতো খাবার না দিলেই কান্নাকাটি, চেঁচামেচি। টিফিন বাক্স যেমন দিচ্ছেন, তেমনই ফেরত আসছে। এ দিকে রাস্তা থেকে খাবার কিনে খাওয়ার জন্য বায়না করছে সন্তান। এমন পরিস্থিতিতে অনেক বাবা-মা মেজাজ হারিয়ে বকাবকি করে ফেলেন। এখনকার ব্যস্ত সময়ে যেখানে মা-বাবা দু’জনেই কর্মরত, সেখানে রোজ সকালে সন্তানের পছন্দের নিত্যনতুন খাবার তৈরি করাও সমস্যার। তা হলে জেনে নিন, কী করলে সন্তানের পুষ্টিকর খাবারের প্রতি রুচি তৈরি হবে। আপনার সমস্যাও মিটবে।

Advertisement

১) আমরা সবাই জানি, প্রাতরাশ করা খুব জরুরি। সন্তানের সকালের খাবার যেন পুষ্টিকর হয়, সেটা খেয়াল রাখুন। সকালবেলা স্কুলে যাওয়ার আগে পেট ভরে খাইয়ে দিতে হবে। ভাত বা রুটি যদি খায়, তা হলে তো খুবই ভাল। না হলে দুধ-কর্নফ্লেক্স, উপমা, সব্জি দেওয়া ওট্‌স বা ডালিয়ার খিচুড়ি খাইয়ে দিন। চেষ্টা করতে হবে প্রাতরাশে যেন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট তিনটেই থাকে। এর পর যদি টিফিন একটু ফেলে-ছড়িয়েও খায়, অতটা চিন্তা থাকবে না।

২) ছোট থেকে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি রুচি তৈরি করতে হবে। এ বিষয়ে মনোবিদেদের মত, সন্তানের মন বুঝতে হবে। হয়তো সে টিফিনে বন্ধুদের এমন কিছু খেতে দেখছে, তার পর আর নিজের টিফিন খেতে ইচ্ছে করছে না তার। তাই এক রকম খাবার না দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে টিফিন দেওয়ার চেষ্টা করুন। রোজের রুটি-তরকারিই একটু অন্য ভাবে বানিয়ে দিন। যেমন, রুটির মধ্যে সব্জি ভরে রোল করে দিন। বলুন যে, ভেজিটেবল রোল বানিয়ে দিয়েছেন আজ। দেখবেন, চেটেপুটে খাবে।

৩) খাবার কী ভাবে দিচ্ছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। অগোছালো ভাবে টিফিন বাক্সে খাবার ভরে দিলে কোনও বাচ্চাই খেতে চাইবে না। তাই সুন্দর করে টিফিন বাক্স সাজান। তাতে সাধারণ খাবারও দেখতে অসাধারণ লাগবে। যেমন, স্যান্ডউইচ দিলে তার উপরে নকশা করে চিজ় ছড়িয়ে দিন অথবা সস দিয়ে চোখ-মুখের মতো এঁকে দিন। সঙ্গে দিন বিভিন্ন রকম ফলের স্যালাড। ফলের টুকরোগুলিকেও ভাল ভাবে সাজিয়ে দিন। সেই খাবারই সোনামুখ করে খেয়ে নিচ্ছে।

৪) মাঝেমধ্যে শিশুর মন রাখতে টিফিনের সঙ্গে একটু চিপ্‌স কিংবা চকোলেট দিয়ে দিন। তবে বেশি নয়। ভাল কোনও খাবার দিলে একটু বেশি করে দিয়ে দিন। বলুন, এটা ওর বন্ধুদের জন্য। এতে খাওয়ার উৎসাহ বাড়বে। টিফিন ভাগ করেও খেতে শিখবে।

৫) টিফিন বাক্সে সব সময়ে চামচ এবং কাঁটা দিয়ে দেবেন। ভাজা জাতীয় খাবার দিলে টিস্যু পেপার দিন। দেখবেন, গোছানো টিফিন বাক্স দেখলে খাবারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে শিশুর।

৬) টিফিনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ফলের রস বানিয়ে দিন। বিভিন্ন রকম মরসুমি ফলের রস ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেবেন। স্মুদি তৈরির অনেক রেসিপিও পাওয়া যায় আজকাল। সম্ভব হলে বানিয়ে দিন। সঙ্গে দিয়ে দিন স্ট্র। এতে প্যাকেটবন্দি ফলের রস বা নরম পানীয়ের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে।

৭) স্কুল থেকে ফেরার পথে রোজ চিপ্‌স বা ওই জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি কিনে দেবেন না। বরং বাড়ি ফেরার পরে বাড়িতেই বানিয়ে দিন মুচমুচে পকোড়া। এখন বাচ্চাদের জন্যও অনেক রকম স্ন্যাকসের রেসিপি পাওয়া যায় অনলাইনেই। কম তেলে তেমনই কিছু বানিয়ে দিন। রাস্তার রোল খেতে চাইলে বলুন বাড়িতেই আপনি বানিয়ে দেবেন আরও সুস্বাদু রোল। সব্জি, চিকেন কম তেলে নেড়ে পরোটায় ভরে সস না দিয়ে ভিতরে বেশি করে স্যালাড দিয়ে দিন। এতে খাবার মুখরোচকও হবে, সন্তানের স্বাদবদলও হবে। দেখবেন, আর বাইরের খাবারের জন্য বায়না করবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement