Child Math Phobia

অঙ্কে ভীষণ ভয়! পরীক্ষায় শূন্য পাচ্ছে খুদে? ওর ভীতি কাটাবেন কী ভাবে

অঙ্ক কষতে ভয়, পরীক্ষা দেওয়ার আগে আতঙ্কে শরীর খারাপ, বমি করা ইত্যাদি বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে শিশুর। এই ভয় কাটানোর দায়িত্ব অভিভাবকদেরই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১০:০২
How to deal with your Kid’s Math phobia, here are the tips

শিশুর অঙ্কভীতি দূর করবেন কী ভাবে? প্রতীকী ছবি।

অঙ্ক 'ভয়াঙ্ক' হয়ে যাচ্ছে না তো? অঙ্ক কষতে বসলেই ভীষণ উদ্বেগে ভোগে সন্তান? তা হলে বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে, স্কুলে যা শেখানো হচ্ছে, তা খুদে সঠিক ভাবে শিখে উঠতে পারছে কি না! এখন ছোট থেকেই গৃহশিক্ষক রাখেন অনেক বাবা-মা। সে ক্ষেত্রে শিক্ষক যা শেখাচ্ছেন, তা খুদে আত্মস্থ করতে পারছে কি না, সেটাও দেখা দরকার। অনেক বাচ্চা প্রশ্ন করে না। বুঝতে না পারলেও ভয়ের কারণে বলতে চায় না। গোড়া থেকেই যদি শেখা ও জানায় গলদ থেকে যায়, তা হলে পরে গিয়ে সেই বিষয়ে ভীতি তৈরি হয়। শিশুর অঙ্কে ভয় দূর করার দায়িত্ব অভিভাবকদেরই। কী ভাবে তা সম্ভব হবে, জেনে নিন।

Advertisement

১) শিশুদের অঙ্কে ভয় পাওয়ার প্রবণতাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘অ্যারিথমোফোবিয়া’। অঙ্কের বই দেখলে ভয়, অঙ্কের পরীক্ষা দেওয়ার সময় উদ্বেগ, আতঙ্কে বমি করা, শরীর খারাপ হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয় এ থেকে। এই সমস্যা কাটাতে প্রথমত সময় দিতে হবে শিশুকে। স্কুলে যতই ভাল শেখানো হোক না কেন বা গৃহশিক্ষক ঘড়ি ধরে পড়িয়ে যান না কেন, সব শেষে আপনাকেই দেখতে হবে, শিশু কতটা শিখল। অঙ্কের ফর্মুলা মনে রাখতে সমস্যা হচ্ছে, না কি কষতে গিয়ে ভুলভ্রান্তির কারণে উত্তর মিলছে না, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবটাই দেখতে হবে। সন্তানকে বোঝাতে হবে, দশম শ্রেণি পর্যন্ত অঙ্ক বাধ্যতামূলক। আর পাঁচটা বিষয়ের মতোই সে যেন তা যত্ন নিয়ে শেখে। ভয়ের কোনও কারণ নেই।

২) স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের কাছ থেকে শিশু এমন কিছু শুনছে না তো, যা থেকে অঙ্কভীতি তৈরি হচ্ছে, সেটাও খেয়াল রাখুন। অনেকেই বলে থাকেন, উঁচু ক্লাসে উঠলে অঙ্ক আরও কঠিন। সেটা শুনেও শিশু উদ্বেগে ভুগছে কি না, তা দেখতে হবে। তাই সব সময়ে ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক কথা বলুন।

৩) ছোট বাচ্চা হলে অঙ্কের যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ মজার খেলার মাধ্যমে শেখান। চারপাশে শিশু যা দেখছে, তার থেকেই উদাহরণ তুলে ধরে বোঝান। এতে রোজের জীবনের সঙ্গে অঙ্ক কতটা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, তা বুঝতে পারবে খুদে। দোকান-বাজারে নিয়ে যান, ছোটখাটো হিসেব কষতে দিন, ঘড়িতে সময় দেখতে শেখান, তা হলেই ছোট থেকে অঙ্কের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে।

৪) সন্তান নিয়মিত অঙ্ক অভ্যাস করছে কি না, সেটা দেখুন। অনেক সময়ে স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের থেকে ভাল ভাবে শিখলেও অভ্যাস না করার কারণে পরে গিয়ে সিলেবাসের অনেকটাই জমে যায়। তখন আতঙ্ক তৈরি হয়। শিশু যেন নোটবই খুলে না বসে, সেটাও দেখতে হবে। তা হলে চেষ্টা করার অভ্যাসই তৈরি হবে না।

অঙ্ক যে ভয়ের নয়, বোঝাতে হবে বাবা-মাকেই।

অঙ্ক যে ভয়ের নয়, বোঝাতে হবে বাবা-মাকেই। ছবি: ফ্রিপিক।

৫) এখন বিভিন্ন রকম ব্রেন গেম পাওয়া যায়। তাতেও অঙ্কের ধাঁধা থাকে। সেগুলি শেখানোর চেষ্টা করুন। যারা অঙ্ক ভাল করে অভ্যাস করে, তাদের চিন্তাভাবনা আরও উন্নত হয়। যে কোনও জটিল সমস্যা সমাধানের অভ্যাসও রপ্ত হয়। বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তিও প্রখর হয়।

৬) পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও নজর দিতে হবে। একটানা বই নিয়ে বসিয়ে রাখলে শিশুর পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে না। নাচ-গান, আঁকা, আবৃত্তি ইত্যাদি শেখাতে হবে শিশুকে। তা হলে বিভিন্ন বিষয়ে জানা ও শেখার আগ্রহ তৈরি হবে। একাগ্রতাও বাড়বে।

৭) কখনও তুলনা করবেন না। অনেক শিশুই অঙ্কে কাঁচা হয়। কিন্তু, অন্যের সঙ্গে তুলনা টানতে শুরু করলে আত্মবিশ্বাস হারাবে সে। রাগারাগি, মারামারি, বকাবকি করলে তা শিশুর স্মৃতিতে চেপে বসবে। তখন ভয়ের কারণে আর অঙ্ক কষতেই চাইবে না।

৮) অঙ্কের কোনও একটি বিষয়ে ভয় বা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেক সময়েই তৈরি হয়। এর কারণ দু’টি। এক, শিক্ষক যা শেখাচ্ছেন, তা রপ্ত করতে পারছে না খুদে। দুই, অভ্যাসের অভাবে শেখানো জিনিসও ভুলে যাচ্ছে। তাই বাবা-মাকে ধৈর্য ধরে দেখতে হবে গলদটা ঠিক কোথায়। মেজাজ হারালে চলবে না। অভিভাবকেরা যদি নিজেদের ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় দিয়ে সঠিক ভাবে হাল ধরতে পারেন, তা হলেই অসাধ্যসাধন করতে পারবে সন্তানও।

আরও পড়ুন
Advertisement