Dissociative Disorder

সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছেন? ব্যস্ততার মধ্যেও মন জুড়ে বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠবেন কী ভাবে?

হতাশা আর বিষণ্ণতা সহজে যেতে চায় না। কিন্তু সব কিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলে সমস্যা আরও বাড়বে। যদি নিজেকে আগের মতো চনমনে দেখতে চান, তা হলে কী কী করতে হবে জেনে নিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ ১১:৩৫
What are the Symptoms of Dissociation, how to overcome it

হতাশা, বিষণ্ণতা মনকে শেষ করে দেয়। কাটিয়ে উঠবেন কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।

রোজের চরম ব্যস্ততা, তার মধ্যেও হয়তো কিছুই ভাল লাগছে না আপনার। মনের এমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে আমরা প্রায়ই যাই। তখন সব কিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। বহু জনের মধ্যে থেকেও মনে হয় পাশে কেউ নেই। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে না। আত্মীয়-পরিজনকে এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল হয়। চেনা-পরিচিত কারও মুখোমুখি পড়ে গেলেও, কথা বলার ইচ্ছা থাকে না। মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, ক্লান্তি, অবসাদ আর হতাশা যখন মন জুড়ে থাকে, তখন তার থেকেই বিচ্ছিন্নতাবোধ জন্মায়। মন বিষণ্ণ হয়ে থাকে। কোনও কিছুতেই উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে না। একে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘ডিসোসিয়েটিভ ডিসঅর্ডার’ বলা হয়।

Advertisement

মনের বিষণ্ণতা কাটিয়ে ওঠার কিছু উপায় আছে। জেনে নিন সেগুলি কী-কী।

১) হঠাৎ করে পাওয়া কোনও মানসিক আঘাত, দুর্ঘটনা, কাছের মানুষজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, পরিবারের লোকজনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে এমন বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে। মনোবিদদের পরামর্শ, যখনই মন বিষণ্ণ হয়ে উঠবে, তখন সব কাজ ছেড়ে কিছু ক্ষণের জন্য ধ্যান, মানে মেডিটেশনে বসুন। মিনিট পনেরোও যদি মন শান্ত রেখে, চুপ করে ধ্যান করা যায়, তা হলে অনেকটা মানসিক আরাম পাওয়া সম্ভব। চিন্তার জটও ছাড়াতে পারবেন এই ভাবেই।

২) সকাল সকাল যোগাসন, প্রাণায়াম করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। নিয়ম করে যোগাসন করলে মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলি সক্রিয় থাকে। ফলে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মনে আসে না। ‘হ্যাপি হরমোন’-এর ক্ষরণ হয়। ফলে মন ভাল থাকে। তবে যোগাসন শরীরের অবস্থা, রোগব্যাধি বুঝেই করতে হয়। তাই কী ধরনের যোগাসন আপনার জন্য সঠিক, সেটা যোগাসন প্রশিক্ষক বা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।

৩) দিনে কিছুটা সময় বার করেও বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়দের সঙ্গে গল্প করতে হবে। পুরনো বন্ধুদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করুন। পুরনো দিনের সুখের স্মৃতিগুলো মনে করুন। ছবির অ্যালবাম থাকলে তার পাতা উল্টে দেখুন। তা হলেও মন ভাল হয়ে যাবে। নিজেকে গুটিয়ে ফেললে হতাশা আরও বেশি গ্রাস করে। পারস্পরিক কথোপকথন ও মেলামেশা মনের অনেক জটিল সমস্যারও সমাধান করতে পারে।

৪) আপনার কি ঘুম কম হয়? তা হলেও কিন্তু মুশকিল। সাধারণত দেখা যায়, যাঁরা বেশি দুশ্চিন্তা, উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের ঘুম কম হয়। বারে বারে জেগে ওঠেন। ঘুমোতে গেলে শরীরে অস্বস্তি বোধ হয়। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করতে হবে। সম্ভব হলে রোজ একই সময়ে ঘুমোতে যান। শোয়ার ঘর পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘুমোবার সময়ে মোবাইল, ল্যাপটপ ইত্যাদি যাবতীয় বৈদ্যুতিন যন্ত্র দূরে রাখুন। খুব বেশি আওয়াজ, কোলাহল যেন চারপাশে না হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

৫) মন ভাল করার অন্যতম ভাল উপায় হচ্ছে বই। যদি দেখেন কোনও কাজে উৎসাহ আসছে না বা কোনও বিষয় নিয়ে আপনি খুব চিন্তিত, তা হলে কিছু ক্ষণের জন্য সেই কাজ বন্ধ করুন। সেই সময়টায় পছন্দের বই পড়ুন। এতে ধৈর্য বাড়বে, দুশ্চিন্তাও দূর হবে।

৬) কিছু দিনের ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসুন। যদি সঙ্গে কেউ না থাকে, একাই যান। সবসময়েই খুব দূরে যেতে হবে, এমনটা নয়। কাছেপিঠেও ঘুরে আসা যায়। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার ভাল ভাল ছবি তুলুন। স্থানীয় কোনও খাবার খান। নতুন পদ চেখে দেখুন। অনেক সময়ে ভাল খাবারও মন ভাল করে দিতে পারে। মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, কিছু দিনের জন্য সব কাজ থেকে বিরতি নিলে মন ও মস্তিষ্কও বিশ্রাম পায়। তাতে মনের বিষণ্ণতা অনেক কেটে যায়।

আরও পড়ুন
Advertisement