স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যেস হওয়া দরকার ছোট থেকেই। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ির খুদে সদস্যকে খাওয়াতে গিয়ে হয়রানির শেষ নেই। কখনও সে খাবার মুখে নিয়ে বসে থাকে, কখনও থু-থু করে ফেলে দেয়।তবে চকোলেট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হোক বা চিপস্, তখন কিন্তু আর সাধ্য-সাধনার দরকার হয় না।
ছোট থেকে সন্তানের মধ্যে পুষ্টিকর খাওয়া, সঠিক সময়ে ঘুম, পর্যাপ্ত জল খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হওয়াটা খুব জরুরি।কী ভাবে সেটা করা যাবে, বুঝতে পারেন না অনেকে। তবে চাইলেই কিন্তু তা সম্ভব।
অভিভাবকের খাদ্যাভ্যাসে বদল
খুদে কিন্তু বড়দের দেখেই শেখে। কথায় কথায়, বাবা-মাকে বাইরের খাবার খেতে দেখলে শিশুও সেটাই শিখবে।বাড়িতে যদি ফল, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চল থাকে খুদে সদস্যটিও সেগুলো খেতে শিখবে।
বাড়িতেই লোভনীয় খাবার
চিপস্ থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিৎজা, বার্গারে বাচ্চাদের মন পড়ে থাকে। কারণ এগুলো খেতে বেশি ভাল আর লোভনীয়। এই ধরনের খাবার বাড়িতে আনা বন্ধ করে তার বদলে ঘরেই কিছু অন্য রকম খাবার তৈরি করা যেতে পারে। যেমন বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের আকার ও রঙে আকৃষ্ট হয়। বিটের রস, পালংয়ের রস মিশিয়ে ফুল বা হৃদয়ের আকারের পরোটা তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। এতে পুষ্টিও থাকল আবার শিশুরা মজা করে নতুন ধরনের খাবার ভেবে খেয়ে নেবে।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স
কিছু স্ন্যাক্স যা স্বাস্থ্যকরও, বাচ্চাদের হাতের কাছে কৌটোয় রাখা যেতে পারে। খেতে ইচ্ছে হলে হাতের কাছে এই ধরনের খাবার পেলে, সেটাই খাবে সে। পপকর্ন, রোস্ট করা মাখানা, স্যাঁকা পাঁপড়, বাদাম, কিশমিশ, এই ধরনের জিনিস খুদের নাগালের মধ্যে রাখতে পারেন।
খাবারের গুণ বোঝাতে হবে
যে কোনও ফল, ডাল দেখিয়ে বোঝাতে হবে এতে কী গুণ আছে। এই ফল খেলে কী উপকার হয়। গাজর খাওয়া কেন ভাল। ডিম খেলে কী হবে। খাবারের ভাল দিক বুঝতে পারলে খুদে সদস্য খেতে উৎসাহ পাবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উৎসাহ
ফল কেটে দিলে খুদে না খেয়েই চলে যায়। তাকে ফল খাওয়াতে নতুন পন্থা নেওয়া যেতে পারে। টাটকা ফল কেটে নুন ও চিনি মিশিয়ে আইসক্রিমের মতো ঠান্ডা করে তাকে দেওয়া যেতে পারে। বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে কাস্টার্ড। বিভিন্ন ধরনের নতুন ফল চিনিয়ে বলা যেতে পারে খেয়ে দেখতে।
অস্বাস্থ্যকর খাবার কমাতে হবে
চিপস, আইসক্রিম, চকোলেট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই একেবারে বাদ দেওয়া যাবে এমনটা নয়, তবে তার পরিমাণ কমাতে হবে। বায়না করলেও তাকে ভুলিয়ে দিতে হবে। বলতে হবে সপ্তাহে একদিন এগুলো খাওয়া যাবে। রোজ খেলে কী ক্ষতি হতে পারে তার মতো করে বোঝাতে হবে।
পরিবেশ
খাওয়ার সময় যদি বাবা-মা ও বাড়ির অন্যদের নিয়ে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা যায়, তা হলে শিশুর মনে তা প্রভাব ফেলবে। সে যদি দেখে, বাড়ির সকলে একসঙ্গে খাচ্ছে, যা রান্না হয়েছে তা সকলকেই খেতে হবে, তা হলে সেও সমস্ত ধরনের খাবার খেতে শিখবে।
এর পাশাপাশি সুখী পরিবার, বাবা-মায়ের স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যেস, হাত ধুয়ে খাওয়া, সময়ে খাওয়া এই বিষয়গুলি ছোট থেকে দেখলে খুদে সদস্যের মধ্যে ভাল কিছু অভ্যেস তৈরি হবে। যা তাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।