রাম, সীতা, লক্ষ্মণকে বিনা পয়সায় খাবার খাওয়াবেন ওয়াবেজ়। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি খাবারের দোকানের ব্যানার ভীষণ ভাইরাল হয়েছে। ব্যানারে হিন্দি ভাষায় বড় বড় করে লেখা রাম, সীতা, লক্ষ্মণ ও হনুমান তাঁদের দোকানে এলে বিনামূল্যে খাবার পাবেন।
নয়ডার সেক্টর ১৬ মেট্রো স্টেশনের কাছে এই দোকানটির ব্যানার নজর কেড়েছে গ্রাহকদের। ব্যানারে রাম, সীতা, লক্ষ্মণ ও হনুমানের ছবি জ্বলজ্বল করছে। আর তার নীচে লেখা কারও নাম রাম, সীতা, লক্ষ্মণ আর হনুমান হলে তাঁরা সারা জীবন সেই দোকানে বিনামূল্যে খাবার পাবেন। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই এই পোস্টারটি লাগানো হয়েছে। পোস্টারটি ভাইরাল হওয়ার পর নেটাগরিকদের অনেকেই জানতে চেয়েছেন এই অভিনব প্রচার বুদ্ধিটি আসলে কোন রামভক্তের? সেক্টর ১৬ মেট্রো স্টেশনের থেকে বেরিয়েই চোখে পড়বে ছোট একটি ঠেলা। ঠেলার মালিকের নাম ওয়াবেজ় খান। এই ঠেলায় খাবার বিক্রি করেই সংসার চলে ওয়াবেজ়ের।
অনেকেই ওয়াবেজ়কে প্রশ্ন করেছেন, মুসলমান হয়েও কেন এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি? ওয়াবেজ়ের উত্তর, ‘‘রামমন্দিরের শুভ সূচনার পর অনেকেই আমায় খোঁচা দিয়ে বলছেন যে, আমরা হয়তো এই ঘটনার পর সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি। তবে ভারতে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে যে ঐক্য আছে, তা কখনওই ভাঙতে পারবে না এমন সব মন্তব্য। আমি আমার কাজের মধ্যে দিয়ে সকলকে একটাই বার্তা দিতে চাই যে হিন্দুরা যতটা খুশি হয়েছেন মন্দির উদ্বোধনের জন্য, আমরাও কিন্তু ততটাই খুশি।’’
ওয়াবেজ় মনে করেন এই ব্যানার লাগানোর পর তাঁর দোকানে ভালই ভিড় হচ্ছে। ওয়াবেজ় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত দিনে ৩ থেকে ৪ জন আসছেন যাঁদের নামে রাম, সীতা, লক্ষ্মণ বা হনুমান। তাই আপাতত আমরা কোনও রকম পরিচয়পত্র দেখতে চাইছি না। তবে ভবিষ্যতে যদি সংখ্যাটা বেড়ে যায়, তখন আমরা পরিচয়পত্র দেখে তার পরেই খাবার দেওয়ার কথা ভাবব।’’
ওয়াবেজ়ের এই কাজ তাঁর সম্প্রদায়ের লোকজন প্রথমে ভাল চোখে দেখেনি। ওয়াবেজ় বলেন, ‘‘সবাই আমায় বলেছিল আমি মনে মনে হিন্দু হয়ে যেতে চাইছি, তাই হয়তো এমন কাজ করছি। তবে পরে সমাজমাধ্যমে সকলে যখন আমার প্রশংসা শুরু করেন, তখন আমার সম্প্রদায়ের লোকেরাও আমার কাজটিকে মন থেকে মেনে নেয়। আমি যত দিন ব্যবসা করব, তত দিনই এই বিশেষ অফারটি পাবেন আমার গ্রাহকেরা।’’