কুকুরদের মধ্যে বাড়ছে পারভোভাইরাসের সংক্রমণ। ছবি: সংগৃহীত
মানুষের মধ্যে যখন করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভয়, ঠিক তখনই কুকুরদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে অন্য এক মহামারি। দক্ষিণ ভারতে কুকুরদের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে পারভোভাইরাসের সংক্রমণ। কী হয় এর ফলে? কুকুরদের এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাবেনই বা কী করে? জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
হালে চেন্নাইয়ের এক পশুহাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ২৫০-এর বেশি পারভোভাইরাস সংক্রমিত কুকুরদের নিয়ে আসা হচ্ছে সেখানে। কী হয় এর ফলে? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এর মূল উপসর্গগুলি হল:
• পেটের গণ্ডগোল
• বমি
• তীব্র ক্লান্তি
• জ্বর
এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কী ভাবে পোষ্য কুকুরদের বাঁচানো যায়? পশুচিকিৎসক দেবাশিস দত্ত জানাচ্ছেন, টিকাকারণ এবং নিয়মমাফিক বুস্টার টিকা দেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘‘পারভোভাইরাস সংক্রমণ নতুন কোনও অসুখ নয়। এটি আগেও ছিল। এর উন্নত মানের টিকাও আছে বাজারে। সেটি পারে কুকুরদের এই সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে,’’ বলেছেন তিনি। তাঁর পরামর্শ, এই সময়ে তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
• টিকাকরণ: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট বয়সে কুকুরকে প্রথম টিকাটি দিতে হবে। তার পরে প্রতি বছর বুস্টার টিকা দিয়ে যেতে হবে। তা হলে পারভোভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে। বা সংক্রমণ হলেও, তার ভয়াবহতার মাত্রা কম হবে।
• দূরত্ব বজায় রাখা: যদি জানা যায়, কোনও কুকুর পারভোভাইরাসে আক্রান্ত, তা হলে তার থেকে বাড়ির পোষ্য কুকুরকে দূরে রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত কুকুরটির মালিকের থেকেও সুস্থ কুকুরটিকে এবং তার মালিকদের দূরে থাকতে হবে। না হলে আক্রান্ত কুকুরের মালিকের জামাকাপড় থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
• পরিচ্ছন্নতা: কুকুরকে নিয়মিত স্নান করান। মুখ ধুয়ে দিন। ও যেখানে ঘুমায়, সেই বিছানা রোদে দিন বা পাল্টে দিন। খাবার আর জলের পাত্র প্রতি দিন দু-তিন বার করে সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
কুকুরকে তো না হয় নিরাপদে রাখা গেল। কিন্তু কুকুরের থেকে কি এই রোগ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে? বা মানুষও কি সংক্রমিত হতে পারে? তেমন কোনও প্রমাণ নেই। এমনই বলছেন চিকিৎসকেরা। মানুষ জীবাণুটির বাহক হতে পারে। কোনও বিশেষ ব্যক্তি এক কুকুর থেকে অন্য কুকুরের মধ্যে জীবাণুটি ছড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু তাঁর সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই। এমনটাই বলছে চিকিৎসাবিজ্ঞান।